প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রসালো পাকা লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবার আগেই পেকেছে লিচু। সোনারগাঁয়ের বাগানের গাছগুলোতে এখন পাকা লিচু ঝুলছে।

আগে বাজারে আসায় এবং ব্যতিক্রম টক মিষ্টি স্বাদের কারণে মানুষের কাছে সোনারগাঁয়ের লিচুর কদর রয়েছে। সাধারণত বৈশাখের শেষ সময়ে এ লিচু প্রথম বাজারে আসে। 

লিচু চাষিরা জানান, এ বছর দেশের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। ফলে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আশা করছেন তারা।

সোনারগাঁয়ের পানাম গাবতলী এলাকায় এ উপজেলার সবচেয়ে বড় এবং পুরাতন সাধু’র লিচুর বাগান ঘুরে কথা হয় এ বাগানের ক্রেতা রুবেল রানার সাথে। তিনি বলেন, “সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি — এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হচ্ছে। তবে অন্যান্য জাতের তুলনায় কদমী লিচুর চাষেই এখন চাষিরা বেশি মনোযোগী। অন্য ফসল বাদ দিয়ে এখন অনেকেই লিচুর দিকেই ঝুঁকেছেন।”

প্রতি বছর একটি বাগান থেকে ৪-৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারেন একজন চাষি। তাই খালি জায়গা পেলে অনেকেই কদমী লিচুর বাগান তৈরি করছেন। যদিও খরার কারণে মুকুল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবু ফলন ভালো হয়েছে। সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে বেশিরভাগই কদমী লিচু চাষ হচ্ছে।

আব্দুর রউফ নামের আরেকজন লিচু ব্যবসায়ী ও চাষি জানান, বর্তমানে কদমী লিচু প্রতি শত ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং পাতি লিচু প্রতি শত ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোনারগাঁ পৌরসভা, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচুর বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সর্দারবাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আশপাশ, বাড়ি মজলিশ, দিঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, ইছাপাড়া, কৃষ্ণপুরা, হাড়িয়া, সাহাপুর, পানাম গামতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্ট মানের লিচু চাষ হয়। 

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, “এ বছর সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮৫টি গ্রামে ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রায় ৭২০ মেট্রিক টন ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে এ বছর প্রায় ৭ কোটি টাকার লিচু কেনাবেচা হতে পারে। ”

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন রগ এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

বদ নজরের দোয়া: ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা

‘বদ নজর’ ইসলামে একটি বাস্তব সত্য, যা মানুষের ঈর্ষা, হিংসা বা অতিরিক্ত প্রশংসার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। কোরআন ও হাদিসে বদ নজরের বাস্তবতা এবং এর থেকে সুরক্ষা লাভের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই মুসলমানদের জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বদ নজরের বাস্তবতা

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, তারা যখন কোরআন শোনে তখন প্রায় তাদের দৃষ্টির দ্বারা তোমাকে পতিত করবে। আর তারা বলে: ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’” (সুরা কলাম, আয়াত: ৫১)

রাসুল (সা.) বলেছেন: “চোখ লাগা (বদ নজর) সত্য।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৮৮)

আরও পড়ুনশিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে১৫ আগস্ট ২০২৫বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া

রাসুল (সা.) বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:

১. বদ নজর থেকে শিশুদের রক্ষার দোয়া

রাসুল (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: উ‘ঈযুকুমা বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।

অর্থ: “আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে আশ্রয় দিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর বদ নজর থেকে।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ২০৬০)

২. বদ নজর থেকে রক্ষার সাধারণ দোয়া

উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক।

অর্থ: “আমি আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির অশুভ দিক থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

৩. বদ নজর দূর করার আমল

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছু দেখে যা তাকে ভালো লাগে, তখন সে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। কারণ বদ নজর সত্য।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৫০৯)

এক্ষেত্রে দোয়া করা যায়—

উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফীক।

অর্থ: “আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দান করুন।”

আরও পড়ুনদোয়া কবুলের জায়গা০৪ জুন ২০২৪বদ নজর প্রতিরোধে করণীয়

১. সকালে-সন্ধ্যায় জিকির–আজকার পাঠ করা (যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস)।

২. অন্যের প্রশংসায় বরকতের দোয়া করা।

৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাওয়াক্কুল করা।

বদ নজর মানুষের জন্য বাস্তব ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আল্লাহর উপর ভরসা, কোরআনের আয়াতসমূহ পাঠ এবং রাসুল (সা.)-এর শিখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে মুসলমান সহজেই এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারে।

তাই প্রতিদিনের জীবনে বদ নজর প্রতিরোধের দোয়াগুলো নিয়মিত পড়া প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ