কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, সতর্কবার্তা পেলেন ৩২ জন
Published: 22nd, September 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩২ জনকে সতর্ক করা হয়েছে।
গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সোমবার শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক বি এম ইকরামুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একজনকে এক বছর ও চারজনকে ছয় মাস করে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ৩২ জনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের বিভাগ ও প্রত্যেককে অবহিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন এমএসসির শিক্ষার্থী সালিম সাদমান। আর ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ওমর বিন হোসাইন, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শান্ত ইসলাম, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো.
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পাঠানো চিঠির একটি কপি প্রথম আলোর হাতে এসেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে। ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি ২৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট এই তিন দিন এবং ২১ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন, অভিযোগনামা, ভিডিও ফুটেজ, কারণ দর্শানোর নোটিশ ও তার উত্তর যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে এবং সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করার জন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের ওই কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হয়, সিন্ডিকেট তা গ্রহণ করে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে আন্দোলনের মুখে ২৩ এপ্রিল সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
আন্দোলনের জের ধরে গত ২৬ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে ২২ মে তিনি সরে যান। ২৪ জুলাই বুয়েট যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. মাকসুদ হেলালীকে কুয়েট উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৬০ দিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে ২৯ জুলাই কুয়েটে আবার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুনকুয়েট শিক্ষক সমিতির আন্দোলন স্থগিত, ১৬০ দিন পর মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ক্লাস২৮ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য কম ট র র জন য ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুট: ৬ দপ্তর ও বেলার কাছে নথি চেয়েছে দুদক
সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে ছয়টি সরকারি দপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়ের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথকভাবে এসব চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যে দপ্তরগুলোর কাছে নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ থানা, খনিজ সম্পদ ব্যুরো ও খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বেলার সিলেট অফিস।
দুদক সূত্র জানায়, চিঠিগুলোয় যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ভোলাগঞ্জ এলাকায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) যেসব তদন্ত করেছে, তার সত্যায়িত কপি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিস্তারিত পরিচয়; কী পরিমাণ পাথর উত্তোলন বা আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং কতটা অবশিষ্ট রয়েছে, তার তথ্য; পাথর উত্তোলনের কারণে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির হিসাব; পাথর লুট নিয়ে বিএমডি থেকে দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম ও গ্রেপ্তারকৃতদের তালিকা এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ও দায়ী সরকারি–বেসরকারি ব্যক্তিদের নাম।
আরও পড়ুনপাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট, ঘটল কীভাবে ১৪ আগস্ট ২০২৫এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর দুদক জানিয়েছিল, ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। উপপরিচালক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অপরাধের মাত্রা ও সংশ্লিষ্টতার ধরন বিবেচনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।