রংপুরে অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় কৃষকের সর্বনাশ, মালিক দেখালেন ‘বিএনপির ক্ষমতা’
Published: 6th, May 2025 GMT
রংপুরের পীরগাছায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ৪১ একর জমির ধানসহ বিভিন্ন সবজি ও ফল নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ বিষয়টি তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করলেও কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। কৃষকদের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণ দাবি করায় তাঁদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মেসার্স শিল্পী এন্টারপ্রাইজ (এমএসবি ব্রিকস) নামে এই ইটভাটাটি পীরগাছা উপজেলার বামন সরদার এলাকায় অবস্থিত। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই ইটভাটাটি অবৈধ। তবে ইটভাটার মালিক মমিনুল ইসলামের দাবি, তাঁরা হাইকোর্টে রিট করে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।
বামন সরদার এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, দুই সপ্তাহ আগে এমএসবি ব্রিকসের আগুন নেভানোর জন্য বিষাক্ত গ্যাস ছাড়া হয়। এতে ভাটাসংলগ্ন উত্তর পাশের জমির ধান, সবজি, গাছের আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফল নষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ৫০-৬০ জন কৃষকের প্রায় ৪০-৪৫ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরও ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে স্থানীয় কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়েছিল।
কৃষক দেনোনাথ বর্মণ বলেন, তিনি ৩৬ শতাংশ জমিতে ব্রি-১০২ জাতের ধান রোপণ করেন। ধানের থোড় এসেছে। এমন সময় ভাটার ধোঁয়ায় সব ধান গাছ পুড়ে গেছে। পরে ভাটায় যান তিনি। সেখানে মালিক তাঁকে বলেন, ‘ধান ঢাকায় যাবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে, তারপর জরিমানা দিব। এর আগে যদি কোনো আলাপ করেন, বাড়াবাড়ি করেন, এক টাকাও দিব না।’ ইটভাটার মালিক বিএনপি করায় ক্ষমতায় প্রভাব দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আরেক কৃষক সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ।
মমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ইটভাটা নিয়ে কথা হলে তিনি রংপুর মহানগর বিএনপির ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন বলে দাবি করেন। খোঁজ নিয়ে তাঁর দাবির সপক্ষে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার জানতে চাইলে মমিনুল বলেন, ‘আমি বিএনপি করি। কিন্তু কোনো পদে ছিলাম না।’
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুকিব বিন লিয়কতকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে খোঁজ করে ৪১ একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ১ মে ইউএনওর মধ্যস্থতায় কৃষক ও ইটভাটার মালিক বৈঠকে বসেন। সেখানে ফসল ক্ষতিগ্রস্তের হার নির্ণয় অনুযায়ী শতাংশে ৫০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ইটভাটার মালিক পরে সে সিদ্ধান্ত মেনে নেননি।
মেসার্স শিল্পী এন্টারপ্রাইজ (এমএসবি ব্রিকস) নামে এই ইটভাটাটি পীরগাছা উপজেলার বামন সরদার এলাকায় অবস্থিত। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই ইটভাটাটি অবৈধ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইটভ ট র ব ষ ক ত ইটভ ট র ম ল ক ক ষকদ র ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় কৃষকের সর্বনাশ, মালিক দেখালেন ‘বিএনপির ক্ষমতা’
রংপুরের পীরগাছায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ৪১ একর জমির ধানসহ বিভিন্ন সবজি ও ফল নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ বিষয়টি তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করলেও কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। কৃষকদের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণ দাবি করায় তাঁদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মেসার্স শিল্পী এন্টারপ্রাইজ (এমএসবি ব্রিকস) নামে এই ইটভাটাটি পীরগাছা উপজেলার বামন সরদার এলাকায় অবস্থিত। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই ইটভাটাটি অবৈধ। তবে ইটভাটার মালিক মমিনুল ইসলামের দাবি, তাঁরা হাইকোর্টে রিট করে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।
বামন সরদার এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, দুই সপ্তাহ আগে এমএসবি ব্রিকসের আগুন নেভানোর জন্য বিষাক্ত গ্যাস ছাড়া হয়। এতে ভাটাসংলগ্ন উত্তর পাশের জমির ধান, সবজি, গাছের আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফল নষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ৫০-৬০ জন কৃষকের প্রায় ৪০-৪৫ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরও ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে স্থানীয় কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়েছিল।
কৃষক দেনোনাথ বর্মণ বলেন, তিনি ৩৬ শতাংশ জমিতে ব্রি-১০২ জাতের ধান রোপণ করেন। ধানের থোড় এসেছে। এমন সময় ভাটার ধোঁয়ায় সব ধান গাছ পুড়ে গেছে। পরে ভাটায় যান তিনি। সেখানে মালিক তাঁকে বলেন, ‘ধান ঢাকায় যাবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে, তারপর জরিমানা দিব। এর আগে যদি কোনো আলাপ করেন, বাড়াবাড়ি করেন, এক টাকাও দিব না।’ ইটভাটার মালিক বিএনপি করায় ক্ষমতায় প্রভাব দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আরেক কৃষক সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ।
মমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ইটভাটা নিয়ে কথা হলে তিনি রংপুর মহানগর বিএনপির ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন বলে দাবি করেন। খোঁজ নিয়ে তাঁর দাবির সপক্ষে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার জানতে চাইলে মমিনুল বলেন, ‘আমি বিএনপি করি। কিন্তু কোনো পদে ছিলাম না।’
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুকিব বিন লিয়কতকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে খোঁজ করে ৪১ একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ১ মে ইউএনওর মধ্যস্থতায় কৃষক ও ইটভাটার মালিক বৈঠকে বসেন। সেখানে ফসল ক্ষতিগ্রস্তের হার নির্ণয় অনুযায়ী শতাংশে ৫০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ইটভাটার মালিক পরে সে সিদ্ধান্ত মেনে নেননি।
মেসার্স শিল্পী এন্টারপ্রাইজ (এমএসবি ব্রিকস) নামে এই ইটভাটাটি পীরগাছা উপজেলার বামন সরদার এলাকায় অবস্থিত। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই ইটভাটাটি অবৈধ