রাজশাহী পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. মঞ্জু মনোয়ারার অভিযোগ, ঘটনার সময় তাঁকে মারধরও করা হয়েছে।

বিদ্যালয়, বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের আগে বাগধানী উচ্চবিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন নওহাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রহমান। এরপর ৩ মার্চ কমিটির নতুন সভাপতি হন বিএনপি–সমর্থিত মামুন-অর-রশিদ। তিনি নওহাটা পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। রফিকুলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন মোল্লা। তিনি পৌর বিএনপির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নাজিম সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি মো.

মোকবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তাঁরা বিদ্যালয়ের ওই কমিটি মেনে নেননি।

গতকাল মঙ্গলবার কমিটির সভা ছিল। সেখানে পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যাওয়ার আগে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে বাইরে বের করে তাঁর কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে নওহাটা পৌরসভার বাঘাটা গ্রামের বাসিন্দা ও পৌর যুবদলের মো. আতাউর (৩৫), বাগাসার উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক ও পৌর যুবদলের মো. মকসেদ আলী (৩৫), সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন মোল্লা (৫০), বাগধানী গ্রামের মো. জমসেদসহ (৪০) অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।

অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিবাদীরা বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটির সভার সময় জোর করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। তিনি গালাগাল করতে নিষেধ করলে তাঁরা অফিসকক্ষ ভাঙচুর করেন এবং তাঁকে মারধর করে বের করে দিয়ে অফিসকক্ষে তালা দিয়ে চলে যান। অভিযুক্তরা তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।

আজ বুধবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দুটি দরজায় চারটি তালা লাগানো। বিদ্যালয়ের সামনে একটি ডোবা। সেখানে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে পাশের একটি কক্ষে বসে ছিলেন প্রধান শিক্ষক।

জানতে চাইলে মোসা. মঞ্জু মনোয়ারা বলেন, এটা বিএনপির নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। এখানকার কোনো ইস্যু না। তিনি বিষয়টি ইউএনও ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

আবেগতাড়িত হয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বাগসারা স্কুলের পিয়ন এসে এখানে স্কুল চলাকালে এসে কী করে আমাকে গালিগালাজ করেন? আমি নিরাপত্তা চাই।’

পবার নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দিয়ে তাঁর চেয়ার ফেলে দেওয়া হয়। বুধবার বেলা ১১টার দিকে তোলা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ বন দ ব প রসভ র কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ থাইল্যান্ডে গেছেন

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ড গিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গতকাল বুধবার রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি দেশ ছাড়েন বলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে।

বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তিনি চিকিৎসার জন‍্য থাইল্যান্ডে গিয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তার এক ছেলে এবং শ‍্যালক। নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তাঁকে দেশত‍্যাগে বাধা দেওয়া হয়নি।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁর সঙ্গে শ্যালক ডা. নওশাদ খান এবং ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ আছেন। দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি বিদেশে গেছেন।  

আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর তিনি ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তাঁর মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তাঁর বাসায় উঠেছিলেন।

ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি করা হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ