নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ
Published: 2nd, August 2025 GMT
জাতীয় সংসদে নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নারী অধিকারকর্মীরা। কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তাঁরা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোনো সুপারিশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গ্রহণ করেনি। নারী অধিকারকর্মীদের দেওয়া প্রস্তাবও উপেক্ষা করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নারী অধিকারের বিষয়টি সবচেয়ে কম গুরুত্ব পেয়েছে।
‘নারীকে বাদ দিয়ে নারীর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নারী অধিকারকর্মীরা এ কথাগুলো বলেন। আজ শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘গণসাক্ষরতা অভিযান ও সকল সহযোগী সংগঠন’–এর ব্যানারে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, নারী অধিকারকর্মী ও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা বাড়িয়ে সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচন করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন এই সুপারিশ গ্রহণ করেনি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী নারী হলেও ঐকমত্য কমিশনে নারীর কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। কমিশন নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। তারা শুধু রাজনৈতিক দলের কথায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সংসদে নারীদের জন্য আসন বাড়িয়ে ১০০ করে সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিল নারীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সংসদের আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে ৩০০টি আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিল। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর গত বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশন জানায়, বেশির ভাগ দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (আপত্তি) জানিয়েছে। তাই সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা ৫০ রাখা এবং তাতে নারী সদস্যদের মনোনীত করার আগের পদ্ধতি বহাল রাখে কমিশন।
সভায় সূচনা বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে নারী প্রতিনিধি কোথায়? ঐকমত্য কমিশনে যাঁরা আছেন, তাঁরা কি নারীবিদ্বেষী ধরে নেব? তাঁরা নারীর পক্ষে কাজ করবেন, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করবেন, সেটা ভেবে সহ্য করেছি। ধৈর্য ধরে দেখতে চেয়েছি কী সিদ্ধান্ত আসে। তাঁরা আমাদের শুধু হতাশই করেননি, আমরা একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৫১ শতাংশ নারী। আমরা কথা বলব। আমাদের, নারীদের কথা শুনতে হবে।’
সভায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক। কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ জমা দেওয়ার পর এ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও কমিশনের সদস্যদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন তিনি। বলেন, তাঁরা আলোচনা–সমালোচনা, তর্ক–বিতর্ককে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কারণ, বাক্স্বাধীনতা সবার আছে। তাই বলে গালিগালাজ করার স্বাধীনতা কারও নেই।
শিরীন পারভিন হক বলেন, জাতীয় সংসদে এখন সমান হিস্যা চাওয়ার সময় এসেছে। এক–তৃতীয়াংশ আসন দিয়ে আর হবে না। আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করে অন্তত পরবর্তী দুই মেয়াদে নারীদের জন্য ৩০০ সংরক্ষিত আসন রেখে সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
গত এপ্রিলে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় উল্লেখ করে সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহীন সুলতান বলেন, তখন তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছিলেন, সুপারিশগুলো আমলে নেওয়ার জন্য ঐকমত্য কমিশনকে পাঠাবেন। পরে শোনা গেল, ঐকমত্য কমিশনের টার্মস অব রেফারেন্স (কাজের পরিধি বা টর) নির্ধারিত। ওই টরের মধ্যে তাঁরা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নারী অধিকার বিষয়টি সবচেয়ে কম গুরুত্ব পেয়েছে। ভোটার হিসেবে নারীদের মূল্যায়ন করা হয়নি।
ঐকমত্য কমিশন যেসব দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে, সেসব দল নারীর প্রতিনিধিত্ব করে কি না, সে প্রশ্ন তোলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন–এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। তিনি বলেন, ‘অনেক দলকে আমরা চিনি না। তারা কাদের প্রতিনিধিত্ব করে, তা আমরা জানি না। তবে এটা জানি যে তারা অন্তত নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এত ভালো ভালো সুপারিশ করেছিল নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, কিন্তু সেসব সুপারিশ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে। তাহলে কি তাঁর কথার মূল্য নেই?’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, দেশে এখন নারীবিরোধী ‘জাগরণ’ দেখা যাচ্ছে। নারীর পোশাক নিয়ে কথা হয়। ‘মব সন্ত্রাসে’র (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণ) মাধ্যমে নারীকে অপদস্থ করা হয়। নারী আসন নিয়ে নারীদের সুপারিশই মানা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় নারীরা ঐকমত্য কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরে নারীবিরোধী যে অবস্থানকে লালন করা হচ্ছে, সেটা বন্ধ করতে হবে।’
সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানান বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন বন্দোবস্তের দায়িত্ব যাঁরা নিয়েছিলেন, তাঁদের চিন্তাচেতনা ও মানসপটে নারী অনুপস্থিত।
নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশি কবীর বলেন, সরকার কমিশনগুলো গঠন করেছে অলংকার হিসেবে। ঐকমত্য কমিশন যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে, তাদের কারা নির্বাচিত করেছে ও তাদের আদর্শ কী, সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, পরিবর্তনের জন্য সবাই জুলাইয়ে পথে নেমেছিল। মুষ্টিমেয় চলে এসেছে সামনে। বাকিরা সংগঠিত হয়নি। তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি মঞ্চের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে যেতে হবে।
নারীপক্ষ-এর সভানেত্রী গীতা দাস বলেন, যেটুকু সামনে এগিয়েছিল নারী, তা থেকে শতভাগ পেছনে নিয়ে যাচ্ছে ঐকমত্য কমিশন। নারীদের বাদ দিয়ে সংস্কার হলে আগামী নির্বাচনে নারীরা ভোট দেবেন না।
ঐকমত্য কমিশনের কাছে কিছু দাবি সভায় তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। দাবিগুলো দু-এক দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌসী সুলতানা, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোর্মি, সিএসও অ্যালায়েন্সের প্রতিনিধি সাঈদ আহমেদ, ক্যাথলিক এডুকেশন বোর্ডের সেক্রেটারি জ্যোতি এফ গমেজ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক নাসরিন বেগম, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ‘জুলাই কন্যা’ শাহ্জাদী ফানান্না, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের শিক্ষার্থী ‘জুলাই কন্যা’ সামান্তা করিম ও গৃহশ্রমিক কোহিনূর আক্তার। স্বাগত বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক তপন কুমার দাশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স রক ষ ত উপদ ষ ট র চ লক র জন য সদস য আসন ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ চূড়ান্ত হচ্ছে, আইনি ভিত্তি নিয়ে কী ভাবছে দলগুলো
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এখন ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ চূড়ান্ত করার জন্য কাজ করছে কমিশন। তবে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া এবং বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ধাপের আলোচনায় যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো ইতিমধ্যে লিখিত আকারে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপেরগুলোও শিগগিরই পাঠানো হবে। দলগুলোর পরামর্শ বা সংশোধনী নিয়ে সেগুলো সমন্বয় করে জুলাই সনদ খুব দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে। এরপর সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর সই নেওয়া হবে।
এরপর জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সেটা নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এ বিষয়ে আগামীকাল রোববার ঐকমত্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানা গেছে।
ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হবে। এরপর তা দলগুলোকে দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশন দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছে। এ ক্ষেত্রে কমিশন অনুঘটকের দায়িত্ব পালন করবে। এর বাইরেও যতটুকু প্রয়োজন, সবাইকে সমন্বিত করে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। তার আগে জাতীয় সনদকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া দরকার। আগামী কয়েক দিন কমিশন সে কাজ করবে। তারপর বাস্তবায়নের পথ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে।
দলগুলোর প্রতিক্রিয়া‘জুলাই জাতীয় সনদ’ খুব দ্রুতই হবে বলে আশাবাদী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি যখনই চূড়ান্ত হয়ে আমাদের কাছে আসবে, আমরা স্বাক্ষর করব। এই সনদ যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই জন্য আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের এক কর্মসূচিতেও জুলাই সনদ নিয়ে কথা বলেন। জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই সনদে যেসব সুপারিশ থাকবে, সেগুলো দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বলে সব রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান, আইন ও বিধিবিধানের যেসব সংশোধনী প্রয়োজন হবে, সেগুলো আমরা করব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনা এবং তাতে সব ঘরানার দলের উপস্থিতিকে খুবই ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তবে তিনি মনে করেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কী হবে, এর বাস্তবায়ন কীভাবে ও কখন হবে, এ বিষয়ে বিরাট ফাঁক রয়ে গেছে। এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের অসহায়ত্ব প্রকাশ পুরো প্রক্রিয়াকে ব্যর্থ করে দেবে। কারণ, শুধু পরামর্শের জন্য এত আলোচনার দরকার ছিল না।
জামায়াতের পক্ষ থেকে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নেওয়া এই নেতা প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া যায়। এটি লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, অধ্যাদেশ, গণভোট বা ফরমান জারির মাধ্যমে হতে পারে। এই সংস্কারের মাধ্যমেই আগামী নির্বাচন হওয়া দরকার, এটাই আমাদের দাবি।’
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (আইনগত কাঠামো আদেশ), গণপরিষদ নির্বাচন অথবা গণভোট—যেকোনো পদ্ধতিতে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। কোন পদ্ধতিতে সেটি হবে, সেটা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপি বলছে, তারা এটাকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছে, সাংবিধানিক স্বীকৃতি নয়। অর্থাৎ, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তারা দিতে চাচ্ছে না। আইনি ভিত্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব কি না, সেটা পুনর্বিবেচনা করব।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষে জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে গতকাল শুক্রবার পর্যালোচনা বৈঠক করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনূছ আহমাদের সভাপতিত্বে বৈঠকে সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) বিষয়টি ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার এজেন্ডায় না রাখায় নিন্দা জানানো হয়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত কমিশনগুলোর মধ্যে ছয়টি কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। প্রথম পর্বে (২০ মার্চ-১৯ মে) দলগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করে কমিশন। প্রথম পর্বে ঐকমত্য হয়নি, এমন ২০টির মতো মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গত ৩ জুন থেকে সব দলকে একসঙ্গে নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু করে ঐকমত্য কমিশন, যা গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়। ২৩ দিনের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় মৌলিক সংস্কারের ১৯টি প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ৮টি বিষয়ে সব দল একমত হয়েছে। বাকি ১২টিতে বিভিন্ন দলের ভিন্নমত বা মন্তব্যসহ সিদ্ধান্ত হয়েছে।