চলতি অর্থবছর থেকে ৩৯ ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে হবে। পাশাপাশি রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখিয়ে এসব সেবা নিতে হবে। এসব সেবা নিতে গিয়ে কেউ যদি রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র না দেখান, তাহলে সেবা দেবেন না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যদি কোনো কারণে সেবা দেন, তাহলে এই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানও আছে।

কয়েক বছর ধরে সরকারি–বেসরকারি কিছু সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়। চলতি অর্থবছরে এই সেবার তালিকা থেকে ১৩ ধরনের সেবা বাদ দেওয়া হয়। এবার দেখা যাক, কোন কোন সেবা নিতে রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে।

১.

২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণে;

২. কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পনসর শেয়ারহোল্ডার হতে হলে;

৩. আমদানি নিবন্ধন সনদ বা রপ্তানি নিবন্ধন সনদ গ্রহণ অথবা নবায়ন করতে;

৪. সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে;

৫. সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার লাইসেন্স নবায়ন করতে;

৬. সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি বা লিজ বা হস্তান্তর বা বায়নানামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে;

৭. চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, একচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ নবায়ন করতে;

৮. মুসলিম ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স (রেজিস্ট্রেশন) অ্যাক্ট, ১৯৪৭ এর অধীন নিকাহ রেজিস্ট্রার, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন, ২০১২ এর অধীন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক ও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৮৭২ এর অধীন রেজিস্ট্রার হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তি অথবা নবায়ন করতে;

৯. ট্রেড বডি বা কোনো বাণিজ্যিক সংগঠনের সদস্যপদ প্রাপ্তি অথবা নবায়ন করতে;

১০. স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডার বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নবায়নে;

১১. ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স, বন্ডেড ওয়াটারহাউস লাইসেন্স, কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্স, ফ্রেট ফরওয়ার্ডিং লাইসেন্স ও বায়িং হাউস নিবন্ধন গ্রহণ ও নবায়নে;

১২. যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে:

১৩. সিটি করপোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস–সংযোগ প্রাপ্তিতে;

১৪. সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ–সংযোগ প্রাপ্তিতে:

১৫. লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার, ডাম্ব-বার্জসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট গ্রহণ ও নবায়নে;

১৬. পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ইট উৎপাদনের অনুমতি গ্রহণ ও নবায়নে;

১৭. সিটি করপোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তিতে:

১৮. কোম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ গ্রহণে ও নবায়নে;

১৯. আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণে ও নবায়নে;

২০. আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খোলায়;

২১. ১০ লাখের অধিক টাকার মেয়াদি আমানত খোলায় ও বহাল রাখতে:

২২. ১০ লাখের অধিক টাকার সঞ্চয়পত্র কেনায়;

২৩. পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে;

২৪. ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক বা উৎপাদন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানকারী পদমর্যাদায় কর্মরত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে:

২৫. দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার সরকারি কর্মচারীর বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে:

২৬. স্বাভাবিক ব্যক্তি ব্যতীত অন্য করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে;

২৭. কোনো নিবাসী করদাতা কর্তৃক অ্যাডভাইজরি বা কনসালটেন্সি সার্ভিস, ক্যাটারিং সার্ভিস, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, জনবল সরবরাহ, নিরাপত্তাসেবা সরবরাহ বাবদ কোনো কোম্পানি হতে অর্থ প্রাপ্তিতে;

২৮. বিমা কোম্পানির এজেন্সি সার্টিফিকেট গ্রহণ ও নবায়নে;

২৯. দ্বিচক্র বা ত্রিচক্র মোটরযান ব্যতীত অন্য মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নকালে;

৩০. এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত এনজিও বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি হতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার অনুকূলে বিদেশি অনুদানের অর্থ ছাড় করতে;

৩১. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়নে;

৩২. কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এবং সোসাইটিস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৮৬০–এর অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ ও নবায়নে:

৩৩. কোনো নিবাসী করদাতা কর্তৃক পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে দরপত্র দলিলাদি দাখিলকালে;

৩৪. পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিলকালে;

৩৫. রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক গঠিত অনুরূপ কর্তৃপক্ষ অথবা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদনের নিমিত্ত ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে;

৩৬. কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়ি ভাড়া বা লিজ প্রদানকালে:

৩৭. আয়কর আইনে নির্দিষ্ট করা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট পণ্য বা সেবা সরবরাহকালে;

৩৮. হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মোটেল, কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসমূহের লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নে:

৩৯. সামাজিক অনুষ্ঠান, করপোরেট প্রোগ্রাম, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণসহ সমজাতীয় যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল বা সমজাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান হতে ভাড়া বা অন্য যেকোনো সেবা গ্রহণকালে;

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরবর হ এল ক য় ন বন ধ প রসভ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা

তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে,  ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে,  একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫  পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং  গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ত্বক সতেজ রাখতে এই ফল খান
  • রাকিবের রঙিন মাছের খামার, মাসে আয় ৪৫ হাজার টাকা
  • যুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়
  • বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব এখনো তেমন একটা পড়েনি: আইএমএফ
  • এক ছাতার নিচে ৪৮ ব্র্যান্ডের ফার্নিচার, ৫-১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়
  • ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নবম-দশম শ্রেণির সাড়ে পাঁচ কোটি পাঠ্যবই ছাপাবে সরকার
  • কুষ্টিয়ায় দুই দিনে ১৪ কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ
  • পুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প