রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে: নাহিদ
Published: 7th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘‘শুধু শেখ হাসিনার পতন নয়, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, দলের পরিবর্তন নয়, দুর্নীতিবাজদের পরিবর্তন করতে হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা ব্যানার ছিঁড়ে, কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল, বাংলাদেশের মাটিতে আজকে তাদের ঠাঁই হয়নি। স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদের পতন দেখেও যাদের শিক্ষা হয়নি, তাদের পরিণতিও ফ্যাসিবাদের মতোই হবে।’’
সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার সপ্তম দিনে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় পথসভা তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
এবারের লড়াই দেশ গড়ার : নাহিদ
গণভবন জয় করেছি, সংসদও জয় করব: নাহিদ ইসলাম
সিরাজগঞ্জবাসীর উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫ আগস্ট। কিন্তু সিরাজগঞ্জ স্বাধীন হয়েছে ৪ আগস্ট। প্রথমে এই জেলা স্বাধীন হওয়ায় ফ্যাসিবাদ সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে আমরা আপোস করিনি। দেশ গঠনের এ যাত্রাতেও আমরা আপোস করব না। আপনাদের অধিকারের জন্য আমরা রাজপথে আছি এবং থাকব। আমরা বিশ্বাস করি, যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছিলাম, সেই একইভাবে আমরা দেশ গঠন করব।’’
গণঅভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘আন্দোলনে অনেক ভাই-বোন শহীদ হয়েছে। তাদের শহীদি মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন জুলাই সনদ। যে সমস্ত মানুষ গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছে, তাদের জুলাই সনদে স্বীকৃতি দিতে হবে। এতে আমরা টালবাহানা ও ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’’
সিরাজগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা এতদিন উন্নয়নের গল্প শুনেছি, যমুনাপাড়ের এসে দেখি কিছু নেই। আমরা শক্তিশালী নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ সিরাজগঞ্জের মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করতে পারব।’’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘৫ আগস্টে যদি খুনি হাসিনার পতন না হতো, তাহলে গণভবনে ডিসি-এসপিরাই প্রমোশনের জন্য লাইন ধরত। তাই বলতে চাই, আমাদের হারানোর কিছু নেই। কেননা আমাদের লুটপাটের ব্যাংক নেই, আমরা হারাব। আমাদের আছে শুধু মানুষের ভালোবাসা। প্রয়োজনে আমরা দেশের জন্য রাস্তায় এসে আবারো জীবন দেব।’’
দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা.
পথসভা শেষে নেতাকর্মীরা সিরাজগঞ্জ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাজার স্টেশন এলাকায় এসে শেষ করে। পরে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাবনার উদ্দেশে রওয়া হয়।
ঢাকা/রাসেল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম স র জগঞ জ র পতন
এছাড়াও পড়ুন:
বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের সংকটকালে তুরস্ক পাশে দাঁড়িয়েছে:
বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংকটকালে তুরস্ক বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় তুরস্কের ইস্তানবুলে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রসারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট নেজমুদ্দিন বিলাল এরদোয়ান।
আরো পড়ুন:
‘শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তীর আঁকা পোস্টারে ফুটে উঠবে জুলাইয়ের অনিবার্যতা’
তৃণমূল থেকেই উঠে আসবে লাল-সবুজের ভবিষ্যৎ তারকা: আসিফ মাহমুদ
বৈঠকে তারা দুই দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং এসব লোকজ ক্রীড়া প্রসারে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, যেমন কাবাডি, কুস্তি, বলিখেলা এবং নৌকা বাইচের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই খেলাগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে আমরা একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।” তাছাড়া, তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলা নিয়ে কাজ করা ফেডারেশনগুলোকে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদস্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তুরস্কের শিক্ষা কার্যক্রমে নিজের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য তুরস্কে শিক্ষাবৃত্তি, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও বিষয় ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে তার সংস্থার পরিচালিত স্কুলের একটি শাখা চালু করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তাছাড়া, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় তিনি তার কক্সবাজার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা প্রসারে সহায়তা প্রদানের আগ্রহ জানান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জীবন সহজতর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে তুরস্কের চলমান প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ নিজেদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও সাফল্য পুনরুদ্ধারে কাজ করছে।”
বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ তার প্রকৃত ও বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।” তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণদের মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সভ্যতাগত রূপান্তরে গুরুত্ব আরোপ করছে বাংলাদেশ।
তিনি আরো জানান, তুরস্কের মতো বাংলাদেশের অতীত গৌরবোজ্জ্বল সময়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনর্জীবন ঘটানোর প্রতি আগ্রহের কথা।
উপদেষ্টা গাজায় চলমান গণহত্যাসহ বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আহ্বান জানান এবং জানান, এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সক্রিয় সমর্থন ও অংশগ্রহণ থাকবে।
উপদেষ্টা আসন্ন “গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫”-এ বিলাল এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সফর দুই দেশের যুব, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সম্পর্কের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরো সুদৃঢ় ও বেগবান করবে।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ