মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দিতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত সানা মাঝির (৪২) লাশ দাফন করে ফেরার পথে স্বজনদের লক্ষ্য করে একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সানা মাঝি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বাবু মাঝির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ববিরোধের জেরে সানা মাঝিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিহত সানা মাঝির বাড়ি মধ্য মাকহাটি গ্রামে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সানা মাঝির ভাই আসাদ মাঝি।

এলাকাবাসী জানান, শনিবার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে সানা মাঝির লাশ মধ্য মাকহাটি গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে মধ্য মাকাহাটি গ্রামের সামাজিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। বেলা তিনটার দিকে গোরস্থান থেকে ফেরার সময় নিহতের স্বজন ও উপস্থিত লোকজনকে লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিহতের ভাই আসাদ মাঝির দাবি, বাবু মাঝির লোকজন তাঁদের লক্ষ্য করে অর্ধশতাধিক ককটেল ছুড়েছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, নিহতের স্বজনেরা লাশ দাফন শেষে গোরস্থান থেকে ফিরছিলেন। তখন পেছন থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে শুনেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, সানা মাঝির হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা ওই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। খবর পাওয়ার পর পুলিশ এলাকায় গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুনমুন্সিগঞ্জে পূর্ববিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা০২ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বজনদ র ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুলাউড়ার প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে প্রশাসন, পেয়েছে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু গোপাল সাঁওতালের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন শিশুটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ সময় গোপালের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

সাড়ে তিন বছর বয়সী গোপাল সাঁওতাল উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া চা-বাগানের স্কুলটিলা এলাকার বাসিন্দা। সে চা-শ্রমিক অনিল সাঁওতাল ও সনছড়ি সাঁওতাল দম্পতির একমাত্র সন্তান।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল দুপুরে ইউএনও মো. মহিউদ্দিন গোপালের বাড়িতে যান এবং তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির শারীরিক সমস্যার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রণেশ বর্মা, কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ ও ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশু গোপাল এত দিন প্রতিবন্ধী ভাতার আওতার বাইরে ছিল। ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি জানা যায়। এরপর গত রোববার স্বজনেরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে আবেদন করেন। দ্রুততার সঙ্গে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তৈরি করে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে শিশুটির পরিবারের বিকাশ নম্বরে এক বছরের ভাতা (প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে) পাঠানো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুনসন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা১৫ জুন ২০২৫

ইউএনও আরও বলেন, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের আওতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় প্রতিবন্ধীসেবা ও সাহায্যকেন্দ্র রয়েছে। শিশু গোপালকে নিয়ে স্বজনেরা আগামী বুধবার সেখানে যাবেন। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করবেন। হুইলচেয়ার, অন্যান্য সরঞ্জাম বা ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হলে তা দেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

সম্প্রতি কয়েকজন ভ্রমণকারী মুরইছড়া এলাকায় বেড়াতে গিয়ে শিশু গোপালের কথা জানতে পারেন। জন্মের পর থেকে গোপাল কোমরের নিচের অংশে শক্তি পায় না। চিকিৎসকেরা এ রোগকে ‘সেরেব্রাল পালসি’ হিসেবে শনাক্ত করেন। অর্থসংকটে তার পরিবার চিকিৎসা করাতে পারছিল না। খিদে পেলে শিশুটিকে ঘরের মেঝেতে করা একটি গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়াতে হতো। এ চিত্র দেখে এক ভ্রমণকারী, স্থানীয় কবি ও শিক্ষক সঞ্জয় দেবনাথ শিশুটির ছবিসহ একটি মানবিক পোস্ট দেন ফেসবুকে। পরে তা ভাইরাল হয়।

এ বিষয়ে ১৫ জুন প্রথম আলো অনলাইনে ‘সন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুলাউড়ার প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে প্রশাসন, পেয়েছে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’