Samakal:
2025-10-20@00:03:54 GMT

পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা

Published: 7th, July 2025 GMT

পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা

জীববৈচিত্র্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপদ পৃথিবীর জন্য পরিবেশ সুরক্ষা অপরিহার্য। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘রক্ষা করি পরিবেশ, গড়ি সুন্দর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে সুহৃদ সমাবেশ শুরু করেছে ‘পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা’ কার্যক্রম। কর্মসূচির আওতায় ৬ জুলাই বিকেলে নওগাঁয় সুহৃদরা আয়োজন করে মানববন্ধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম।


‘প্রকৃতির প্রতি যত্ন নাও, সে তোমাকে ভালোবাসবে। উপেক্ষা কর, সে রুষ্ট হবে।’ এই প্রবাদ এখন আর কাব্য নয়, হয়ে উঠেছে কঠিন বাস্তবতা। নওগাঁ শহরে নিরুপদ্রব দুপুরে হঠাৎ করেই যেন বদলে গেল বাতাসের সুর। শহরের সিও অফিস চকবাড়িয়া এলাকার প্রশিকা বিদ্যানিকেতন প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন সুহৃদরা। কারও হাতে ঝাঁটা, কারও ব্যানার, আবার কারও হাতে ঝুড়ি। চোখেমুখে প্রত্যয় প্রকৃতি সুরক্ষার আহ্বান নিয়ে নেমে এসেছেন তারা। নিঃশব্দে নিরুচ্চার তবে হৃদয় থেকে উৎসারিত এক প্রতীকী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রবল প্রচেষ্টা। পরিবেশ সুরক্ষায় নানা কর্মসূচি আজ তাদের প্রসঙ্গ। 
সচেতনতায় মানববন্ধন
ব্যস্ত শহরের কোলাহলের মাঝে এক মুহূর্তের জন্য থমকে যায় সময়। যেন শহরও কৃতজ্ঞতায় মাথা ঝুঁকিয়ে বলে তোমরা সত্যিই ভিন্ন কেউ। পরিবেশ সুরক্ষায় প্রাণবন্ত কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন সুহৃদ সমাবেশের নওগাঁর সভাপতি মৌদুদুর রহমান কল্লোল। আয়োজন সমন্বয় করেন সুহৃদ সমন্বয়ক কাজী কামাল হোসেন। পরিবেশের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন সহসভাপতি মুরাদ হাসান, সুবল চন্দ্র মণ্ডল, পুতুল রানী ব্যানার্জি এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী চন্দন কুমার দেব। চন্দন কুমার দেব বলেন, নদী শুকিয়ে যায়, গাছ হারিয়ে যায়, বাতাস বিষিয়ে ওঠে এই গল্প আমাদের নয়, আমরা লিখতে চাই ভিন্ন ইতিহাস।’
এই আয়োজনে আশার উৎস ছিলেন প্রশিকা বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা। শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার, মুনিরা আক্তার, রুমা পারভীন, খাইরুন নাহার খুশি, তনুকা আক্তার, ফারজানা আক্তার তাদের চোখে ছিল আগামীর স্বপ্ন। শিশুরাও এ কাজে সহযোগিতা করেছে প্রাণ খোলে। এ যেন এক জীবন্ত পাঠশালা, যেখানে শিক্ষার্থীরা পাঠ নিচ্ছে সচেতনতার, দায়িত্ববোধের এবং সহমর্মিতার।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান
মানববন্ধনের পর হঠাৎ করেই দেখা গেল দৃশ্যপটের পরিবর্তন। মানুষগুলো এবার তুলে নিল ঝাড়ু ও ঝুড়ি। কেউ রাস্তা ঝাড়ছেন, কেউ ডাস্টবিনে ফেলছেন ময়লা। পথচারীদের অনুরোধ করা হচ্ছে ‘আপনার একটুখানি সচেতনতা অনেক দূষণ বাঁচাতে পারে।’
সদস্যদের কেউ কেউ নিজের হাতেই আবর্জনা তুলে ফেলেন ডাস্টবিনে, যেন কথাকে কাজে রূপ দেওয়ার এক নিঃশব্দ ঘোষণা। শিশুরা দেখছে আর শিখছে। ‘আমরা নদীর ওপর শহর গড়েছি, বন উজাড় করে বাসাবাড়ি বানিয়েছি। অথচ ভুলে গেছি এই গাছ, এই পানি, এই মাটি ছাড়া আমরা কেউই টিকে থাকতে পারব না। এখনই যদি সচেতন না হই, হয়তো আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য একটি বিষাক্ত পৃথিবী রেখে যাব।’ তারা জানান, পরিবেশদূষণের সবচেয়ে বড় কারণ প্লাস্টিকের অব্যবস্থাপনা, সচেতনতার অভাব এবং নাগরিক দায়িত্বে গাফিলতি। আমাদের সচেতন হতে হবে। পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
কর্মসূচির অন্যতম পর্ব হচ্ছে বৃক্ষরোপণ। স্কুলভিত্তিক সচেতনতামূলক সেমিনার, শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান, গাছের চারা রোপণ এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার ও কাজে মানুষকে সচেতন করা। পরিবেশ রক্ষার অন্যতম নিয়ামক গাছ। তাই দেশজুড়ে সুহৃদদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নওগাঁর সুহৃদরাও বৃক্ষরোপণ শুরু করেছেন। এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন স্থানে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। 
আসুন, নিঃশব্দে নিজের কাছে নিজেকে প্রশ্ন করি– ‘আমি কী করছি পরিবেশ রক্ষার জন্য, আমরা কি চারপাশ পরিষ্কার রাখছি, বৃক্ষরোপণ করছি পর্যাপ্ত, প্লাস্টিক ব্যবহারে সংযমি হয়েছি? এমন প্রশ্নের উত্তর যদি হয় ‘না’ তবে আজ থেকেই শুরু করি।’ এমন আহ্বানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন। v
সমন্বয়ক, সুহৃদ সমাবেশ, নওগাঁ

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ পর ব শ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

পাঁচ দাবিতে জেলায় জেলায় জামায়াতের মানববন্ধন

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাভারে ছাত্রী ধর্ষণ: জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে এনসিপির মানববন্ধন
  • তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবিতে এনসিপির মানববন্ধন
  • শাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শিক্ষার্থীরা
  • নোবিপ্রবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন
  • চাঁদাবাজির অভিযোগ, আগামী মাস থেকে গাড়ি বিক্রি ও রাজস্ব বন্ধের হুঁশিয়ারি ব্যবসায়ীদের
  • জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি
  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
  • নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী কারাগারে