শুনতে পাচ্ছি, ডিসি-এসপির কার্যালয় অনেক দলের অফিসে পরিণত হচ্ছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 7th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এনসিপিতে যোগ দিতে চাইলে নাকি ভয় দেখানো হয়। এনসিপির প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ইউনিটের নেতাকর্মীদের জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। আমাদেরকে জানাবেন, শুধু ঢাকা থেকে আসতে যতটুকু সময় মাত্র। আমরা শুনতে পাচ্ছি, ডিসি-এসপির কার্যালয়গুলো নাকি অনেক দলের অফিসে পরিণত হচ্ছে। আমরা আপনাদেরকে বলছি, কোনো রাজনৈতিক দলের যখন পতন শুরু হয় তখন আপনাদের কেউ বাঁচাতে আসবে না। আপনারা বেনজির হইয়েন না, আপনারা ডিবির হারুন হইয়েন না। কেননা, আবাবিল পাখির মত একজন হাসনাত অথবা একজন সারজিস আলম আবারও রাস্তায় নেমে আসবে। ডিসি এবং এসপিদের কল্যাণের জন্য বলব, আপনারা বাংলাদেশপন্থি ও জনগণপন্থি হন। কারণ দিনশেষে ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনতা।’
আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরে পথসভা ও পদযাত্রায় বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সাধারণ মানুষই পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, হাসিনা মাহিনদের টাকা দিয়ে কিনতে পারেনি। মাহিনদের হাতে যতদিন থাকবে দেশ, ততদিন নিরাপদ থাকবে বাংলাদেশ।’
এ সময় সারজিস আলম বলেন, ‘যখন কেউ আন্দোলন করার বা কমিটিতে নাম দেওয়ার সাহস পাচ্ছিল না তখন মাহিন এগিয়ে এসেছিল।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার সময় যে ভয়ের ইতিহাস তৈরি হয়েছিল সেখান থেকেই আমাদের এই ইতিহাস তৈরি হয়েছে। যারা পুলিশের বুলেটের সামনে থেকে ফিরে এসেছে তারা এসব আর ভয় পান না। আমাদের বাধা দিয়ে আটকানো যাবে না। সিরাজগঞ্জ গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে পথ দেখিয়েছিল, আগামীতেও সেভাবে পথ দেখাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানের পরে নিরপেক্ষ প্রশাসন চাই, বিচার ব্যবস্থা চাই। আমরা আগে দেখতাম তারা একটা দলের হয়ে কাজ করত, আমরা চাই না এখনও তারা সেটা করুক। বাংলাদেশে দেখেছি, আয়না ঘর থেকে শুরু করে কত কিছু করা হয়েছে। তাহলে আমরা বিচার ও সংস্কার ছাড়া কীভাবে নির্বাচনের দিকে যাব। বিচার না হলে কীভাবে আমরা শহীদ ভাই-বোনদের পরিবারের দিকে তাকাব।’ জুলাই পদযাত্রা এগিয়ে যাবে ও দেশের মানুষের সঙ্গে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ছাড়াও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি