লাব্বাইক অ্যাপ, হজযাত্রার ডিজিটাল সঙ্গী
Published: 10th, May 2025 GMT
পবিত্র হজ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, যা প্রতিটি সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। তবে হজযাত্রার সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, স্থানীয় অবকাঠামো সম্পর্কে অজ্ঞতা, স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং জরুরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মোবাইল অ্যাপ—‘লাব্বাইক’ উন্মোচন করেছে। এই অ্যাপ হজযাত্রীদের সফরকে নিরাপদ, সুবিন্যস্ত এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করছে, পাশাপাশি হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করছে।
লাব্বাইক অ্যাপ হজযাত্রীদের নিরবচ্ছিন্ন সহায়ক
লাব্বাইক অ্যাপ সম্পর্কে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিস্ট কর্মকর্তা জানান, ‘লাব্বাইক’ অ্যাপটি হজযাত্রীদের জন্য একটি সর্বাঙ্গীন ডিজিটাল মাধ্যম, যা তাঁদের হজ পালনকে সহজ, নিরাপদ এবং আধ্যাত্মিকভাবে পরিপূর্ণ করেছে। হজযাত্রীর ফ্লাইট তথ্য, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, লোকেশন ট্র্যাকিং, ধর্মীয় সহায়িকা এবং জরুরি সহায়তার মতো সব প্রয়োজনীয় সেবা একত্র করেছে। হজযাত্রীরা বিপদে পড়লে বা হারিয়ে গেলে এসওএস বাটনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাবেন। ফ্লাইট কোড, বোর্ডিং সময় এবং লাগেজের ওজন সীমার বিস্তারিত তথ্য পাবেন। গুগল ম্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও গ্রুপ ট্র্যাকিং, মিনা-আরাফার তাঁবুর অবস্থান নির্ণয় করতে পারবেন। হোটেলের নাম, ঠিকানা, চেক-ইন ও চেক-আউট তারিখসহ বিস্তারিত তথ্য থাকবে এই অ্যাপে। ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রোফাইল, মেডিকেল সেন্টার তথ্য, এবং জরুরি স্বাস্থ্য সহায়তা, কোরআন, হাদিস, কিবলা নির্দেশনা, ডিজিটাল তসবি, এবং হজ-ওমরাহে নির্দেশনা রয়েছে । হজ প্রিপেইড কার্ড ও কোরবানি কুপন, নামাজের সময়সূচি ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। ঐতিহাসিক স্থানের বিবরণ, মক্কা-মদিনার জিয়ারত স্থানের তথ্য, গ্রুপ যোগাযোগ ও হজ এজেন্সি তথ্য রয়েছে।
‘লাব্বাইক’ অ্যাপ হজযাত্রীদের জন্য এক উদ্যোগ, যা আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে ইসলামি আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় ঘটিয়েছে। এই অ্যাপ হজযাত্রীদের নিরাপদ, সুন্দর এবং স্মরণীয় হজ পালনে সহায়তা করছে। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ৮৭ হাজার ১০০ হজযাত্রী এই অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের যাত্রাকে আরও সুবিন্যস্ত ও আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
কীভাবে ডাউনলোড ও রেজিস্ট্রেশন করবেন
হজের সরকারি ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে লাব্বাইক অ্যাপ। এছাড়া গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর থেকে ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ ডাউনলোড করুন। মোবাইল নম্বর, পিলগ্রিম আইডি (পিআইডি), এবং জন্মতারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ওটিপি যাচাইয়ের পর চার সংখ্যার পিন সেট করুন। পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের যুক্ত করা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য প হজয ত র দ র হজয ত র র এই অ য প সহ য ত
এছাড়াও পড়ুন:
তামাকের বদলে ধান চাষ মাতামুহুরীর চরে
চকরিয়া, লামা ও আলীকদম উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মাতামুহুরী নদীতে শুষ্ক মৌসুমে জেগে ওঠা চরে এবার তামাকের বদলে বোরো ধান চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন ভূমিহীন কৃষকরা। এতে প্রায় ১৫ হাজার টন ধান উৎপাদন হতে পারে।
জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার পর মাতামুহুরী নদীসহ অন্তত ৫০টি শাখা খাল ও ছড়ায় পানি কমে যায়। জেগে ওঠে বালুময় চর। একসময় নদীর পাড়ের লোকজন বালুচরে তামাক, বাদাম, শিম, মিষ্টি লাউ, আলু চাষ করতেন। কিন্তু নদীর পানিযুক্ত অংশে তেমন কোনো চাষ হতো না। এবার নদী পাড়ের দরিদ্র কৃষকরা বোরো ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন কয়েক বছর ধরে মাতামুহুরী নদীর চরে তামাক চাষ বন্ধে তৎপরতা চালালেও এখন অনেকটা নীরব। ফলে মাতামুহুরীর চরে আবার ব্যাপকভাবে তামাক চাষ হচ্ছে। তামাকের বর্জ্যে নদী ও চিংড়ি ঘেরের পানিতে মিশে যাচ্ছে। এতে মাছের মড়ক দেখা দিচ্ছে। যে কারণে চকরিয়া সুন্দরবন এলাকার চিংড়ি ঘের ও নদীতে আগের মতো মাছ মিলছে না।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি যদি আগামী মৌসুম পর্যন্ত বর্তমান কর্মস্থলে থাকি কোনোভাবেই মাতামুহুরী নদীর বালুচরে তামাক চাষ করতে দেব না।’
চকরিয়া উপজেলার কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে কৃষকরা মাতামুহুরীসহ শাখা খালের চরে চকরিয়া অংশে ১০০ হেক্টরে বোরো ধান চাষ করেছেন। একইভাবে লামা ও আলীকদম কুরুপকাতা ঝিরি অংশে আরও ২০০ হেক্টর চরে সাথি ফসলের সঙ্গে বোরো চাষ হয়েছে। এবার অনাবৃষ্টির কারণে নদীতে পানি না বাড়ায় ভালো ফলন হয়েছে।
দক্ষিণ কাকারা গ্রামের চাষি ওমর আলী জানান, তিনি প্রায় ৪০ শতক চরে বোরো চাষ করে ১ হাজার কেজি ধান পেয়েছেন। এ ধানে তার মৌসুমের চাহিদা মেটে যাবে। কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, বালু চরে তামাক আবাদ বন্ধ করে সাথি ফসল চাষ করা দরকার।