নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জানালার কাচ ভাঙার অভিযোগে দুই শিশুকে লোহার ফটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত এক শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলার ডুমরাই সমজানপাড়া গ্রামের চাঁদপুর রফাতুল্লাহ সোনার উচ্চবিদ্যালয়ে শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ সোমবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক শিশুর বাবা। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাগাতিপাড়া থানা ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে যায়। একপর্যায়ে তাদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের জানালা একটি কাচের কিছু অংশ ভেঙে যায়। এ সময় বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী লতিফ সোনার (৪৫) ও তাঁর ভাতিজা হাবিল সোনার (২৮) তাদের আটক করেন। এরপর বিদ্যালয়ের লোহার ফটকের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। পরে তারা ওই দুই শিশুকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও চড়থাপ্পড় মেরে আহত করেন। শিশুদের চিৎকারে তাদের স্বজনদের পাশাপাশি এলাকার লোকজন এসে শিশুদের উদ্ধার করেন। পরে একজনকে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, তারা জানালাটি কাচের না প্লাস্টিকের, তা পরীক্ষার জন্য ঘুষি মারে। এতে কাচের কিছু অংশ ভেঙে যায়। এর জন্য নৈশপ্রহরী ও তাঁর ভাতিজা তাদের কিলঘুষির পাশাপাশি গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, তিনি এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ এখনো মামলা নেয়নি। তিনি এর বিচার চান।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আইয়ুব আলী বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। রোববার বিদ্যালয়ে এসে প্রহরীকে শিক্ষার্থীদের মারার কারণ জানতে চাইলে তিনি মারার ও বাধার অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুলিশ তদন্ত করছে। তারা যা ভালো মনে করে, তা–ই হবে।

অভিযুক্ত নৈশপ্রহরী লতিফ সোনার দুই শিশুশিক্ষার্থীকে আটক করার কথা স্বীকার করলেও বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, অনেক লোক জড়ো হয়েছিলেন। হয়তো অন্য কেউ তাদের বেঁধে রাখতে পারেন।

বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। কিছু ভুলত্রুটি রয়েছে। বাদীকে আসতে বলেছেন। এলেই মামলা নথিভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রহর

এছাড়াও পড়ুন:

এলাকার নামেই সিনেমা—আবেগে ভাসলেন পাইকগাছার মানুষ

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের দারুণ মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিনেমা ‘দেলুপি’র জমজমাট প্রিমিয়ার প্রদর্শনী। বুধবার বিকেলে শুরু হওয়া এই আয়োজনে স্কুলমাঠ যেন পরিণত হয় এক উৎসবে।

বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। সারা দেশে মুক্তি পাবে ১৪ নভেম্বর। প্রিমিয়ার প্রদর্শনী ঘিরে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল থেকেই মাঠে ভিড় করেন শত শত দর্শক। অনেকের হাতে সিনেমার পোস্টার, কেউ–বা পরিবার–বন্ধুদের সঙ্গে অপেক্ষায় পর্দা ওঠার। চারপাশে তখন উৎসবের আবহ, আনন্দের কোলাহল। সিনেমা শেষে দর্শকদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। নিজেদের জীবনের গল্প বড় পর্দায় দেখে অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

দেলুটি গ্রামের বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের এলাকার নামেই সিনেমা—এটা ভাবতেই গর্ব লাগে। গল্পটা এত বাস্তব, যেন আমাদের জীবনেরই কথা বলা হয়েছে।’ স্থানীয় ৫ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বদিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাঙন ছিল আমাদের জীবনের অংশ। সেই কষ্টই এ সিনেমায় উঠে এসেছে। “দেলুপি” শুধু আমাদের গল্প নয়, অন্য উপকূলের অনেক মানুষের গল্পও বটে। আশা করি এই সিনেমা আমাদের দুর্দশার কথা আরও দূরে পৌঁছে দেবে।’

বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার

সম্পর্কিত নিবন্ধ