পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) তৈরিতে সহায়তার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইপিডিএফ) নেতা সুইপ্রু মারমা ওরফে চিনু মারমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। পুলিশ বলছে, সুইপ্রু মারমা ইউপিডিএফের পরিচালক (প্রশাসন)।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি সুইপ্রু মারমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাহাড়তলী থানা–পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বৃহস্পতিবার সুইপ্রু মারমাকে গ্রেপ্তার করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা–পুলিশ। পরে তাঁকে পাহাড়তলী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হলে গতকাল সোমবার আদালত তা মঞ্জুর করেন। একই দিন এই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পাহাড়তলী থানা–পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাহাড়তলী থানার ওসি জসিম উদ্দিন আদালতে করা রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেন, নিষিদ্ধঘোষিত কুকি–চিন সদস্যদের ফান্ডের উৎসের নেপথ্যের কারিগরদের শনাক্তকরণ, মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও পলাতক আসামিদের শনাক্তে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

গত ২৭ মে রাতে পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। ২ জুন রাতে নগরের চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিরা অয়েল কম্পোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইংয়ের মালিক কর্মকর্তা হয়ে কেএনএফ পোশাক তৈরির জন্য বায়েজিদের রিংভো অ্যাপারেলস নামের একটি পোশাক কারখানা ও পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস ফেব্রিকস সরবরাহ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে।

এর আগে ২৬ মে রাতে নগরের অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি ইউনিফর্ম উদ্ধার করে পুলিশ। ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস থেকে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ।

পরে এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, ইউনিফর্মগুলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। দুই কোটি টাকার চুক্তিতে এগুলো প্রস্তুতের ফরমাশ নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। পুলিশ জানিয়েছে, সাহেদুল ইসলাম কারখানার মালিক। অন্য দুজন পোশাকগুলো তৈরির ফরমাশ এনেছিলেন।

ফেসবুকে পেজ খুলে দুই-তিন বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পাহাড়ের দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতিও করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ফর ম প হ ড়তল সশস ত র ক এনএফ ফ রন ট

এছাড়াও পড়ুন:

তড়িঘড়ির বিপিএলে আবারও বিপদের শঙ্কা

বেটিং এজেন্সিগুলোর হিসাবটা চমকে যাওয়ার মতো। ২০২৫ সালে সারা বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগগুলোতে যত সন্দেহজনক (ফ্ল্যাগড) ঘটনা ঘটেছে, তার ৯৬ শতাংশই ঘটেছে এ বছরের শুরুতে হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরে! বাজিকরদের কাছে এতটাই লোভনীয় আর সহজলভ্য হয়ে উঠেছে বিপিএল।

একের পর এক ফিক্সিংয়ের সন্দেহজনক ঘটনায় এ বছরের শুরুতে হওয়া সর্বশেষ বিপিএল দেশে–বিদেশে এতটাই বিতর্কিত হয়ে পড়েছিল যে সেসব ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হয়েছিল বিসিবিকে। গত আগস্টে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনও গত ২৮ অক্টোবর বিসিবির কাছে হস্তান্তর করেছে কমিটি। দুটি প্রতিবেদনেই গত বিপিএলের সন্দেহজনক ঘটনার ব্যাপকতার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।

বিসিবি প্রতিবেদনটি তুলে দিয়েছে তাদের দুর্নীতি দমন পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শালের হাতে, যিনি এসব ঘটনা নিয়ে অধিকতর তদন্ত করছেন। কিন্তু তদন্তপ্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ না করে এবং তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আগপর্যন্ত অভিযুক্তদের খেলা থেকে দূরে সরিয়ে না রেখেই আরেকটি বিপিএল আয়োজনে মাঠে নেমে পড়েছে আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বিসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদ।

বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তড়িঘড়ির বিপিএলে আবারও বিপদের শঙ্কা