ছয়-সাত মাস আগে মা বসুপতি চাকমার অসুস্থতার খবর পান বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলার ঋতুপর্না চাকমা। এরপরই মায়ের চিকিৎসা শুরু করে দেন তারা। ভেঙ্গে পড়বেন ভেবে মাকে অসুখের খবরটিও জানাননি।

অথচ মায়ের অসুস্থতা ও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না ঋতুপর্না এমন খবর প্রকাশ করেছে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম। যা ঋতুপর্না ও তার পরিবারকে অস্বস্তিতে ফেলেছে এবং পারিবারিক গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে সমকালের কাছে অভিযোগ করেছেন এই ফুটবলার।

ভুটান থেকে সমকালের কাছে নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার ঋতুপর্না বলেন, ‘মা যে অসুস্থ আমি কাউকে বলিনি। কিছু মিডিয়া আমার বাড়িতে গিয়ে নিউজ করেছে। যার কারণে এটা প্রকাশ হয়ে গেছে। আমি কখনো বলতাম না মিডিয়াতে। কারণ মা-ই জানে না তার কী অসুখ।

অসুস্থ থাকা স্বত্ত্বেও মা আমাদের জন্য সবসময় চিন্তা করেন। এমনিতেই ভাই মারা যাওয়ার পর উনি অনেক ভেঙে পড়েছেন। এর উপর মিডিয়াগুলো দেখছি লিখেলে- টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না আমরা। এই জিনিসটা আমার অনেক খারাপ লেগেছে।’

এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব শেষে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল রোববার রাত ২টায় দেশে ফেরেন। এরপর বাফুফে রাত ৩টার পরে তাদের সংবর্ধনা দেয়। সোমবার সকালেই ভুটানের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন তিনি। ভুটানের এফসি পারোতে খেলছেন ঋতুপর্না। ক্লাবের অনুশীলন শুরু হওয়ায় দেশে ফিরে বিশ্রামও নিতে পারেননি তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শরৎ উৎসব উদ্‌যাপন

নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরৎ উৎসব-১৪৩২ উদ্‌যাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এ অনুষ্ঠান হয়। চারুকলা অনুষদের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত, নৃত্যকলা, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহযোগিতায় এ উৎসব হয়।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখের সভাপতিত্বে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শরৎ উৎসব। পরে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, ‘চারুকলার প্রাঙ্গণে যখনই আমরা আসি, যেকোনো উৎসবে বা অনুষ্ঠানে আমরা একত্র হই, তখন সব সময় একধরনের ভিন্ন আবহ সৃষ্টি হয়। এখানে আমরা আমাদের লোকজ ও বাঙালি সাহিত্য-সংস্কৃতির একটি সুন্দর প্রকাশ দেখতে পাই।’

অধ্যাপক সায়মা হক আরও বলেন, ‘আজকের শরৎ উৎসবের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এ ধরনের উৎসব মানুষে-মানুষে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে। প্রতিযোগিতামূলক ও ব্যস্ত জীবনে আমরা প্রায়ই একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাই। এই উৎসবগুলো আমাদের পুনরায় একত্র করে, পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।’
এরপর চারুকলা অনুষদ, সংগীত, নৃত্যকলা এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে গান, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়।

সাংস্কৃতিক আয়োজনের অংশ হিসেবে চিত্রকলা প্রদর্শনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিনজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের ফারিয়া নওশিন আহমেদ ও সাজ্জাদুল ইসলাম এবং গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের ফরহাদ আলী।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘আমাদের বৈচিত্র্যময় ঋতুপ্রবাহ আমাদের মনোজগৎকে পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দুই এই চারুকলা অনুষদ। এখন দেখা যায়, ফাল্গুনে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সমগ্র বাংলাদেশ ও বিশ্বের বাঙালিরা এই উৎসব উদ্‌যাপন করে।

চারুকলা অনুষদ ঐতিহ্যগতভাবেই সমৃদ্ধ। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি এই তিনের সমন্বিত ধারাকে আমরা সব সময়ই স্বাগত জানাই। আমাদের চিত্রকলা যেমন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে, তেমনি সংগীত, নৃত্য ও নাটকেরও একই দৃষ্টিভঙ্গি ও সৃষ্টিশীল চেতনা রয়েছে।’
শরৎ উৎসব নিজস্ব উৎসব উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা বহু বছর ধরে দেখেছি চারুকলার প্রাঙ্গণকে অনেক সময় বিভিন্ন মানুষের খেয়ালখুশিমতো ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি, এখন আর সেটা হতে দেওয়া যাবে না এবং আমরা সেটি হতে দিচ্ছি না।’

সাদা দলের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম সরকার দেশের ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে নিয়মিতভাবে উদ্‌যাপনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্কা গোপ ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান তামান্না রহমান।

আরও পড়ুন‘অনেকের আপত্তিতে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরৎ উৎসব স্থগিত, বাতিল নয়: চারুকলার ডিন  ১০ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ