ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ায়, প্রতিশোধ না নিতে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেছেন, তিনি ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন যে, তারা যেন যুক্তরাজ্যের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রতিশোধ হিসেবে পশ্চিম তীরের আরো কিছু অংশ দখল না করে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে যোগদানের আগে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে ফ্রান্স এবং আরো কয়েকটি ইউরোপীয় দেশেরও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা রয়েছে।

আরো পড়ুন:

ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য

সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে যোগদানের আগে কুপার বিবিসির সাথে কথা বলছিলেন, যেখানে ফ্রান্স এবং অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্র একই রকম ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

যুক্তরাজ্য তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে উল্লেখযোগ্য একটি পরিবর্তন এনে গতকাল রবিবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এই স্বীকৃতি ঘোষণা করেন। গতকাল কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পতুর্গালও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি সন্ত্রাসবাদকে পুরষ্কার দেয়ার মতো।

বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে কুপার জানান, ইসরায়েল এই ঘোষণাকে পশ্চিম তীরের আরো কিছু অংশ দখলের অজুহাত হিসেবে নেবে কিনা, তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। তবে বলেন, তিনি ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তিনি এবং তার সরকারের অবশ্যই তা করা ঠিক হবে না।

কুপার বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, আমরা ইসরায়েলের নিরাপত্তার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সর্বোত্তম উপায় হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কুপার আরো বলেন, “এটি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও ন্যায়বিচার এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য করা হয়েছে এবং এটি করতে সক্ষম হওয়ার জন্য আমরা এই অঞ্চল জুড়ে সকলের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।”

তিনি বলেন, “আমরা যেমন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিই যে ইসরায়েল রাষ্ট্র.

.. তেমনি আমাদের ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকারকেও স্বীকৃতি দিতে হবে।”

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুপার মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য একটি কাঠামো তৈরিতে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য তৈরির জন্য সোমবার জাতিসংঘের সম্মেলনে জোর দেবেন।

রবিবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেন, তিনি ‘শান্তি এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করতে চান’।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ‘হবে না’।

বিবিসি রেডিও ফোর টুডে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বলেন, “এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইহুদি সম্প্রদায় যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টিকে কখনই ক্ষমা করবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর জ য ইসর য় ল য ক তর জ য র পরর ষ ট র ইসর য় ল র জন য ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।

বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।

বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।

সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ