প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, বাদী নিরাপত্তাহীন
Published: 7th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে তিন খুনের পাঁচ দিন পার হয়েছে। প্রধান আসমি আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। এদিকে মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা-সহ দুই সন্তানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা অনেকটা পুরুষশূন্য। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বাইরে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত দুই দিনে কুমিল্লা ও রাজধানী থেকে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত রোববার তাদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়। জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এ মামলার প্রধান আসামি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ৩ নম্বর আসামি ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়ার নেতৃত্বে ঘটনার পরিকল্পনা করা হয়। নিহতদের পরিবারও একই দাবি করেছে।
তিনজনকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় সেখানে যাওয়া থানা পুলিশও নিরুপায় হয়ে পড়ে। এদিকে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া গত রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে প্রথমে জানান। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর এ সিদ্ধান্ত পাল্টান। পরে আদালত এই মামলায় তাকেসহ আটজনকে কারাগারে পাঠায়। এদের মধ্যে রয়েছেন রবিউল আওয়াল, আতিকুর রহমান, মো.
আদালতের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান সমকালকে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এ মামলায় গ্রেপ্তার ৮ জনের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন। মঙ্গলবার শুনানির পর আদেশ দেবেন বিচারক।
ভিডিও ভাইরাল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেড় মিনিটের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আহত রুমা আক্তারকে অ্যাম্বুলেন্সে কুমিল্লায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় বলতে শোনা যায়, ‘শিমুল চেয়ারম্যান ডিকলার দিয়েছে, ওদের মাইরা ফালা। ২০ মামলা হলেও আমি দেখব।’ এরপর রুমা বলেন, ‘আমার ওপর ৫০ জন হামলা চালায়। এরা কড়ইবাড়ি ও পীরকাসিমপুরের লোক। অনেককে আমি চিনি। চেয়ারম্যানের ডিকলারের পরই সবায় হামলা চালায়।’
আসামিদের গ্রেপ্তার চাইলেন বাদী
গত রোববার বিকেলে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে আনার খবরে হাজির হন হামলার সময় বেঁচে যাওয়া রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার। তিনি এ হত্যা মামলার বাদী। আসামিদের দেখে তিনি (রিক্তা) চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। ঘটনার সময় সামনে পেলে আমাকেও হত্যা করত। আমার মা ভাই বোন বারবার বাঁচার জন্য আকুতি জানিয়ে রক্ষা পায়নি। আমার বোন এখনও হাসপাতালের মৃত্যু শয্যায়।
তিনি আরও বলেন, শিমুল বিল্লাল চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই চেয়ারম্যানই হত্যাকাণ্ডের হোতা।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান সমকালকে বলেন, পরিবারের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত অনেকের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার কড়ইবাড়িতে একটি মোবাইল চুরি ও মাদক কারবারের অভিযোগ এনে রোকসানা বেগম রুবি, তার মেয়ে জোনাকি আক্তার ও ছেলে রাসেল মিয়াকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার দুই দিন পর ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর সদস য ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।