একসঙ্গে ছয় জায়গায় দায়িত্ব পালন করছেন খুলনা বিভাগীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা মো. হুসাইন শওকত। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক), খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক, নৌ পরিবহন মালিক গ্রুপের প্রশাসক, খুলনার স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক এবং জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন এই কর্মকর্তা।
 একসঙ্গে ছয় দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে তিনি কোথাও পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছেন না। এক দপ্তরের ফাইল নিয়ে ছুটতে হচ্ছে অন্য দপ্তরে। নিয়মিত সব অফিসে যেতে না পারায় দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কাজে ফাঁকি, ধীরগতিসহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এজন্য জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে অন্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে স্থানীয় সরকার সচিবকে চিঠি দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
২০২৪ সালের ২৮ জুলাই অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) হিসেবে খুলনায় বদলি হন ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা হুসাইন শওকত। দক্ষ ও উদ্ভাবনী কাজের জন্য সুনাম রয়েছে তাঁর। এজন্য স্থানীয় সরকার পরিচালক পদ শূন্য হলে তাঁকে ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত ১৯ আগস্ট খুলনাসহ ৮ বিভাগীয় শহরের জেলা পরিষদে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারদের (সার্বিক) প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী হুসাইন শওকত জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান। খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মেয়াদ শেষ হলে দীর্ঘদিন পদ ফাঁকা ছিল। এতে কার্যক্রম পরিচালনায় জটিলতা দেখা দিলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে খুলনা বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালককে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেন তিনি। 
 ফেব্রুয়ারি মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ দখল করে নেন কিছু ব্যবসায়ী। সংগঠনে অচলাবস্থা দেখা দিলে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে (সার্বিক) ব্যবসায়ী সংগঠনটির প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনাটি তিনি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছিলেন। পরে বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে ৩ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় পদাধিকবারবলে জেলা পরিষদের প্রশাসককে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী হুসাইন শওকত রেড ক্রিসেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ মাসে ১০ দিনও জেলা পরিষদে অফিস করেননি প্রশাসক। আগে জরুরি সভাগুলোও বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে হতো। তিন মাস ধরে সভাগুলো জেলা পরিষদে হচ্ছে। নিয়মিত ফাইলগুলো অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো ফাইল আটকে থাকে না।
 খুলনা ওয়াসা থেকে জানা গেছে, মাসে ৫-৬ দিন তিনি অফিসে যান। ওয়াসার ফাইলও কমিশনারের দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্বাক্ষর করে পরদিন কর্মচারীরা নিয়ে আসেন। ফাইল আটকে না থাকলেও প্রশাসক নিয়মিত অফিস না করায় অধিকাংশ কর্মচারী নিয়মিত অফিসে থাকেন না। বিশেষ করে পাম্প অপারেটররা অধিকাংশই সময়মতো দায়িত্ব পালন করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্মচারী ইউনিয়নের নেতার অফিসে প্রায়ই বিশৃঙ্খলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
 নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ ও রেড ক্রিসেন্টেও হাতেগোনা কয়েকদিন তিনি অফিস করেছেন। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে বসেই এসব কাজ করেন তিনি।
 খুলনায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রয়েছেন ৪ জন। একজনের কাঁধে স্থানীয় সরকার পরিচালকসহ এত দায়িত্ব কেন– জানতে চাইলে বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার বলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার আগে থেকেই তিনি দায়িত্বে রয়েছেন। দক্ষ কর্মকর্তাদের ওপর ভরসা বেশি থাকে। তারপরও প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব কীভাবে ভাগ করে দেওয়া যায়, ভাবছি।’ 
 মো.                
      
				
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ য় ত ব ন য় ই র কর ড পর বহন ম ল ক গ র প স থ ন য় সরক র কর মকর ত মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ত্রাস সৃষ্টি, টার্গেট কিলিং: ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবমূর্তি
আর্জেন্টিনার একজন ধনী ব্যবসায়ী হঠাৎ সিরিয়ায় ব্যবসা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নিজেকে তিনি সিরীয় বংশোদ্ভূত একজন লেবানিজ ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। বলেন, ফিরতে চান নিজের দেশে, শিকড়ের কাছে।
নাম তাঁর কামেল আমিন সাবেত। তিনি আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে বাস করা ধনী সিরীয়দের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন, ১৯৬২ সালে তাঁদের হাত ধরেই ব্যবসা করতে চলে যান সিরিয়ায়।
নেটফ্লিক্সে ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য স্পাই’ সিরিজের গল্প এই কামেল আমিন চরিত্রকে ঘিরে। কামেল কাল্পনিক কোনো চরিত্র নয়, বরং চরম ধূর্ততা দেখিয়ে প্রতিপক্ষের অন্দরমহলে পৌঁছে যাওয়া মোসাদের এক ছদ্মবেশী এজেন্ট। তাঁর প্রকৃত নাম এলি কোহেন, মোসাদের এজেন্ট হিসেবে সারা বিশ্ব যাঁকে চেনে।
কামেল আমিন ছদ্ম নামে এলি কোহেন সিরিয়া সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষপর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
মোসাদের গোয়েন্দা এলি কোহেন