মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ময়নাতদন্তের সঙ্গে যুক্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (৭ মে) দুপুরে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আজ দুইজনসহ এখন পর্যন্ত ২৯ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করার আবেদন করা হয়েছে। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। কাল আসামি পরীক্ষার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।”

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ছুটির দিন বাদে টানা শুনানি চলছে। আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায়, শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

কিশোরগঞ্জে লিচুর বিচি গলায় আটকে শিশুর মৃত্যু

ব্যাটারিচালিত ভ্যানে উঠে খেলতে গিয়ে প্রাণ গেল শিশুর

গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। এর আগে, গত ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

গত ১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এর আগে, গত ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ক ষ য গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

নায়িকা হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই: মম

জাকিয়া বারী মম। নন্দিত অভিনেত্রী ও মডেল। সম্প্রতি লুৎফর হাসানের রচনা ও সোহেল রাজের পরিচালায় নির্মিত ‘স্কুলগেট’ নাটকে অভিনয় করে দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এ নাটকে অভিনয়ে অভিজ্ঞতা, কাজের বিষয়ে নিজস্ব ভাবনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।

একই সময়ে বেশ কিছু নাটকের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ‘স্কুলগেট’ নাটকটি বেছে নেওয়ার কারণ? 
এখনকার বেশির ভাগ নাটকের গল্প প্রায় একই ধাঁচের। সেসব গল্পে অভিনয়ের কতটুকু মূল্যায়ন হবে বলা কঠিন। এদিক থেকে ‘স্কুলগেট’ নাটকের কাহিনি কিছুটা সময়োপযোগী মনে হয়েছে। নাট্যকার লুৎফর হাসান যখন এই নাটকের গল্প শুনিয়েছিলেন, তখন মনে হয়েছিল, এর চরিত্রগুলো সহজেই দর্শকমনে নাড়া দেবে। এমন মনে হওয়ার কারণে ‘স্কুলেগেট’-এর গল্পে দেখা মেলে চেনা জীবন আর চরিত্রে আছে আমাদের চার পাশের মানুষগুলোর ছায়া। একই সঙ্গে এই বিষয়গুলো ভাবিয়ে তুলবে’ সন্তানদের আমরা কীভাবে মানুষ করছি, আমাদের পারিবারিক বন্ধন কেমন হওয়া উচিত। তাই অন্য যে কোনো কাজ হাতে নেওয়ার আগে অভিনয়ের জন্য এই নাটকটি বেছে নিয়েছি।   

নির্মাতা, নাট্যকার এমনকি সহশিল্পীদের অনেকেই তরুণ; যাদের সঙ্গে আগে সেভাবে কাজ করা হয়ে ওঠেনি। সে হিসেবে গল্প পছন্দ হলেও নাটকের নির্মাণ যেমন কল্পনা করেছেন, তেমনই হয়েছে? 
নতুনদের মধ্যে যারা নিয়মিত অভিনয় করছেন, গল্প-চিত্রানাট্য লিখছেন, নাটক-সিনেমা-সিরিজ পরিচালনা করছেন তাদের সবার সঙ্গেই যে কাজ করা হয়েছে, তা নয়। কিন্তু অনেকের কাজ দেখেছি, বেশ কয়েকজনকে সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে। তাই নতুনদের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে কখনও অনীহা ছিল না। যখন কোনো গল্প, চরিত্র ভালো লাগছে, নির্মাণ পরিকল্পনায় একটু আলাদা মনে হচ্ছে, সে কাজগুলো করছি। কাজের ফলাফলও আশাবাদী করে তুলেছে। যেমন পরিচালক সোহেল রাজের কথাই বলি, তিনিও নতুন। কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে দেখেছি, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তিনি দারুণভাবে রপ্ত করেছেন। গল্প উপস্থাপনেও নিজস্ব ধরন আছে। তাই সোহেল রাজের মতো যে নির্মাতা কাজে নিজস্বয়তার ছাপ রাখতে পারছেন, তাদের কাছে ভালো কিছু আশা করতেই পারি। এজন্য ‘স্কুলগেট’ ভালো কিছু হবে এমন প্রত্যাশা নিয়েই অভিনয় করেছি।

একসময় রোমান্টিক গল্পে নাটকেই বেশি অভিনয় করতে দেখা গেছে। এখন কী আগের ভাবনা থেকে সরে এসেছেন?
‘সময়ের চাহিদা’ বলে একটা কথা আছে। এর মানে হলো সময়ই আপনাকে নির্ধারণ করে দেবে, কখন কী করতে হবে। একসময় রোমান্টিক গল্পের নাটকে বেশি কাজ করেছি, কারণ আমার কাছে দর্শকের প্রত্যাশা সেটাই ছিল। তারপরও যখন সুযোগ পেয়েছি, অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে ভিন্ন রূপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এভাবে যতটুকু পেরেছি দর্শক প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি চেষ্টা করেছি নিজের শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে। কারণ অভিনয় শুধু তো পেশা নয়, ভালোবাসার একটা জায়গা।

নায়িকা ইমেজ থেকে বেরিয়ে এসে এখন কি যে কোনো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আপনি প্রস্তুত?
নায়িকা হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। অভিনয়ের মূল্যায়ন হবে– এমন যে কোনো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমি প্রস্তুত। আমি বারবারই কাজের সংখ্যা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। ক্যারিয়ার নিয়ে কখনও হতাশ ছিলাম না; বরং প্রতিনিয়ত মনে করি, যখন যে অবস্থানে আছি, সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন করে পথচলা। 

আপনি একজন পরীক্ষিত অভিনেত্রী। তারপরও যাদের জীবনযাপন, ভাবনার জগৎ সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই, তাদের চরিত্র পর্দায় তুলে গেলে কি পরিচালকের ওপর নির্ভর করেন?
অভিনয়ের আগে যতটা পারি চরিত্রের যাপিত জীবন, ভাবনার জগৎ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করি। পরিচালকের পরামর্শ নিয়েও কাজটা সহজ করে তোলার চেষ্টা করি। গল্প ও চরিত্র কীভাবে পর্দায় উপস্থাপন করা হবে, তা নিয়ে নির্মাতাদের নিজস্ব একটা পরিকল্পনা থাকে। এজন্য তাদের ওপরও অনেক সময় নির্ভর করতে হয়। তাই পরীক্ষিত অভিনেত্রী বললেও এটাই সত্যি, আমি এখনও অভিনয়ের পরীক্ষা দিয়েই চলেছি। এখনও ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে নার্ভাস লাগে এই ভেবে যে, আমার কাছে নির্মাতার যে প্রত্যাশা, অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তা পূরণ করতে পারব কিনা। 

এখন বেশির ভাগ নির্মাতা কাজের বিষয়ে নির্দিষ্ট একটা সময় বেঁধে দেন। এতে ভালো কিছু করে দেখার সুযোগ কতটুকু? 
ভালো কিছুর জন্য যথেষ্ট সময় নিতে হয়। কিন্তু ভালো কিছু তখনই হয়, যখন শেখানে মেধা আর নতুনধারার মিশ্রণ ঘটে। অবাক করা বিষয় হলো, এ দেশে নির্মাতাদের কাজের সুযোগসুবিধা কম। বাজেটও থাকে নির্দিষ্ট। এজন্য প্রতিটি কাজ একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে হয়। অবাক করার মতো হলেও সত্যি যে, মাত্র দুই-তিন দিন কাজ করেও অনেকে ভালো কিছু তুলে ধরতে পারছেন। সেই সব নির্মাতার প্রশংসা না করলেই নয়; যারা অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও কাজের মধ্য দিয়ে সময়কে জয় করে চলেছেন। 

অনেক কথা হলো, এবার বলুন সামনে নতুন কোন আয়োজনে আপনাকে দেখা যাবে?
বেশ কিছু নাটক ও সিরিজ নিয়ে কথা হচ্ছে। তার মধ্যে সেগুলো ভিন্ন ধরনের মনে হবে, অভিনয়ের জন্য সেগুলো বেছে নেব। এর বাইরে ‘মাস্টার’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছি। এ বছরই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা আছে। আশা করছি, সেখানে দর্শক  আমাকে নতুন রূপে আবিষ্কার করবেন।   
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ