জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতের মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আজ সোমবার সাক্ষীকে জেরায় এ কথা বলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। সাক্ষী আলী আহসান জুনায়েদ জবাব দেন, এ কথা সত্য নয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার ৪৮তম সাক্ষী ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে জেরা করেন আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি এই মামলার পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।

জেরায় আমির হোসেন বলেন, জুলাই আন্দোলনে যাঁরা ষড়যন্ত্রকারী, তাঁদের মধ্যে আপনি একজন। জবাবে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, এ কথা সত্য নয় যে জুলাই আন্দোলনে আমি একজন ষড়যন্ত্রকারী ছিলাম। আন্দোলনে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না।

মামলার আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি দোষ স্বীকার করে এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

জেরায় আমির হোসেন আরও প্রশ্ন করে বলেন, ফেসবুক প্রোফাইল লাল করা, মার্চ ফর জাস্টিস, রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ, ১ আগস্টকে ৩২ জুলাই হিসেবে গণনা করার সিদ্ধান্ত, ৩ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির ঘোষণা এবং মার্চ টু ঢাকাসহ আপনাদের সব কর্মসূচি ছিল আপনাদের দীর্ঘদিনের লালিত নীলনকশার ফলশ্রুতি ও অবৈধ। জবাবে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, এ কথা অসত্য।

আইনজীবী জেরায় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে গত বছরের ৩০ জুলাই শোক দিবস ঘোষণা ছিল একটি ভালো উদ্যোগ।

উত্তরে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, এ কথা সত্য নয়। বরং তা ছিল সরকারের নাটক।

আমির হোসেন বলেন, আপনারা (আন্দোলনকারী) ষড়যন্ত্র করে, টার্গেট করে করে উপরিউক্ত (জুলাই শহীদ) লোকদের হত্যা করেছেন।

এ কথা সত্য নয় বলে জবাব দেন আলী আহসান জুনায়েদ।

স্লোগান দিয়ে নিজেদের ছোট করা প্রসঙ্গ

সাক্ষী আলী আহসান জুনায়েদকে আইনজীবী আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, তাঁর জানা মতে, আন্দোলনকারীরা কেউ রাজাকারের সন্তান ও রাজাকারের নাতিপুতি না। আলী আহসান জুনায়েদ জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, যাঁরা আন্দোলন করেছেন তাঁরা কেউ রাজাকারের সন্তান বা নাতিপুতি ছিলেন না।’

এরপর আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা রাজাকারের বাচ্চা ও রাজাকারের নাতিপুতি কথাগুলো বলেননি। উত্তরে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, এ কথা সত্য নয়।

পরে আমির হোসেন বলেন, ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার/ কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’ স্লোগানের সঠিক অর্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়ে এই স্লোগান দিয়ে নিজেরাই নিজেদের ছোট করেছেন।

উত্তরে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, এই স্লোগান দিয়ে নিজেরাই নিজেদের ছোট করেননি। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের (আন্দোলনকারী) ব্যঙ্গ করে এই বক্তব্য (রাজাকারের বাচ্চা ও রাজাকারের নাতিপুতি) দেওয়ার প্রতিবাদে তাঁরা এই স্লোগান দিয়েছেন।

গোপালগঞ্জের কোটা সুবিধা

সাক্ষী আলী আহসান জুনায়েদকে আইনজীবী আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, গোপালগঞ্জের লোকেরা কোটার সুবিধা বেশি পেয়ে থাকেন বলে আপনি অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। আলী আহসান জুনায়েদ জবাব দেন, তিনি অসত্য বলেননি।

পরে আমির হোসেন বলেন, গোপালগঞ্জের লোকেরা কোটা সুবিধা বেশি ভোগ করেছেন যে বলছেন, এ কথার পক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারবেন?

আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, কোনো কাগজপত্র এই মুহূর্তে তাঁর কাছে নেই। তবে পত্রপত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়েছে।

গণহত্যা প্রসঙ্গ

সাক্ষী আলী আহসান জুনায়েদকে আইনজীবী আমির হোসেন প্রশ্ন করে বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার নির্দেশ দেননি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামাল। এ কথাও সত্য নয় বলে জবাব দেন আলী আহসান জুনায়েদ।

আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে কোনোরূপ গণহত্যা হয়নি। আলী আহসান জুনায়েদ জবাব দেন, এ কথা সত্য নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ছেলেকে ছাড়াতে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের প্রস্তাবও দেন শাহরুখ

বলিউড তারকা শাহরুখ খানের জীবনের সবচেয়ে কঠিন অধ্যায় ছিল ২০২১ সালের অক্টোবর মাস। তাঁর ছেলে আরিয়ান খানকে মুম্বাইয়ের সমুদ্রতটে ‘ড্রাগস-অন-ক্রুজ’ মামলায় গ্রেপ্তার করে এনসিবি। এ ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয় হইচই। ছেলেকে জামিনে মুক্ত করতে তখন শাহরুখ মরিয়া হয়ে ওঠেন। সম্প্রতি জানা গেছে, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগিকে রাজি করাতে শাহরুখ শুধু ফোনেই থেমে থাকেননি, তিনি রোহতগির স্ত্রীকেও অনুরোধ করেছিলেন। এমনকি তাঁকে আনার জন্য ব্যক্তিগত জেট ব্যবহারের প্রস্তাবও দেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের

স্ত্রীর কাছে শাহরুখের আবেদন
রিপাবলিক টিভির এক অনুষ্ঠানে মুকুল রোহতগি নিজেই স্মৃতিচারণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তখন যুক্তরাজ্যে ছুটিতে ছিলাম। হঠাৎ মিস্টার খানের ঘনিষ্ঠ একজন ফোন করে জানালেন, বোম্বে হাইকোর্টে আরিয়ানের মামলায় তিনি চান আমি লড়ি। আমি তখন ছুটি ছেড়ে আসতে চাইনি। পরে শাহরুখ নিজেই ফোন করলেন। একই কথা বললাম। তখন তিনি বললেন, “আমি কি আপনার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারি?”’
রোহতগি জানান, শাহরুখ তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘এটা ক্লায়েন্টের মামলা নয়, আমি একজন বাবা।’ এই আবেগঘন অনুরোধে আইনজীবীর স্ত্রী তাঁকে রাজি করান।

আরও পড়ুনজেলে সাড়ে তিন হাজার কয়েদির মধ্যে ছিলেন আরিয়ান২০ মার্চ ২০২৫শাহরুখ খান। এএফপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণ–অভ্যুত্থানে বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল না: নাহিদ ইসলাম
  • সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সালাহ উদ্দীন আহমাদ আর নেই
  • ৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন, পুরোনো নেতৃত্বেই আস্থা কাউন্সিলরদের
  • ঝালকাঠিতে আইনজীবীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পাশে পড়েছিল চিরকুট
  • ঝালকাঠিতে আইনজীবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, মিলল চিরকুট
  • ছেলেকে ছাড়াতে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের প্রস্তাবও দেন শাহরুখ