জামালপুরের নরুন্দিতে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ
Published: 28th, October 2025 GMT
জামালপুরের নরুন্দি রেলওয়ে স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে জামালপুর–ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।
আন্দোলনকারীরা স্টেশনে ব্যানার–ফেস্টুন হাতে নিয়ে দাবি জানাতে থাকেন। তাঁদের দাবির মধ্যে ছিল আন্তনগর তিস্তা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্দোলনকারীরা যাত্রাবিরতির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী একটি কমিউটার ট্রেন স্টেশনে পৌঁছালে আন্দোলনকারীরা সেটি থামিয়ে দেন। প্রায় ২০ মিনিট পর ট্রেনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসে আন্তনগর তিস্তা এক্সপ্রেস। নরুন্দি স্টেশনে ট্রেনটির নির্ধারিত যাত্রাবিরতি না থাকলেও আন্দোলনকারীরা রেললাইনে অবস্থান নেওয়ায় ট্রেনটি থামতে বাধ্য হয়। ট্রেন আটকে রেখে কেউ ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠে, কেউ লাইনের সামনে আবার কেউ প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন। পরে স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আলোচনা হয়। যাত্রাবিরতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলে বেলা দেড়টার দিকে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হয়।
নরুন্দি সৈয়দা নাজিবা আক্তার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এ টি এম খলিলুর রহমান বলেন, সর্বস্তরের জনগণ এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছে। সবার দাবি একটাই—এই স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, নরুন্দি স্টেশনটি সদর উপজেলা মধ্যে। হাজারো মানুষ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রা করেন। সড়কপথে ভালো যানবাহন না থাকা ও যানজটের কারণে ভোগান্তি হয়। বিকল্প হিসেবে রেলপথ ব্যবহার করা যায়। নরুন্দি স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি দিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারও রাজস্ব পাবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আশপাশের মানুষের প্রাণের দাবি, আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি। বহু বছর ধরে কয়েক দফা এ দাবি নিয়ে মানুষ অবরোধ ও মানববন্ধন করেছেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। অতিদ্রুত এখানে ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করা হোক।
নরুন্দি রেলস্টেশন মাস্টার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র লপথ
এছাড়াও পড়ুন:
আত্রাইয়ে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ‘চিলাহাটী এক্সপ্রেস’ থামিয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে আজ রোববার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ কর্মসূচির একপর্যায়ে লাল কাপড় দেখিয়ে ঢাকামুখী আন্তনগর ‘চিলাহাটী এক্সপ্রেস’ ট্রেন থামানো হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর ট্রেনটি ছেড়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
সকাল ১০টা থেকে আত্রাই উপজেলাবাসীর ব্যানারে আহসানগঞ্জ প্ল্যাটফর্মে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি শুরু হয়। একপর্যায়ে নীলফামারী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চিলাহাটী এক্সপ্রেস সেখানে পৌঁছালে দুপুর ১২টার দিকে ট্রেনটি থামান আন্দোলনকারীরা। পরে আন্দোলনকারীরা রেলপথ ছেড়ে দিলে বেলা একটার দিকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নওগাঁর আত্রাই ও রানীনগর, রাজশাহীর বাগমারা এবং নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাসিন্দারা সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথে যাতায়াত করেন। আহসানগঞ্জ স্টেশনের ওপর দিয়ে ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। অথচ জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে মাত্র দুটি (দ্রুতযান ও নীলসাগর এক্সপ্রেস) আন্তনগর ট্রেন থামে। অথচ পার্শ্ববর্তী সান্তাহার ও নাটোর স্টেশনের রাজস্ব আদায়ের চেয়ে আহসানগঞ্জ স্টেশনের রাজস্ব আদায় অনেক বেশি। তাঁদের দাবি, এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে এই স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিতে হবে। এতে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি সরকারেরও আয় হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই ও রানীনগর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও নওগাঁ জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য খবিরুল ইসলাম, আত্রাই নতুন বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ভোঁপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি ওবায়দুল্যা প্রমুখ।
মানববন্ধনে জামায়াত নেতা খবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আজকে আন্দোলন করে চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়েছি। শুধু চিলাহাটী এক্সপ্রেস নয়, আমরা চাই আহসানগঞ্জ স্টেশনের ওপর দিয়ে যাওয়া সব আন্তনগর ট্রেনে চলাচলের সুবিধা যেন এই এলাকার মানুষ পায়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাই, দ্রুত আহসানগঞ্জ স্টেশনে সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও টিকিট প্রাপ্তির ঘোষণা দিতে হবে। এ ছাড়া ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী আহসানগঞ্জ স্টেশনের সংস্কারের দাবিও জানাচ্ছি। এসব জনদাবি শিগগির পূরণ না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
আত্রাই নতুন বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ বলেন, আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটি আত্রাই উপজেলাবাসীর জন্য যোগাযোগের লাইফলাইন। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটি আজ অবহেলিত। ঢাকাগামী অধিকাংশ আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি না থাকায় যাত্রীদের প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এই স্টেশনে সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ঘোষণার দাবি জানান তিনি।