রংপুরে মাকে হত্যার দায়ে ছেলে জামিল মিয়াকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় ঘোষণা করেন।

জামিল মিয়া রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নাজিরদহ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, শাশুড়ির সঙ্গে মনোমালিন্যের জের ধরে বাবার বাড়িতে চলে যায় জামিল মিয়ার স্ত্রী কাকলী খাতুন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে জামিল। ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট রাতে খাবার শেষে জামিল ও তার মা একই ঘরে পৃথক খাটে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ১টার দিকে জামিল ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের মুখে বালিশ চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মায়ের লাশ ঘরের মেঝেতে ঘাটের নিচে গর্ত করে পুঁতে রাখে। কয়েকদিন জামিলার খোঁজ না পেয়ে প্রতিবেশীরা জামিলের কাছে জানতে চাইলে সে এড়িয়ে যায়। পরে ২৪ আগস্ট জামিলের মামাতো বোন রেজিনা ও প্রতিবেশীরা ঘরে খোঁজ করতে গিয়ে খাটের নিচে মাটি উঁচু দেখে সন্দেহ করেন। কোদাল দিয়ে খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে জামিলার হাত। এরপর গ্রামবাসী জামিলকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে।

পরে নিহতের ভাই মো.

ছামসুল হক বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিন বছর ধরে চলা মামলায় ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আফতাব উদ্দিন। আসামি পক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী ছিলেন শামীম আল মামুন।

রংপুর কোর্টের ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম বলেছেন, মাকে হত্যার দায়ে জামিল নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পিপি মো. আফতাব উদ্দিন বলেছেন, “মাকে হত্যা করেছে নিজের সন্তান। এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক একটি ঘটনা। আদালতের এই রায়ের মাধ্যমে নিহতের পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে এবং দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে।”

ঢাকা/আমিরুল/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ সুরমায় বিএনপির গণসমাবেশ, কাইয়ুম চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার চণ্ডীপুল এলাকায় গণসমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি। সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীকে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান নেতা–কর্মীরা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার এবং ধানের শীষ প্রতীকের জনসম্পৃক্ততা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

কর্মসূচিতে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল কর্মী-সমর্থক অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীকে সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে যুবদলে এবং এখন বিএনপির রাজনীতি করছেন কাইয়ুম চৌধুরী। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি অসংখ্য মামলা ও দমন-পীড়নের শিকার হয়েও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত বছরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি আহত হন। তাঁর মতো পরীক্ষিত রাজনীতিবিদকে তৃণমূলের কর্মীরা দলের প্রার্থী হিসেবে চান।

সমাবেশে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘জনগণকে ভয় দেখিয়ে বা কৌশলের আশ্রয়ে রাজনীতি করতে চায়, এমন শক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যারা ছলচাতুরির মাধ্যমে জনগণকে ঠকাতে চায়, তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় আমরা ভেঙে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আন্দোলনের ও মাঠের কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি, যদি দল আমাকে আগামী নির্বাচনে এ অঞ্চল থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে, তাহলে সিলেট–৩ আসনের সকল নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে আমার পক্ষে কাজ করবেন।’ পরে তিনি উপস্থিত নেতা–কর্মীদের ধানের শীষের পক্ষে থাকার শপথ পাঠ করান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি বদরুল ইসলাম জয়দু। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা জিল্লুর রহমান সুয়েব, নিজাম উদ্দিন তরফদার, নুরুল আমিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহমদ পাটোয়ারী, মামুনুর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান সুফি চৌধুরী প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ