প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েই জ্যোতিদের বিশ্বকাপের মিশন
Published: 22nd, September 2025 GMT
আইসিসি উইমেনস ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বার অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকা ছাড়বে নিগার সুলতানার দল। আগামী ২ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মূল লড়াই।
বিশ্বকাপের মিশনে ভালো করতে মরিয়া বাংলাদেশ। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের পরিবর্তে বাংলাদেশ দলের সঙ্গী প্রস্তুতির ঘাটতি। কেননা পাঁচ মাস বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। কেবল নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতিতে কি আর বিশ্বকাপে ভালো করা সম্ভব? সেই প্রশ্নটা উঠতেই আশা দিয়ে বাংলাদেশের এবারের বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
বিশ্বকাপের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়
বিশ্বকাপে রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ফের এক নম্বরে হিলি
বিসিবিতে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে কোচ সরোয়ার ইমরান ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি পাশাপাশি বসে প্রায় একই কথা বললেন।
সারোয়ার ইমরান বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিটি ম্যাচ ধরে খেলা ও ভালো খেলা। আমাদের দুটি ম্যাচে ভালো সুযোগ আছে, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এছাড়া অন্যান্য দলের সঙ্গেও আমরা.
লম্বা সময় ধরে যে ক্যাম্প করেছেন জ্যোতিরা সেটিকেই ভরসা মানছেন অধিনায়ক, “অবশ্যই (বড় দলের সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো হতো) ..আদর্শ প্রস্তুতি হয়তো হয়নি। তবে আমি মনে করি, বাংলাদেশে যত ধরনের ফ্যাসিলিটি আছে, সবগুলো আমরা পেয়েছি। এখনো পর্যন্ত আমরা যতগুলো ক্যাম্প করেছি, সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। চেষ্টা তো করা হয়েছে। তবে যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি না। যেভাবে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমার মনে হয় ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।”
মূল মঞ্চে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কায় দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে৷ দুটি ম্যাচে ভালো কিছুর আশায় সরোয়ার ইমরান, “প্রতিটি ম্যাচই জেতার জন্য খেলব। তবু অস্ট্রেলিয়া বা আরো দু-একটা দলের যে স্ট্যান্ডার্ড, তাদেরকে আমরা নিজেদের চেয়ে অনেক ওপরে দেখব না। আমাদের মতো ভাবব এবং জেতার জন্যই খেলব প্রতিটি ম্যাচ। গত বিশ্বকাপে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছি। এবার আরো কিছু ম্যাচ জেতার জন্য যাচ্ছি।”
আগামী ২ অক্টোবর বাংলাদেশের মিশন শুরু হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এরপর ভারত সফর করবে নারীরা। ৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। খেলা হবে গৌহাটিতে। ১০ অক্টোবর একই মাঠে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড।
১৩ অক্টোবর বিশাখাপত্তনমে বাংলাদেশ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। একই মাঠে ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের খেলা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। রাউন্ড রবিন লিগের শেষ দুই ম্যাচ হবে মুম্বাইয়ে। ২০ অক্টোবর শ্রীলঙ্কা ও ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত।
মূল প্রতিযোগিতায় মাঠে নামার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কায় ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। একদিন পর বাংলাদেশ খেলবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: নিগার সুলতানা জ্যোতি (অধিনায়ক), নাহিদা আক্তার (সহ অধিনায়ক), ফারজানা হক, রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক, শারমিন আক্তার সুপ্তা, সোবহানা মোস্তারি, রিতু মনি, স্বর্ণা আক্তার, ফাহিমা খাতুন, রায়েয়া খান, মারুফা আক্তার, ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, সানজিদা আক্তার মেঘলা, নিশিতা আক্তার নিশি ও সুমাইয়া আক্তার।
ঢাকা/ইয়াসিন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প র প রস ত ত
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন ৩৮৫ শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ফাহমিদা আকতার। থাকেন ক্যাম্পাসের শামসুন নাহার হলে। তাঁর হলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। ক্যানটিনে নিম্নমানের খাবার। এসব নিয়েই তিনি কাজ করতে চান। তাই হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়তে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ফাহমিদা আকতার স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। প্রথম আলোকে এই শিক্ষার্থী বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিলেন। হলে যেসব সংকট রয়েছে, সেসব নিয়ে বিস্তারিত কাজ করবেন। এ জন্যই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
ফাহমিদাসহ ৩৮৫ শিক্ষার্থী সপ্তম চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। ইতিমধ্যে এই শিক্ষার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। তবে এরই মধ্যে ক্যাম্পাসে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তাঁদের অনেকেই ভোটারদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। কুশল বিনিময় করছেন।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেছে কেন্দ্রীয় সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। শিক্ষার্থীরা একে বলছেন ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’। এই নির্বাচনে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঢল, যা প্রতিযোগিতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।
নির্বাচনে লড়তে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিয়া ফাইরুজ হাসান। তিনি বিজয়-২৪ হল সংসদের যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে তাসনিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হলে আবাসনের চরম সংকট রয়েছে। একটি খাটে দুজন করে থাকতে হচ্ছে। নির্বাচিত হতে পারলে তিনি এ বিষয়ে কাজ করবেন।
স্বতন্ত্রদের আগ্রহ
এবারের নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৯৩১ জন। এর মধ্যে চাকসুতে জমা পড়েছে ৪২৯টি। চাকসুতে ২৬টি পদে নির্বাচন হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে ১২টি প্যানেল। এসব প্যানেলের ২৫৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি ১৭০ জন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে ভিপি পদে ১৪ জন, জিএস পদে ১১ জন ও এজিএস পদে ১১ জনের স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে ১৪টি হলে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪৮১ জন। এর মধ্যে ছাত্র হলে ৩৫৬ জন ও ছাত্রী হলে ১২৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। প্রতিটি হলে ভিপি ও জিএসসহ ১৪টি করে পদ রয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ছাত্রদের ৭টি হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
হিসাব অনুযায়ী, ৭ হলে ছাত্রশিবিরের ৯৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। আর ৯ হলের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন ছাত্রদলের অন্তত ১৪০ জন। সব মিলিয়ে দুই সংগঠনের অন্তত ২৩৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি ১১৮ জন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন।
ছাত্রীদের দুই হলে দুটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্যানেল থেকে ২৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সে হিসাবে ছাত্রী হলে স্বতন্ত্রভাবে লড়বেন ৯৭ জন। অবশ্য চূড়ান্ত সংখ্যা জানা যাবে আগামী বৃহস্পতিবার।
দাবি আদায়ের ‘প্ল্যাটফর্ম’
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সহযোগিতা করে।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আলীমুল শামীম চাকসুর সহদপ্তর সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে চান। স্বতন্ত্রভাবেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচনী ইশতেহারও প্রকাশ করেছেন গতকাল। শামীম প্রথম আলোকে বলেন, চাকসুর গঠনতন্ত্রে সহদপ্তর সম্পাদকের যে কাজ রয়েছে, তা তিনি করবেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য ১১ দফা প্রকাশ করেছেন। ইশতেহার পছন্দ হলে তাঁকে ভোট দেবেন শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা জোট বেঁধে ও একা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।