চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীরা তাঁদের ১৫ দফা দাবি নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় ক্যাম্পাসে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছেন। এ সময় শিক্ষকেরা প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। আজ মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা মুনির চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষার্থীদের একজন সমন্বয়কারী প্রথম আলোকে বলেন, দিনভর আলোচনায় প্রশাসন তাঁদের দাবির একটি রোডম্যাপ তুলে ধরলেও তাতে অসংগতি রয়েছে। কোনো দাবি বাস্তবায়নে চার মাস, কোনোটা আবার চার বছর সময় নেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। ফলে তাঁরা রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে রাত আটটার দিকে শিক্ষকেরা প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ হন এবং শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের উল্লেখযোগ্য দাবির মধ্যে রয়েছে লেট ফি বাতিল, প্রয়োজনীয় ল্যাব স্থাপন, হলরুম থেকে ক্লাসরুম সরিয়ে নেওয়া, সব সেমিস্টারে ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার সুযোগ, পরিবহন আধুনিকায়ন, মেডিকেল সংস্কার।

প্রক্টর মোস্তফা মুনির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মেয়াদের সময়ের প্রয়োজন। কিছু দাবি বাস্তবায়নে কয়েক মাস লাগবে আবার কিছু দাবি বাস্তবায়নে আরও বেশি সময় প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ, বাইরে থেকে অছাত্ররা এসে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিচ্ছে। না হলে শিক্ষককে তালাবদ্ধ করার মতো ঘটনা ঘটতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

এর আগে গত রোববার থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ রাখা হয়। পরে কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে এবং এক দিনের মধ্যে সমাধানের জন্য রোডম্যাপ দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুনআইআইইউসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবর দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আইআইইউসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পাঁচ ঘণ্টা প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ ছিল। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন অনুষদের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে এক দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের সুপারিশমালা ও রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য বলা হয়। এ রোডম্যাপ দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস–পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আজ তাঁদের আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ছিল। গতকাল রোববার সকালে তাঁরা মূলত ১৫টি দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাঁদের আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো, লেট ফি বাতিল, প্রয়োজনীয় ল্যাব স্থাপন, হল রুম থেকে ক্লাসরুম সরিয়ে নেওয়া, সব সেমিস্টারে ইমপ্রুভমেন্টের সুযোগ দেওয়া, পরিবহনের আধুনিকায়ন করা ও মেডিকেল সংস্কার করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকালে তাঁদের আন্দোলন শুরু হয়। গতকাল শুধু ছাত্ররা এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলেও আজ ছাত্রীরাও আন্দোলনে শামিল হন। ছাত্র ও ছাত্রীরা পৃথকভাবে নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন। পরে শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি ভবনের সামনে জড়ো হন। সেখানে দাবিদাওয়ার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তাঁরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতেও দেননি কিংবা বেরোতেও দেননি। পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ১৫ প্রতিনিধি বাছাই করে আলোচনায় বসে। পরে সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠনের বিষয়টি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপ প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ক্লাস–পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা দেন।

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ কাশেম। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আইআইইউসির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবির সমাধানে ট্রেজারার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সব অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা মুনির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ৪ অক্টোবর সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হবে। যেসব শিক্ষার্থীর টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি বকেয়া রয়েছে, তাঁদের ফি পরিশোধ করার সর্বশেষ সময় ছিল ১০ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী তাঁদের বকেয়া ফি পরিশোধ করেননি। সে জন্য ২০ সেপ্টেম্বর তাঁদের ১০ দিন সময় বৃদ্ধি করে বেতন দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সঙ্গে ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়। মূলত এই ১০০ টাকা জরিমানাকে কেন্দ্র করে এ আন্দোলন শুরু হয়। এরপর একে একে ১৫টি দাবি উত্থাপন করেন। আন্দোলন চলাকালে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মিটিং করে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে দুই ধাপে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। আগামীকাল তা ঘোষণা করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইআইইউসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন