ছাত্রী হেনস্থা: অভিযুক্ত আসিফকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 6th, March 2025 GMT
ছাত্রী হেনস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার অভিযুক্ত মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঘটনার তদন্তে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
নারী উত্ত্যক্তকারীর জামিন: আইন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আরও রয়েছেন- সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান। তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, “তদন্ত কমিটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করবে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্তসহ সবার সঙ্গে কথা বলবে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে যা যা করার, তা করবে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অভিযুক্তের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত চাকরিতে থাকতে পারবে না।”
এদিকে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা যাবতীয় ঘটনার বিশ্লেষণ করা শুরু করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ খানকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
তিনি জানান, ফেসবুকে ছড়িয়েছে যে, ঢাবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হেনস্তা করার ঘটনায় ওই নারী শিক্ষার্থীর করা মামলা প্রত্যাহার করতে তাকে অনুরোধ বা চাপ প্রয়োগ করেছেন। এ তথ্যটি ভুল, অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছড়ানো হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডি বুধবার থেকে শিক্ষার্থীর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে হেনস্তাকারীকে তাৎক্ষণিক থানায় প্রেরণ করেছে এবং মামলা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।