ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ওবায়দুল হোসেনের (৪০) মরদেহ ফিরে পেয়েছে পরিবার। নিহত হওয়ার ৭৩ দিন পর বিজিবি-বিএসএফের তৎপরতায় ভারতীয় পুলিশ ওই যুবকের মরদেহ মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। 

শনিবার (১২ জুলাই) বিকালে মরদেহ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়। ওবায়দুল হোসেন মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানেফ আলীর ছেলে। 

শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মুন্সী ইমদাদুর রহমানের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল সকালে ভারতের ৫৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) কে জানায়, সীমান্তের মেইন পিলার ৪৮-এর নিকট ভারতের মধুপুর এলাকায় একটি অজ্ঞাত মরদেহ পড়ে আছে। পরে ভারতীয় পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পরদিন ২৮ এপ্রিল সকালে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা হানেফ আলী যাদবপুর বিওপিতে এসে জানান, তার ছেলে ওবায়দুল হোসেন গত ২৬ এপ্রিল রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। সীমান্তের অপর পাশে যে মরদেহ পাওয়া গেছে, সেটিই তার ছেলের বলে দাবি করে তিনি বিজিবির কাছে লিখিতভাবে মরদেহ ফেরতের আবেদন জানান।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে একাধিকবার চিঠিপত্র চালাচালি ও যোগাযোগ চালিয়ে যায়। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় তৎপরতার পর গত ৯ জুলাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ হস্তান্তরে সম্মত হয়। বিএসএফ মরদেহ শনাক্তের জন্য ছবি ও পরিচয়পত্র চেয়ে বিজিবিকে জানায়।

১২ জুলাই সকাল ১০ টায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ চূড়ান্তভাবে মরদেহ হস্তান্তরের সময় ও স্থান বিজিবিকে জানায়। পরে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে সীমান্ত পিলার ৪৭/৪-এস-এর কাছে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে মরদেহটি শূন্যরেখায় নিয়ে আসে। সেখানে ওবাইদুলের বাবা ও সৎমা তার পোশাক দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।

এরপর বিকেল ৫টা ১০মিনিটে বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় পুলিশ মরদেহটি মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “বিজিবির দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে ওবায়দুলের মরদেহ ফেরৎ আনা সম্বভব হয়েছে। এবং মরদেহ পরিবারের কাছে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে দাফন হয়েছে।”

ঢাকা/সোহাগ/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ ফ র ব এসএফ র

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
  • চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ১৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ