ব্যান্ডউইথ সরবরাহ সেকেন্ডে ৪ টেরাবাইটের মাইলফলক ছুঁয়েছে বিএসসিপিএলসি
Published: 2nd, August 2025 GMT
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল (বিএসসিপিএলসি) কোম্পানির আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ সরবরাহ সেকেন্ডে ৪ টেরাবাইটে পৌঁছেছে। চলতি আগস্ট মাসে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি এ মাইলফলক ছুঁয়েছে।
আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে দেশে বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়া স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবায় ২০০ জিবি ব্যান্ডউইথ সরবরাহের পর ১ আগস্ট ৪ টেরাবাইট হয়েছে। এর আগে গত ২৮ এপ্রিলে তা ৩ টেরাবাইট ছিল। তিন মাসে বিএসসিপিএলসি ১ টেরাবাইট সরবরাহ বাড়িয়েছে।
সরকার আরও জানিয়েছে, এপ্রিলের আগের ৮ মাসে ব্যবহার ১ দশমিক ১০ টেরাবাইট বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর আগে আওয়ামী লীগ আমলে এ প্রতিষ্ঠানের ৬৫ শতাংশের বেশি সক্ষমতা অব্যবহৃত ফেলে রাখা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে এক বছরে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যান্ডউইথ প্রবৃদ্ধি ১২০ শতাংশের বেশি।
বিএসসিপিএলসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল) ও সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যান্ডউইথ সরবরাহ ৫০ শতাংশ করে বেঁধে দেয়। যার প্রভাবের পাশাপাশি স্টারলিংকের ব্যান্ডউইথও যুক্ত হয়েছে। স্টারলিংক সাবমেরিন কোম্পানির কাছে চাহিদা দিয়ে রেখেছিল, যা গতকাল শুক্রবার, ১ আগস্ট কার্যকর হয়েছে। এর ফলে কোম্পানির সরবরাহও বেড়েছে।
সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নীতিগত সহায়তা, মূল্যছাড় এবং কোম্পানির চেষ্টায় বিএসসিপিএলসি শেয়ার বাড়ায় রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে।
সরকার বিদ্যমান সি-মি-উই-৪, সি-মি-উই-৫–এর পাশাপাশি সি-মি-উই-৬–এর সংশোধিত রুটের জন্য চুক্তি করেছে। প্রস্তাবটি সর্বশেষ একনেক সভায় পাস হয়েছে। এতে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিতে আরও ১৭ টেরাবাইট নতুন সক্ষমতা যুক্ত হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
দুর্গাপূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। আজ বুধবার দেশের ছয়টি প্রতিষ্ঠান ১২ দশমিক ৫০ ডলার কেজিতে এই ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা।
অথচ এদিন যশোর শহরের মাছের আড়তে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আকারের প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকায় পাইকারি বেচা–কেনা হয়েছে। খুচরা বাজারে সেই ইলিশ কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দরে ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে; অর্থাৎ দেশের খুচরা বাজারের দামের চেয়ে কম দামে ইলিশ ভারতে রপ্তানি হচ্ছে।
দেশের চেয়ে কম দামে ইলিশ মাছ রপ্তানি কীভাবে সম্ভব হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে রপ্তানিকারকদের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্ট জুয়েল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রপ্তানিকারকেরা ইলিশের জাহাজ থেকে সরাসরি মাছ কেনেন। ছোট–বড় মিলিয়ে যখন কেনেন, তখন একটু কম দামে তাঁরা কিনতে পারেন। এ কারণে তাঁদের পুষিয়ে যায়। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার জানা নেই।’
যশোর শহরের বড় বাজারের মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ মাছের সরবরাহ কম। যে কারণে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ইলিশ বিক্রেতা লিয়াকত আলী বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ মাছের দাম বাড়তি। বাজারে সরবরাহ কম। যে কারণে এ বছর ইলিশ মাছের দাম কমার সম্ভাবনা আর দেখছি না।’
যশোর বড় বাজার মৎস্যজীবী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ পিয়ার মোহাম্মদ জানান, আজ যশোরের বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা কেজি দরে পাইকারি কেনাবেচা হয়েছে। আর কেজি আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ৩ হাজার টাকার ওপরে বেচাকেনা হয়েছে। ভারতের রপ্তানির কারণে স্থানীয় বাজারে এখন ইলিশ মাছ সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে, যে কারণে দাম বেশি। অথচ গত বছর এই সময়ে কেজি আকারের ইলিশ মাছের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। এবার প্রায় দ্বিগুণ দামে সেই ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরকার ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আজ থেকে ইলিশ মাছ রপ্তানি শুরু হলো। গত বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি ছিল ২ হাজার ৪২০ টন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ টন। এবারও অনুমোদনকৃত ইলিশ রপ্তানির কোটা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।
জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ফিশারিজ কোয়ারেন্টিন সজীব সাহা বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ইলিশ রপ্তানির প্রথম চালানে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ১২ দশমিক ৫০ ডলার মূল্যে ৩৭ দশমিক ৪৬০ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছে। রপ্তানি করা ইলিশের একটি বাক্স খুলে দেখা গেছে, ৩৮টি ইলিশ মাছের ওজন ২১ কেজি; অর্থাৎ প্রতিটি ইলিশের ওজন ছিল ৫৫০ গ্রাম। এ ছাড়া ৭০০ থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছও রপ্তানি হয়েছে। ৫৫০ গ্রাম থেকে ৮৫০ গ্রাম আকারের মধ্যে ইলিশ মাছ রপ্তানি হচ্ছে।
পদ্মার রুপালি ইলিশ স্বাদ আর গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় দুই বাংলায় এ মাছ বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় অতিথি আপ্যায়নে খাবারের প্রধান তালিকায় ইলিশ রাখেন কলকাতার বাঙালিরা। আগে ইলিশ সাধারণ রপ্তানি পণ্যের তালিকায় উন্মুক্ত থাকলেও উৎপাদন সংকট দেখিয়ে ২০১২ সালে দেশের বাইরে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। তবে ২০১৯ সাল থেকে বিশেষ বিবেচনায় কেবল দুর্গাপূজা উপলক্ষে আবারও ইলিশ রপ্তানির সুযোগ দেয় সরকার।
আরও পড়ুনদুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি: মৎস্য উপদেষ্টা২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪