যখন সুপারহিরো, সিক্যুয়েল আর পুরোনো ছবির রিবুট দেখে দেখে হাঁপিয়ে উঠেছেন দর্শক, তখন হঠাৎ ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে হরর বা ভৌতিক ঘরানার ছবি। সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বেই হরর ছবি নির্মাণের হার বেড়েছে। এ বছর এখনো পর্যন্ত হলিউডের ব্যবসাসফল ছবির তালিকায় হরর ছবির সংখ্যা উল্লেখ করার মতো।
মার্কিন সংস্থা কমস্কোরের এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর উত্তর আমেরিকার মোট টিকিট বিক্রির ১৭ শতাংশই এসেছে হরর ছবির হাত ধরে, যা ২০২৪ সালে ছিল ১১ শতাংশ; এক দশক আগেও যা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। হরর ছবির এই জয়রথে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও দুটি সিনেমা। ৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাচ্ছে মার্কিন হরর থ্রিলার ‘ওয়েপনস’। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পাবে ছবিটি। সেই সঙ্গে বাড়তি উপহার হিসেবে থাকছে জনপ্রিয় তুর্কি হরর সিনেমা ‘সিকিন’ সিরিজের নতুন ছবি ‘সিকিন ৮ ’। এ ছবিটিও ৮ আগস্ট মুক্তি দিচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স।
‘ওয়েপনস’ সিনেমার পোস্টার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এমন করুণ দশায় থাকবে উপজেলাটি?
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এক মাস ধরে অস্বাভাবিক জলাবদ্ধতার শিকার। বাড়ির চারপাশে হাঁটুপানি থেকে কোমরপানি, গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে আছে, চলাচলের একমাত্র উপায় এখন ডিঙিনৌকা। এটি শুধু বর্ষার স্বাভাবিক চিত্র নয়, বরং মানবসৃষ্ট এক ভয়াবহ দুর্ভোগের চরম বাস্তবতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ ও পানিনিষ্কাশনের খাল দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও চৌমুহনী পৌরসভার বেশির ভাগ মানুষ এখন ভুক্তভোগী। এই জলাবদ্ধতা শুধু যাতায়াতের দুর্ভোগই সৃষ্টি করছে না, এর প্রভাব পড়ছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে। শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, ফলে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি জমে থাকায় শৌচাগার ব্যবহার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এটি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে ও তাদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দিচ্ছে।
আর্থিক সংকটে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। রিকশাচালকের মতো দিনমজুরেরা সারা দিন রিকশা চালিয়েও ১০০ টাকা আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা নেই। সামগ্রিকভাবে এই জলাবদ্ধতা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর এক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান স্বীকার করেছেন যে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের খালগুলো দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজেদের উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও সরকারি পর্যায়ে চৌমুহনীর বড় খাল পরিষ্কার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে, কিন্তু মূল সমস্যাটি রয়ে গেছে তৃণমূল পর্যায়ে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জরুরি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। প্রথমত, প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। শুধু শহরের বড় খাল নয়, বরং গ্রাম ও ইউনিয়নের ছোট খালগুলোও দখলমুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোরতা অপরিহার্য। দ্বিতীয়ত, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও বসতি স্থাপন বন্ধ করতে হবে। কোনো ধরনের অনুমোদনের বাইরে যেন কেউ বাড়িঘর নির্মাণ করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখা জরুরি। তৃতীয়ত, জনগণকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের দুর্ভোগের কারণ হিসেবে অন্যের দোষারোপ না করে সম্মিলিতভাবে খাল দখলমুক্ত করার আন্দোলনে শামিল হতে হবে।
বেগমগঞ্জের এই জলাবদ্ধতা একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়, প্রকৃতির ওপর মানুষের লাগাতার নিপীড়ন বন্ধ না হলে এমন দুর্ভোগ আরও বাড়বে। শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়, বরং জনগণের সচেতনতা, স্থানীয় নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও প্রশাসনের কঠোরতাই পারে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে।