জুবিনের শোকযাত্রায় জনজোয়ার, লিমকা বুক অব রেকর্ডস
Published: 22nd, September 2025 GMT
ভারতীয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গের মৃত্যুতে হতবাগ তার ভক্ত-অনুরাগীরা। সিঙ্গাপুর থেকে তার মরদেহ আসামে পৌঁছানোর পর কার্যত থমকে যায় রাজ্যটি। লাখ লাখ শোকাহত ভক্ত -অনুরাগীরা গুয়াহাটিসহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে গিয়ে ভিড় করে; তৈরি হয় ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত।
শহরের রাস্তাগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে, ভালোবাসার জোয়ারে ভেসে আসা মানুষের স্রোতে, যারা শেষবারের মতো তাদের প্রিয় তারকাকে একনজর দেখতে এসেছিলেন। বিভিন্ন হৃদয় ছোঁয়া উপায়ে শ্রদ্ধা জানায় জুবিনকে। গান, অশ্রু, প্রার্থনা এবং নিঃশব্দ অভিবাদনে—যা প্রতিফলিত করে জুবিন গার্গের প্রতি মানুষের গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
আরো পড়ুন:
কত টাকা আয় করল ‘জলি এলএলবি থ্রি’?
শিল্পা শেঠির সঙ্গে তুলনা, কীভাবে সামলান বোন শমিতা?
লিমকা বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানিয়েছে, জুবিন গার্গের শোকযাত্রায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল।
এই নজিরবিহীন জমায়েতকে স্বীকৃতি দিয়েছে লিমকা বুক অব রেকর্ডস। আনুষ্ঠানিকভাবে জুবিন গার্গের শোকযাত্রাকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জনসমাগম হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর আগের তিন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা হলেন—মাইকেল জ্যাকসন, পোপ ফ্রান্সিস এবং রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়।
দিল্লি থেকে গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় জুবিনের মরদেহ। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জুবিনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার বাসভবনে। এসময় গায়কের স্ত্রী গরিমা গার্গ স্বামীর কফিন জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কেবল গরিমাই নন, জুবিনের অসংখ্য ভক্তকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
গুয়াহাটির প্রতিটি কোণ কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল, মানুষ মেনে নিতে পারছিল না জুবিনহীন এই বাস্তবতাকে। তবু লিমকার এই স্বীকৃতি জুবিন গার্গকে কেবল আসামের গায়ক, অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নয়, বরং জনগণের এক মহাতারকা হিসেবে চিরস্মরণীয় করে রাখল, যার প্রভাব সীমানা ছাড়িয়ে গেছে।
‘কিং অব হামিং’খ্যাত গায়ক জুবিন গার্গ গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান। নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে সিঙ্গাপুর যান জুবিন গার্গ। এ উৎসবের একজন প্রতিনিধি এনডিটিভি-কে বলেন, “স্কুবা ডাইভিংয়ের সময়, জুবিন গার্গ শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সিপিআর দেওয়া হয়। তারপর দ্রুত তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকাল আড়াইটা নাগাদ জুবিনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
জুবিন গার্গের শেষকৃত্য মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) গুয়াহাটির কামারকুচি এনসি গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জুবিন গার্গ। তিনি একাধারে ছিলেন গায়ক, সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত যুব মহোৎসব পাশ্চাত্য একক পরিবেশনায় স্বর্ণপদক লাভ করার পর জুবিনের জীবন বদলে যায়। ১৯৯২ সালে অসমিয়া অ্যালবাম ‘অনামিকা’ মুক্তির মাধ্যমে জুবিন পেশাদার সংগীতজগতে প্রবেশ করেন।
২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমায় ‘ইয়া আলি’ গান গেয়ে তাক লাগিয়ে দেন জুবিন। তারপর বেশ কয়েকটি সুপারহিট গান উপহার দেন তিনি। পরে বলিউডে খুব একটা কাজ করতে দেখা যায়নি তাকে। তবে আসামের আঞ্চলিক সংগীত নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন এই শিল্পী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
এলাকার নামেই সিনেমা—আবেগে ভাসলেন পাইকগাছার মানুষ
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের দারুণ মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিনেমা ‘দেলুপি’র জমজমাট প্রিমিয়ার প্রদর্শনী। বুধবার বিকেলে শুরু হওয়া এই আয়োজনে স্কুলমাঠ যেন পরিণত হয় এক উৎসবে।
বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। সারা দেশে মুক্তি পাবে ১৪ নভেম্বর। প্রিমিয়ার প্রদর্শনী ঘিরে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল থেকেই মাঠে ভিড় করেন শত শত দর্শক। অনেকের হাতে সিনেমার পোস্টার, কেউ–বা পরিবার–বন্ধুদের সঙ্গে অপেক্ষায় পর্দা ওঠার। চারপাশে তখন উৎসবের আবহ, আনন্দের কোলাহল। সিনেমা শেষে দর্শকদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। নিজেদের জীবনের গল্প বড় পর্দায় দেখে অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
দেলুটি গ্রামের বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের এলাকার নামেই সিনেমা—এটা ভাবতেই গর্ব লাগে। গল্পটা এত বাস্তব, যেন আমাদের জীবনেরই কথা বলা হয়েছে।’ স্থানীয় ৫ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বদিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাঙন ছিল আমাদের জীবনের অংশ। সেই কষ্টই এ সিনেমায় উঠে এসেছে। “দেলুপি” শুধু আমাদের গল্প নয়, অন্য উপকূলের অনেক মানুষের গল্পও বটে। আশা করি এই সিনেমা আমাদের দুর্দশার কথা আরও দূরে পৌঁছে দেবে।’
বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার