বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে এলাকাছাড়া করার হুমকি ছাত্রদল নেতার
Published: 6th, May 2025 GMT
সাতক্ষীরার কলারোয়ার পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বর্তমান সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আক্তারুল ইসলামকে পিটিয়ে এলাকাছাড়ার করার হুমকি দিয়েছেন পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব জিএম সোহেল।
গতকাল সোমবার বিকেলে কলারোয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের নবগঠিত সার্চ কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে ওই ছাত্রদল নেতা এ হুমকি দেন।
ছাত্রদল নেতা জিএম সোহেল বলেন, আজ আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেবো না। যারা এই কলারোয়ার নব রাজনীতির সূচনা করতে যাচ্ছে, ডিমের কুসুম থেকে বের হয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী জেলখানা থেকে এসে যারা এই কলারোয়ায় আওয়ামী মার্কা রাজনীতি পরিচালনা করতে যাচ্ছেন। দ্যর্থহীন কণ্ঠে বলে দিতে চাই, কলারোয়া ছাত্রদল কলারোয়ার সাবেক মেয়রকে প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন, ছাত্রদল যদি মনে করে আপনাকে (সাবেক মেয়র গাজী আক্তারুল ইসলাম) ৫ ঘণ্টার মধ্যে কলারোয়া থেকে বিতাড়িত করে দেবে ইনশাআল্লাহ। কলারোয়ার সাবেক মেয়র ৯ বছর পৌরসভায় ছিল। বিএনপির একটি লোকও কি উপকৃত হয়েছে? আমার নেত্রী, আমার মা খালেদা জিয়ার নামে সে একটি ব্যানার ধরেছে? তার নেতাকর্মীরা ধরেছে? বিগত আন্দোলনে সাবেক মেয়রের নেতাকর্মীরা কলারোয়ার কোথাও কি কোনো অবস্থান নিয়েছিল।
জিএম সোহেল আরও বলেন, কলারোয়ার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করেছে। আমরা কিন্তু সবকিছুই জানি। দেশনায়ক তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে আমরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। আমরা কিন্তু এতোটা ধৈর্যশীলও না।
এ ছাত্রদল নেতা বলেন, ওই কালোবিড়াল কলারোয়ার নব রাজনীতির কুলাঙ্গার, ওই স্বপনের সঙ্গে আঁতাত করে সর্বশেষ কলারোয়া পৌরসভার ভোটে নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, কলারোয়াবাসী সেই ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে লাল কার্ড দেখিয়েছিল। সময় আছে, এখনো সঠিক পথে ফিরে আসুন। বাবা এবং সন্তানের পার্থক্য, অভিজ্ঞতার পার্থক্য বুঝতে চেষ্টা করেন। নতুবা পিটিয়ে কলারোয়া থেকে ছাড়িয়ে (বের করে) দেবো।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সোহেলের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কলারোয়া পৌর বিএনপি’র কমিটি গঠন করতে ৯টি ওয়ার্ডে সার্চ কমিটি গঠন করেছে জেলা বিএনপি। বিগত ১৭ বছর যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছিল তাদের প্রায় ৩০-৩২ জনকে সার্চ কমিটিতে রেখেছেন সাবেক মেয়র গাজি আক্তারুল ইসলাম। উপজেলা বিএনপি যাদের নাম দিয়েছে তাদের রাখা হয়নি। তাই গাজি আক্তারুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কলারোয়ার পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আক্তারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভি করেননি।
ছাত্রদল নেতার এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এক অংশের নেতাকর্মীরা বলেন, শেখ হাসিনার গাড়িবহরের মিথ্যা মামলায় মেয়র আক্তারুল দীর্ঘ সাড়ে চার বছর জেলে ছিলেন। ২০১১ এবং ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচনে নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগ তাকে পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে দেয়নি। আক্তারুল কলারোয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিও ছিলেন। তার সম্পর্কে অযাচিত মিথ্যা এবং ভুল তথ্য সরবরাহ করে বক্তব্য দেওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত। তার মতো জনপ্রিয় নেতাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়ার ঘোষণায় সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত রদল ছ ত রদল ন ত কল র য় র ব এনপ র প রসভ র র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনার বিচার ও সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন রাবিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তুহিন হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এবং সারাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা বিধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
আরো পড়ুন:
অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
চটের বিছানা নিয়ে বাগবিতণ্ডা, যুবককে হত্যা
বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব বলেন, “সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এ রকম নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা সর্বশেষ কবে হয়েছে আমার মনে পড়ে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই, আপনার কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা আমরা শুনতে চাই। আপনি এ সংবাদকর্মীদের অভিভাবক, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা আপনার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি, এমনকি একটি ফেসবুক পোস্টও না। এভাবে একদম প্রকাশ্যে ও নৃশংসভাবে একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার পরো আপনার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আজ এখানে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমরা যারা সাংবাদিক আছি, আমাদের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি, তাই আমাদের নিরাপত্তা এখন সময়ের দাবি।”
বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিন বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা সবাই দেখেছি। জুলাই-পরবর্তী সময়েও যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে দাঁড়ানোর কথা নয়। এখন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কথা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার কথা। কিন্তু আজ দাঁড়িয়েছি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে। সাংবাদিকদের অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকরা যেমন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কলম দিয়ে লিখতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে সেই কলমকে অস্ত্রে পরিণত করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক করছি—এ ধরনের সাহস যেন আর কেউ না দেখাতে পারে, তার জন্য আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ বিচার চাই।”
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, “আপনারা গদিতে বসেছেন শুধু এসির হাওয়া খাওয়ার জন্য নয়। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা এ গদিতে বসেছেন। যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন। আপনাদের বাইরে বাংলাদেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন, যারা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।
রাবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসানের সঞ্চালনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী