বার্ষিক আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন দিতে ৫০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগকে চিঠি দেয়নি সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। সোমবার নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বরাবরের মতো দলগুলোর কাছে নিরীক্ষা প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ২০২৪ পঞ্জিকা বছরের হিসাব চেয়ে এবার ৫০টি নিবন্ধিত দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইসির এ-সংক্রান্ত চিঠি দলগুলোর সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়।
ইসি কর্মকর্তারা বলেন, নিবন্ধন স্থগিত থাকায় এবার আওয়ামী লীগের কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়নি। ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর প্রথম বাদ পড়ল অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে টানা দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি। অপরদিকে একযুগ পর নিবন্ধন পুনর্বহাল হওয়ায় বার্ষিক লেনদেনের তথ্য দিতে এবার জামায়াতে ইসলামীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ইসিতে ৫০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত রয়েছে। একটির নিবন্ধন স্থগিত ও চারটির নিবন্ধন বাতিল রয়েছে। নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিবছর জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আর্থিক লেনদেনের প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এবার দলগুলোকে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বরের হিসাব দিতে হবে চলতি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে।
স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিরীক্ষা করে ইসিতে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর। আইন অনুযায়ী পরপর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইস র জন ত ক দল র জন ত র ন বন ধ ন বন ধ ত দলগ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
অভ্যন্তরীণ পথে গত বছরের সেরা বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা
দেশের অভ্যন্তরীণ পথে উড়োজাহাজ পরিচালনায় ২০২৪ সালে সেরা বিমান সংস্থার পুরস্কার পেয়েছে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। আর দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিমান সংস্থার মধ্যে সেরা এয়ারলাইন নির্বাচিত হয়েছে দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইন। এ ছাড়া কার্গো পরিবহনে সেরা বিমান সংস্থা হয়েছে সৌদিয়া কার্গো।
গত শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘শেয়ারট্রিপ-মনিটর এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার-২০২৪’ অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ বছর মোট ২৩টি শ্রেণিতে বিভিন্ন বিমান সংস্থাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক পাক্ষিক দ্য বাংলাদেশ মনিটর পরিচালিত আকাশপথে নিয়মিত ভ্রমণ করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনলাইনে মতামত জরিপের ভিত্তিতে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এতে লিড স্পনসর ছিল অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি-শেয়ারট্রিপ। এ ছাড়া পার্টনার হিসেবে ছিল ইস্টার্ন ব্যাংক, জিডিএস কোম্পানি স্যাবর বাংলাদেশ, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল ঢাকা ও অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি বাইটিকিটস।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আয়োজকেরা জানান, চলতি বছর অনলাইনে পরিচালিত মতামত জরিপে তিন হাজারের বেশি নিয়মিত আকাশভ্রমণকারী অংশ নিয়েছেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে ২৩টি শ্রেণিতে বিমান সংস্থাগুলোকে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে অবদান রাখায় গ্যালাক্সি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান তৌফিক উদ্দীন আহমেদকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম, জুরি কমিটির চেয়ারম্যান এম. সাদিকুল ইসলাম, শেয়ারট্রিপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হক, স্যাবর বাংলাদেশের কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার ও সিইও মো. সাইফুল হক, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আসিফ আহমেদ প্রমুখ।
তিন শ্রেণিতে সেরা ইউএস-বাংলা
২০২৪ সালে অভ্যন্তরীণ পথে ফ্লাইট পরিচালনায় সেরা (স্বর্ণ পুরস্কার) বিমান সংস্থা হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। এই শ্রেণিতে নভো এয়ার রৌপ্য ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ব্রোঞ্জ পুরস্কার পেয়েছে। এ নিয়ে পরপর তিনবার অভ্যন্তরীণ পথে সেরা বিমান সংস্থা হয়েছে ইউএস-বাংলা। গত বছর আরও দুটি শ্রেণিতে সেরা হয়েছে ইউএস-বাংলা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ পথে ইন-ফ্লাইট সার্ভিস প্রদান এবং ২০২৩ সালের তুলনায় উন্নত কার্যক্রমের জন্য প্রতিষ্ঠানটি স্বর্ণপদক পেয়েছে। এই দুই শ্রেণিতে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে এয়ার অ্যাস্ট্রা ও নভোএয়ার এবং বিমান বাংলাদেশ ও কুয়েত এয়ারওয়েজ।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম জানান, ‘বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বহরে মোট ২৪টি উড়োজাহাজ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্য মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক গড়ে ৮০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের আস্থা অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছে ইউএস-বাংলা। পরপর তিন বছর এ পুরস্কার পাওয়া আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টারই ফসল।’
দেশীয় বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে গত বছর অভ্যন্তরীণ পথে সময়মতো বিমান ছাড়ার জন্য সেরা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা ও এয়ার অ্যাস্ট্রা। সবচেয়ে বেশি গ্রাহকবান্ধব বিমান সংস্থা হয়েছে এয়ার অ্যাস্ট্রা, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা। আর বিমানবন্দরে বিভিন্ন সেবার জন্য সেরা হয়েছে যথাক্রমে এয়ার অ্যাস্ট্রা, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার।
আরও যারা পুরস্কার পেয়েছে
২০২৪ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিমান সংস্থার মধ্যে সেরা (স্বর্ণ) হয়েছে দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইন। সেই সঙ্গে কাতার এয়ারওয়েজ রৌপ্য ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস ব্রোঞ্জ পুরস্কার পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে সেরা হয়েছে থাই এয়ারওয়েজ, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস ও মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস। দীর্ঘ দূরত্বের আন্তর্জাতিক পথে ফ্লাইট পরিচালনায় সেরা হয়েছে বিমান বাংলাদেশ, কাতার এয়ারওয়েজ ও টার্কিশ এয়ারলাইনস। সাশ্রয়ী মূল্যে যাত্রী পরিবহন করে, এই শ্রেণিতে সেরা হয়েছে এয়ার এশিয়া, ফ্লাই দুবাই ও এয়ার অ্যারাবিয়া।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে সেরা বিজনেস ক্লাস সুবিধার বিমান সংস্থা হয়েছে কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস ও ক্যাথে প্যাসিফিক। আর ইকোনমি ক্লাসে সেরা হয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজ। সার্বিকভাবে গ্রাহক অভিজ্ঞতার দিক থেকেও সেরা হয়েছে এই তিন বিমান সংস্থা। এ ছাড়া ফ্লাইটের অভ্যন্তরে বিনোদন, খাবার ও অন্যান্য পরিষেবার জন্যও বিমান সংস্থাগুলোকে পৃথকভাবে পুরস্কৃত করা হয়।
অন্যদিকে কার্গো পরিবহনে ২০২৪ সালে সেরা বিমান সংস্থা হয়েছে যথাক্রমে সৌদিয়া কার্গো, ক্যাথে প্যাসিফিক ও এমিরেটস। সেরা এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ শ্রেণিতে সেরা হয়েছে এমটিবি এয়ার লাউঞ্জ (স্বর্ণ), ইবিএল স্কাই লাউঞ্জ (রৌপ্য) ও সিটি ব্যাংকের অ্যামেক্স লাউঞ্জ (ব্রোঞ্জ)। সেরা ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং ও লজিস্টিকস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হয়েছে এক্সপো ফ্রেইট, এমজিএইচ ও ডিএসভি।
এ বছর গ্রাহকদের বিবেচনায় ১২টি এয়ারলাইনকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় এয়ারলাইন ব্র্যান্ড হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এগুলো হচ্ছে এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, বিমান বাংলাদেশ, সৌদিয়া, ক্যাথে প্যাসিফিক, টার্কিশ এয়ারলাইনস, এয়ার ইন্ডিয়া, থাই এয়ারওয়েজ, মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ও গালফ এয়ার।