সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে, ৭ কোটি টাকার বিক্রির আশা
Published: 8th, May 2025 GMT
প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রসালো পাকা লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবার আগেই পেকেছে লিচু। সোনারগাঁয়ের বাগানের গাছগুলোতে এখন পাকা লিচু ঝুলছে।
আগে বাজারে আসায় এবং ব্যতিক্রম টক মিষ্টি স্বাদের কারণে মানুষের কাছে সোনারগাঁয়ের লিচুর কদর রয়েছে। সাধারণত বৈশাখের শেষ সময়ে এ লিচু প্রথম বাজারে আসে।
লিচু চাষিরা জানান, এ বছর দেশের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। ফলে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আশা করছেন তারা।
সোনারগাঁয়ের পানাম গাবতলী এলাকায় এ উপজেলার সবচেয়ে বড় এবং পুরাতন সাধু’র লিচুর বাগান ঘুরে কথা হয় এ বাগানের ক্রেতা রুবেল রানার সাথে। তিনি বলেন, “সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি — এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হচ্ছে। তবে অন্যান্য জাতের তুলনায় কদমী লিচুর চাষেই এখন চাষিরা বেশি মনোযোগী। অন্য ফসল বাদ দিয়ে এখন অনেকেই লিচুর দিকেই ঝুঁকেছেন।”
প্রতি বছর একটি বাগান থেকে ৪-৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারেন একজন চাষি। তাই খালি জায়গা পেলে অনেকেই কদমী লিচুর বাগান তৈরি করছেন। যদিও খরার কারণে মুকুল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবু ফলন ভালো হয়েছে। সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে বেশিরভাগই কদমী লিচু চাষ হচ্ছে।
আব্দুর রউফ নামের আরেকজন লিচু ব্যবসায়ী ও চাষি জানান, বর্তমানে কদমী লিচু প্রতি শত ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং পাতি লিচু প্রতি শত ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোনারগাঁ পৌরসভা, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচুর বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সর্দারবাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আশপাশ, বাড়ি মজলিশ, দিঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, ইছাপাড়া, কৃষ্ণপুরা, হাড়িয়া, সাহাপুর, পানাম গামতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্ট মানের লিচু চাষ হয়।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, “এ বছর সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮৫টি গ্রামে ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রায় ৭২০ মেট্রিক টন ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে এ বছর প্রায় ৭ কোটি টাকার লিচু কেনাবেচা হতে পারে। ”
ঢাকা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন রগ এ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনার বিচার ও সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন রাবিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তুহিন হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এবং সারাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা বিধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
আরো পড়ুন:
অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
চটের বিছানা নিয়ে বাগবিতণ্ডা, যুবককে হত্যা
বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব বলেন, “সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এ রকম নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা সর্বশেষ কবে হয়েছে আমার মনে পড়ে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই, আপনার কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা আমরা শুনতে চাই। আপনি এ সংবাদকর্মীদের অভিভাবক, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা আপনার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি, এমনকি একটি ফেসবুক পোস্টও না। এভাবে একদম প্রকাশ্যে ও নৃশংসভাবে একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার পরো আপনার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আজ এখানে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমরা যারা সাংবাদিক আছি, আমাদের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি, তাই আমাদের নিরাপত্তা এখন সময়ের দাবি।”
বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিন বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা সবাই দেখেছি। জুলাই-পরবর্তী সময়েও যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে দাঁড়ানোর কথা নয়। এখন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কথা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার কথা। কিন্তু আজ দাঁড়িয়েছি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে। সাংবাদিকদের অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকরা যেমন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কলম দিয়ে লিখতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে সেই কলমকে অস্ত্রে পরিণত করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক করছি—এ ধরনের সাহস যেন আর কেউ না দেখাতে পারে, তার জন্য আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ বিচার চাই।”
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, “আপনারা গদিতে বসেছেন শুধু এসির হাওয়া খাওয়ার জন্য নয়। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা এ গদিতে বসেছেন। যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন। আপনাদের বাইরে বাংলাদেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন, যারা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।
রাবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসানের সঞ্চালনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী