তামিম ইকবাল অধ্যায়ের অবসান তো হলো। এবার কি তবে সাকিব আল হাসান? অবস্থাদৃষ্টে সেটাই মনে হচ্ছে। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে জটিলতায় আগামীকাল ঘোষণা হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ১৫ জনের দলে তাঁর না থাকাটা একরকম নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে প্রশ্নটা আসেই—তামিমের মতো সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও কি এখানেই শেষ?

কাল রাত পর্যন্ত যা খবর, সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা নিয়ে কোনো ইতিবাচক খবর পায়নি বিসিবি। এটাও বোঝা যাচ্ছে যে দল ঘোষণার আগে সেরকম কোনো খবর আসার সম্ভাবনাও নেই। এদিকে বিসিবি মনে করে না যে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে খেলার মতো অবস্থায় আছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে তাই সাকিব থাকছেন না বলে নিশ্চিত করেছে বিসিবির একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র।

তাতে অবশ্য অকূল পাথারে পড়ে যাচ্ছে না গাজী আশরাফ হোসেনের নির্বাচক কমিটি। কারণ, এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা শুরু থেকে কমই ছিল। নির্বাচকেরা তাই অনেকটা সেভাবেই দল গুছিয়ে রেখেছেন। সাকিব, তামিম খেললে তখন তাতে কাটছাঁটের প্রশ্ন আসত। তবে হ্যাঁ, ওপেনিংয়ে তামিমের অভিজ্ঞতা আর অলরাউন্ডার সাকিবের একের ভেতর দুই সত্তাকে তো মিস করবেই বাংলাদেশ।

সমারসেট–সারে ম্যাচে বোলিং করছেন সাকিব। এই ম্যাচেই প্রশ্ন উঠেছে তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পুরনো মামলার নথির জন্য যেতে হবে না দিনাজপুর

পঞ্চগড় জেলা ঘোষণার আগে এখানে মুনসেফ আদালত ছিল। এই আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি জমা পড়তো দিনাজপুরের আদালতের মহাফেজখানায়। জেলা ভাগের পর সব কিছুই পৃথক হলেও নথিগুলো রয়ে যায় সেখানেই। এসব নথির প্রয়োজন হলে পঞ্চগড়ের মানুষকে ছুটতে হয় দিনাজপুরে, পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তবে, এখন থেকে এসব নথি মিলবে পঞ্চগড়েই। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় আদালত চত্বরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

সম্প্রতি পঞ্চগড় মুনসেফ আদালতে বিভিন্ন সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া প্রথম শ্রেণির মামলার ১৭৯৭টি নথি দিনাজপুর আদালতের মহাফেজ খানা থেকে পঞ্চগড়ে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা: ১ জনের যাবজ্জীবন

শিশু নাবিলা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বিএম তারিকুল কবির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী, নুরুজ্জামান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মার্জিয়া খাতুন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান, সহকারি জজ মাহমুদা খাতুন, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, সাবেক পিপি আমিনুর রহমান প্রমুখ।

জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই পুরো পঞ্চগড় ছিল বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অংশ। ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগের আগে পর্যন্ত সব কিছুই ছিল দিনাজপুরের অধীনে। ফলে দেশ ভাগ থেকে জেলা ভাগ পর্যন্ত- এই দীর্ঘ সময়ের আদালত কেন্দ্রিক সব নথি রয়ে যায় দিনাজপুরেই। এসব নথির প্রয়োজন হলে বিরম্বনা বাড়ে সেবাগ্রহীতাদের। ছুটতে হয় দিনাজপুরে। এতে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি হতে হয় হয়রানি। তবে, এখন থেকে ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি সেবাগ্রহীতাদের অর্থ ও সময় বাঁচবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, “বিভিন্ন সময় এই নথিগুলোর প্রয়োজন হয়। সাধারণ মানুষ এসব নথি উত্তোলনের জন্য এতদিন দিনাজপুর যেতেন। এতে তাদের হয়রানি হতে হতো। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হতো। এখন থেকে ভোগান্তি কমবে। সময় ও অর্থ- দুটাই বাঁচবে। এসব নথি পঞ্চগড়ের মহাফেজ খানায় সংরক্ষিত আছে- বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।”

গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী বলেন, “১৯৮৪ সালে জেলা ভাগ হলে পঞ্চগড়ে স্বতন্ত্রভাবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই এতদিন এখানকার মহাফেজ খানায় ১৯৮৪ সালের পরবর্তী সময়কার নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি সংরক্ষিত ছিল। এখন দিনাজপুর থেকে আগের নথিগুলো নিয়ে আসায় ১৯৪৮ সাল থেকে বর্তমান সময়ের তথা গত ৭৭ বছরের সব নথিই পাওয়া যাবে।”

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক বলেন, “মামলা পরিচালনার সময় তৎকালীন সময়কার রায় এবং ডিক্রির নকল প্রয়োজন হয়। এজন্য সাধারণ মানুষ আদালতের কাছে সময় চায় এবং দিনাজপুরে গিয়ে নকলের আবেদন করে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময়েও নকল আনতে পারে না। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ভোগান্তি পোহান, তেমনি মামলা নিরসনে আদালতেরও সময় ক্ষেপণ হয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা উদ্যোগ নিয়ে নথিগুলো এখানে নিয়ে এসেছি।” 

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ