সারা বিশ্বে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে নানা মাত্রায় ভূমিকম্প হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া গেলেও ভূমিকম্পের নির্ভুল সতর্কবার্তা পাওয়া যায় না। আর তাই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। অনেকের মনেই প্রশ্ন, চাঁদেও কি ভূমিকম্প হয়? শুনতে অবাক লাগলেও চাঁদেও ভূমিকম্প হয়ে থাকে। চীনের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে চাঁদে ৪১টি নতুন ভূমিধস শনাক্ত করা হয়েছে। চাঁদে ভূমিকম্প হওয়ার কারণেই এসব ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে একটি গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাজ করছে চীন। এই কাজের অংশ হিসেবে চাঁদের পৃষ্ঠের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন চীনের সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয়, ফুঝো বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংহাই নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে চাঁদের সবচেয়ে কম স্থিতিশীল অঞ্চলের ৭৪টি এলাকার তথ্য সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। এসব তথ্য ভবিষ্যতে চাঁদে গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনচাঁদের মালিক কে১৪ জুন ২০২৪অতীতে অ্যাপোলো মিশনের সময়ও চাঁদে ভূমিকম্প শনাক্ত হয়েছিল। চাঁদের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে গেলেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি এখনো অনাবিষ্কৃত। চাঁদে ভূমিকম্প কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে। এর ফলে চাঁদে যেকোনো কাঠামোর ক্ষতি বা আছড়ে পড়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী জিয়াও ঝিয়োং বলেন, কিছু ভূমিধস আকারে বেশ ছোট হয়। বেশির ভাগই দৈর্ঘ্যে ১ কিলোমিটারের কম এবং ১০০ মিটারের কম প্রস্থের হয়ে থাকে। আমরা যে ভূমিধস পর্যবেক্ষণ করেছি, তার সীমিত প্রভাব রয়েছে। এসব নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।
আরও পড়ুনচাঁদ আসলে কী২৮ ডিসেম্বর ২০২৪২০২৪ সালে নাসার গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁদ বেশ নীরবে একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোটি কোটি বছর ধরে চাঁদের আকারের কিছুটা সংকোচন হচ্ছে। ক্রমাগত সংকুচিত হওয়ার ফলে চ্যুতি তৈরি হয় বলে চাঁদে ভূমিকম্প হচ্ছে। ক্রমাগত সংকুচিত হওয়ার ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠে এরই মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
আরও পড়ুনপৃথিবী থেকে চাঁদের অন্য পাশ দেখা যায় না কেন০২ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।
বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।
সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।