কারখানায় ঢুকতে বাধা দিলেন বিএনপিকর্মীরা
Published: 3rd, May 2025 GMT
মানিকগঞ্জে অবস্থিত জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়্যারহাউসে শ্রমিকদের ঢুকতে বাধা দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সকালে সদর উপজেলার গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিন-চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর অল্প কিছু শ্রমিক এদিন কাজে যোগ দেন। ওই প্রতিষ্ঠানের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা ও আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত সরকারের সময় থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা, আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগসহ ওয়্যারহাউস পরিচালনার যাবতীয় কাজ করে আসছিল জাকির ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। সম্প্রতি তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে জেটি ইন্টারন্যাশনাল। নিয়ম মেনে তারা চট্টগ্রামের এক ঠিকাদারকে কাজ দেন। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে সব চুক্তি বাতিলের দাবি করে আসছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা পছন্দের প্রতিষ্ঠান এম এস ট্রেডার্সের সঙ্গে চুক্তি করতে জেটি ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তাদের চাপ দেন। বিষয়টি নিয়ে শনিবার সকালে তাদের সঙ্গে স্থানীয় ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীর তর্কাতর্কি হয়।
এর জের ধরে সকাল ৮টার দিকে বিএনপি কর্মীরা সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দেন। এ সময় ফটক বন্ধ করে দেওয়ায় আউটসোর্সিংয়ের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক ভেতরে যেতে পারেননি। তিন-চার ঘণ্টা অপেক্ষা করে তাদের বেশির ভাগই চলে যান। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে অল্প কিছু শ্রমিক এদিন কাজে যোগ দেন।
বিএনপির নেতাকর্মীর ভাষ্য, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই ওয়্যারহাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বিষয়টি তোলা হয়। কিন্তু জেটিই কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চান না। তাই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ওয়্যারহাউসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে সেখানে যাওয়া নেতাকর্মীরা মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এদিন বিএনপি নেতা আবুল কালাম, সদর উপজেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ জহির, জাগীর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
বিএনপি নেতা আতাউর রহমান আতার ভাষ্য, ‘কোম্পানির লোকের সঙ্গে আগেই কথাবার্তা ছিল, ফ্যাক্টরির চলমান কাজ স্থানীয় নেতাকর্মী দিয়ে করানো হবে। কোম্পানি সেই কথা রাখেনি। ফলে ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা শ্রমিকদের ফ্যাক্টরিতে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।’
জেটিআই বাংলাদেশ লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ সাইদুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের ওয়্যারহাউসে ঢুকতে দেননি স্থানীয় কিছু লোক। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা আউটসোর্সিংয়ের ঠিকাদারি, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা করতে আগ্রহী। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম মেনে ভেন্ডার লাইসেন্স জমা দিতে বলেছেন। তারা কাজ করলে তাঁর প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। তবে এজন্য প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ঢুকতে না দেওয়া কাম্য নয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, সংবাদ পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন। তিন ঘণ্টা পর শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ সদর উপজ ল ন ত কর ম র কর মকর ত আউটস র স ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
আউটসোর্সিং বরাদ্দ ও ব্যয়ে নীতিমালা মানা হচ্ছে না
আউটসোর্সিং ও অনিয়মিত প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের মজুরিবিষয়ক অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালা বা পরিপত্রের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আউটসোর্সিং এবং অন্য ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কোডের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আনুষঙ্গিক কর্মচারীর (সরকারি কর্মচারী ব্যতীত) সাকল্য বেতন, আউটসোর্সিং এবং অনিয়মিত শ্রমিক মজুরিবিষয়ক অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে জারি করা নীতিমালা, পরিপত্র ও অফিস স্মারকের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। একই ধরনের কাজের জন্য বর্ণিত একাধিক কোডে অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। যে কোডে বরাদ্দ রাখার সুযোগ নেই, সেখানেও রাখা হচ্ছে– যা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ এপ্রিল অর্থ বিভাগ আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ এবং দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিত করার বিষয়ে দুটি নীতিমালা জারি করে। দুটি নীতিমালায় সেবা ক্রয় এবং জরুরি কাজে সম্পূর্ণরূপে সাময়িকভাবে দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োজিত করার বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগ বলেছে, পরিচালন বাজেটের আওতায় সাকল্য বেতনে নিয়োজিত জনবলের (প্রাধিকারভুক্ত প্রিভিলেজ স্টাফ ও চুক্তিভিত্তিক) ব্যয় ‘সাকল্য বেতন (সরকারি কর্মচারী ব্যতীত)’ খাত হতে নির্বাহ হবে। যেহেতু তারা সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত নন, সেহেতু তাদের প্রযোজ্য বিধিবিধান ও নিয়ম-আচার অনুসারে বেতনভাতাদি সমন্বয়ে সাকল্যে বেতন দিতে হবে। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক কর্মচারী সরকারের নিয়মিত রাজস্বভুক্ত কর্মচারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত না
হয়ে নির্দিষ্ট কোনো কার্য সম্পাদনে স্কেলের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে যাদের চাকরি নিয়মিত হয়েছে, শুধু তাদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় এ কোডের বিপরীতে হিসাবভুক্ত করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এসব অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রযোজ্য ও অনুসরণীয় হবে। একই ধরনের কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কোডের বিপরীতে বরাদ্দ না রেখে সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করে প্রাপ্যতা অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের বাজেটে নির্দিষ্ট কোডের বিপরীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং অধীন সংস্থাকে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।