গোলাকার পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশের ঠিক মাঝবরাবর যে রেখা পূর্ব–পশ্চিমে সমগ্র পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে, তাকে নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা বলে। নিরক্ষরেখা পৃথিবীকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। আর এই নিরক্ষরেখাকে কেন্দ্র করে বেশ মজার একটি ঘটনা ঘটে থাকে। হারিকেন প্রচণ্ড গতিতে সামনে–পেছনে এগিয়ে নিরক্ষরেখার কাছাকাছি গেলেও কখনোই তা অতিক্রম করে না।

হারিকেন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পানি থেকে তাপ চুষে নিয়ে শক্তিশালী আকার ধারণ করে। হারিকেন উষ্ণ, আর্দ্র বায়ুর মাধ্যমে চালিত একটি বিশাল ঘূর্ণমান টারবাইনের মতো। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক এলাকায় এই প্রাকৃতিক ঘটনা তৈরি হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, যেখানে পানির তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে। অদ্ভুতভাবে দেখা যায়, হারিকেন খুব কমই নিরক্ষরেখার কাছে যায় আর তা কখনোই অতিক্রম করে না।
হারিকেনমুক্ত নিরক্ষীয় অঞ্চলের পেছনে রয়েছে কোরিওলিস প্রভাব। এই শক্তি আমাদের বায়ুমণ্ডলের ওপরে প্রভাব তৈরি করে। পৃথিবী মেরুর তুলনায় নিরক্ষরেখায় দ্রুত ঘোরে। দ্রুত ঘোরার কারণে বায়ুপ্রবাহ ও ঝড় উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট-লোওয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ম্যাথিউ বারলো জানিয়েছেন, দূরত্ব হিসেবে নিরক্ষরেখা থেকে সবচেয়ে কাছের হারিকেন প্রায় ১০০ মাইল দূরে সংগঠিত হতে দেখা যায়। সাধারণত বায়ুপ্রবাহের কারণে এরা নিরক্ষরেখা থেকে দূরে সরে যায়। আমরা হারিকেন নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা অতিক্রম করতে দেখি না। এই রেখা অতিক্রম করতে হলে এদের ঘূর্ণন বন্ধ করে বিপরীত দিকে যেতে হবে। আর তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যদিকে ঘুরতে হবে তখন। যদি কখনো হারিকেনের পক্ষে এই রেখা কাটানোর সুযোগ হয় তখন তাকে অনেক শক্তিধর হতে হবে। কোরিওলিস বলের বিপরীতে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে তখন। তাত্ত্বিকভাবে এই বিষয়টি সম্ভব হলেও বাস্তবে বেশ অসম্ভব বলা যায়। বাস্তবে এমনটা কখনো দেখা যায়নি।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ৩

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ৯ জুনের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলার পর সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীর বাড়ি মনোহরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি লাকসামের ফতেহপুর এলাকার একটি কারখানায় চাকরি করেন। গ্রেপ্তার তিনজন হলো– লাকসাম উপজেলার বড়তোপা গ্রামের মো. সাগর (২৬), লাকসাম পৌর এলাকার পেয়ারাপুর এলাকার এনায়েতুর রহমান সাক্কু (১৯) ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চর-কাউনা গ্রামের স্বপন মিয়া (২১)। মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই তরুণীর সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ৮ জুন কথিত প্রেমিককে খুঁজতে লাকসাম বাজারে যান তিনি। সেখানে অটোরিকশাচালক সাক্কুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সাক্কু তাঁকে লাকসাম শহরে তাঁর প্রেমিককে খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। খোঁজাখুঁজির পর না পেলে রাত ১০টার দিকে লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিণ পাশে প্ল্যাটফর্মে গিয়ে বসেন তরুণী। তখন রেলস্টেশনের কিছু বখাটে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এ সময় সাক্কু তাঁকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়। এর পর বখাটেরা দু’জনকে পরদিন ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত স্টেশনে বসিয়ে রাখে। এর মধ্যে সাক্কু ওই তরুণীকে স্ত্রী নয় বলে বখাটেদের হাতে তুলে দিতে চায়। এক পর্যায়ে বখাটেদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁকে লাকসাম রেলস্টেশন থেকে মারতে মারতে রেললাইনের পূর্ব পাশের পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সাক্কুর সহায়তায় খোরশেদ, সাগর ও স্বপন নামের তিন বখাটে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে।

লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামাতো ভাই বাদী হয়ে সোমবার রাতে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এর পর অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং আদালতে জবানবন্দি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। অপর আসামি খোরশেদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ