চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
Published: 31st, August 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।
রবিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে রোকেয়া হল সংলগ্ন যাত্রী ছাউনির পাশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এটি শেষ হয়।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, “৫ আগস্টের পর ৮ আগস্ট সর্বজনীনভাবে গৃহীত একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একটি সুন্দর পরিবেশের আশায় সেই সরকারকে বাংলাদেশের সব মানুষ সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছে মবের আস্তানায়। যে প্রশাসন নিয়োগ দিয়েছে, তারাও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। যদি আজকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর হতো, তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হতো না।”
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম তার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। পুলিশ স্টেশনে মিষ্টি বিতরণ করা তার কাজ নয়, দিকনির্দেশনা দেওয়া তার কাজ। কিন্তু তিনি এসব কাজের মাধ্যমে হাস্যরসের জন্ম দিয়েছেন।”
ডাকসুর ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, “গতকাল রাতে একজন চবি নারী শিক্ষার্থী বাসায় দেরি করে প্রবেশ করার কারণে এক দারোয়ান তার গায়ে হাত তোলে। এর প্রতিবাদ জানাতে আমার ভাই গেলে, তাদেরকে গতকাল রাত থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত হামলার শিকার হতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে এই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। চবি প্রশাসন সান্ধ্যকালীন আইন করে শিক্ষার্থীদের মব তৈরিতে উসকানি দিয়েছে। আমরা বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো রক্ত ঝরতে দেব না।”
জিএস পদপ্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, “৫ আগস্টের পূর্বেও আমরা হামলার শিকার হয়েছি, পরবর্তী সময়েও এসেও মার খেয়েছি। ঢাবি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই—চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা ঢাবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল সবসময় আছি। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, দায়িত্ব পালন করুন। যদি ব্যর্থ হন তবে তা স্বীকার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।”
এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ বলেন, “গতকাল রাত থেকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি হয়েছে।”
সৌরভ/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল সরক র আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন
ফতুল্লার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম (৫২) মারা গেছেন। সে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় মারা যান।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজিগঞ্জ জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে পাঠানটুলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত ইব্রাহিম ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড হাজীগঞ্জের আব্দুল জলিলের পুত্র। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
জানা যায়,২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে বিএনপির ডাকা মহা সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের ব্যানারে সে অংশগ্রহণ করে।
সমাবেশের শেষের দিকে মুল মঞ্চের পেছনের দিকে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা,কর্মীও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ বিএনপি নেতা- কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
ইব্রাহিম পুলিশের হামলায় মারাত্নক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকে। সে সময় সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনার চারদিন পর তার সহোযোগিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন সহোযোগিরা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর আল বারাকা নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়।
পরবর্তীতে ইব্রাহিমকে নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন হলে বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুল তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রাতে তিনি মারা যান।
ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ মিয়া জানান,নিহত ইব্রাহিম ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত পল্টন পার্টি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও ইউনিয়ন যুবদলের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন ।
সমাবেশ চলাকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন টিপু ও নিহত ইব্রাহিম এবং তিনি সহ আরো নেতা-কর্মীরা পল্টন পার্টি অফিস সংলগ্ন চায়না টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে করে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে।
অতর্কিত হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় চার দিন পর পত্রিকার নিউজে দেখতে পায় ইব্রাহিম নামে একজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সেই সংবাদের পর তার পরিবারের লোকজন এবং ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নেওয়ার পরে তারা নিশ্চিত হন যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা চিকিৎসারতি হচ্ছে তাদের নিখোঁজ ইব্রাহিম।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা শেষ করে তাকে বাসায় আনা হয়। বাসায় আনার পরে উনি আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ফলে ৮ নং ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পুনরায় তাকে মদনপুর আল বারাকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পরেন।
এমতাবস্থায় নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপন তাকে দেখতে আসলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদের পর বিএনপি নেতা শিল্পপতি প্রাইম বাবুল ভাই তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নেন।
বাবুল ভাই নিজে এসে তার দাত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমান ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।