দাফন করে ফেরার পথে স্বজনদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 3rd, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দিতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত সানা মাঝির (৪২) লাশ দাফন করে ফেরার পথে স্বজনদের লক্ষ্য করে একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সানা মাঝি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বাবু মাঝির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ববিরোধের জেরে সানা মাঝিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহত সানা মাঝির বাড়ি মধ্য মাকহাটি গ্রামে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সানা মাঝির ভাই আসাদ মাঝি।
এলাকাবাসী জানান, শনিবার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে সানা মাঝির লাশ মধ্য মাকহাটি গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে মধ্য মাকাহাটি গ্রামের সামাজিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। বেলা তিনটার দিকে গোরস্থান থেকে ফেরার সময় নিহতের স্বজন ও উপস্থিত লোকজনকে লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিহতের ভাই আসাদ মাঝির দাবি, বাবু মাঝির লোকজন তাঁদের লক্ষ্য করে অর্ধশতাধিক ককটেল ছুড়েছে।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, নিহতের স্বজনেরা লাশ দাফন শেষে গোরস্থান থেকে ফিরছিলেন। তখন পেছন থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে শুনেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, সানা মাঝির হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা ওই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। খবর পাওয়ার পর পুলিশ এলাকায় গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুনমুন্সিগঞ্জে পূর্ববিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা০২ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া অক্সিজেন মাস্ক খুলেছেন ক্লিনার, অভিযোগ মৃতের স্বজনদের
অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ার আধাঘণ্টার মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ সাইফুল ইসলাম (৩৮) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত সাইফুল ইসলাম নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন যোগিপোল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শেখ ইসমাইলের ছেলে।
রোগীর স্বজনেরা জানান, কিডনি জটিলতায় গত শনিবার সাইফুলকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। কিন্তু, পরদিন সকালে ওয়ার্ডের আউটসোর্সিং কর্মচারী (ক্লিনার) আব্দুল জব্বার অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিয়ে সিলিন্ডারসহ আরেক রোগীকে দেন। এর আধাঘণ্টার মধ্যে সাইফুল ইসলাম মারা যান।
সাইফুলের মা রশিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘‘রাতভর দৌড়াদৌড়ি করে ছেলেকে অক্সিজেন দিয়েছিলাম। কিন্তু, সকালে ক্লিনার অক্সিজেন খুলে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে আমার ছেলে মারা যায়।’’
মৃতের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়াই ক্লিনার অক্সিজেন খুলেছেন। এর আধাঘণ্টার মধ্যে ছটফট করতে করতে আমার ভাই মারা গেছে।’’
ওয়ার্ডে উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এক ব্যক্তি এসে সাইফুলের নাক থেকে নল খুলে সিলিন্ডার নিয়ে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আউটসোর্সিং কর্মচারী আব্দুল জব্বার বলেন, ‘‘একজন মুমূর্ষু রোগীকে দেওয়ার জন্য অক্সিজেন খুলে নেওয়া হয়েছিল।’’
খুমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘‘হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। মুমূর্ষু রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া বা খুলে নেওয়া ওয়ার্ড ক্লিনারের কাজ নয়। একজন রোগী কখন অক্সিজেন পাবেন, কখন পাবেন না; এ সিদ্ধান্ত জানাবেন ওয়ার্ডের ডাক্তার। যেই রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া আছে, সেই রোগীর অক্সিজেন খুলতে হলে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে খুলতে হবে। ওয়ার্ড ক্লিনার যদি খুলে নিয়ে থাকেন, তবে তিনি অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রাজীব