ওয়ার্ড বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন নিয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলাজুড়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে দলীয় পদপ্রার্থীদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন অর্ধশত নেতাকর্মী। গত এক সপ্তাহে পেরিয়া ইউনিয়নের ২, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড, ঢালুয়া ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড, দৌলখাঁড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড, আদ্রা উত্তর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড, হেসাখাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটে।

এসব সংঘর্ষের ঘটনাকে একতরফা হামলা দাবি করেছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা আহ্বায়ক নজির আহমদ ভূঁইয়া। তাঁর ভাষ্য, এসব হামলা করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা। হামলার বিষয়ে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘যারা হামলা করেছে, আমি তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

গত শুক্রবার রাতে ঢালুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জালালের মালিকানাধীন তেজের বাজারের রহিম বস্ত্রালয়, মদিনা ডেকোরেটর, রহিম পল্ট্রি, রহিম ডিমের আড়ত ও তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। একই দিন সন্ধ্যায় ঢালুয়া ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষ। আব্দুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিত বিএনপি নেতা ইসহাক মজুমদার, আলমগীর, জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী মোহাম্মদ জালাল।

শুক্রবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় পেরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনের শুরুতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গাজী জাফরের নেতৃত্বে অপর প্রার্থী হায়াতুন্নবী সমর্থিত নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয়। হামলায় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ফারুক ভূঁইয়া, তাঁর বড় ভাই রবিউল হক ভূঁইয়া রুবেল, ছোট ভাই জনি ভূঁইয়া, প্রার্থী হায়াতুন্নবীর ভাগিনা আবু নোমান ও ভাতিজা আহসান উল্লাহ আহত হন। একই দিন দুপুরে ৭ নম্বর ওয়ার্ড সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনায় শ্রীফলিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর, রবিউল হোসেন, সাগর, কাজী জোড়পুকুরিয়া গ্রামের ইলিয়াস, তাজুল ইসলাম আহত হন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে আদ্রা উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ শাকতলী উচ্চ বিদ্যালয় ও দুপুরে দৌলখাঁড় ইউনিয়নের ভোলাকোট কবি জসীম উদ্দীন একাডেমি প্রাঙ্গণে বিএনপি নেতাকর্মীর সংঘর্ষ হয়। উত্তর শাকতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ও আদ্রা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শহীদ উল্লাহ ভূঁইয়া, দক্ষিণ শাকতলী গ্রামের বিএনপি কর্মী সাহাব উদ্দিন, একই গ্রামের আল আমিন, বাছির, সাকিল। ভোলাকোট কবি জসীম উদ্দীন একাডেমির সম্মেলনের সংঘর্ষে আহত হন দৌলখাঁড় ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শাহ আলম, জামাতা মিজানুর রহমান, ছেলে আলমগীর হোসেন, বিএনপি কর্মী আবুল হাশেম, মোহাম্মদ জসিম, মোহাম্মদ টিটু, জাহাঙ্গীর আলম।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক নজির আহমদ ভূঁইয়া বলেন, উপজেলার সব ওয়ার্ড সম্মেলনে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই হামলার পরও নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে বিএনপির প্রকৃত ও ত্যাগী নেতাদের বিজয়ী করেছে। হামলা ভঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ও দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি নজির ভূঁইয়াকে বলেছি, যারা গণ্ডগোল করেছে– তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে এবং অ্যাকশন নিতে। আমিও তাদের বলেছি, তোমরা আমার দল করতে পারবে না। ওয়ার্ড সম্মেলনগুলোতে শতভাগ আমার লোকেরা বিজয়ী হয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ন ঙ গলক ট উপজ ল স ঘর ষ র ঘটন ত ন ত কর ম ন ত কর ম র পদপ র র থ ম হ ম মদ সমর থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মাহিদুল নাকি শামীম?

ড্রেসিংরুমে বিশ্বাসের রেণু ছড়িয়ে দিতে মুশতাক আহমেদ সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। স্পিন বোলিং কোচের সঙ্গে অনুশীলন শেষে সময় কাটাচ্ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। পায়ে প‌্যাড জোড়া খুলেননি। ওটা নিয়েই মাঠ চক্কর দিচ্ছিলেন কয়েকবার। দুজনের গুরুগম্ভীর কথা যেন শেষ-ই হচ্ছিল না। কি নিয়ে কথা তা জানার উপায় নেই। তবে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা মাহিদুলের সুযোগ আসবে, সেই বিশ্বাস দিচ্ছিলেন মুশতাক এতোটুকু নিশ্চিত। সঙ্গ এটা-ওটা নিয়ে কথা তো আছেই।  

মাহিদুলকে বিশ্বাস দেওয়া ছাড়া বেশি কিছু করারও মুশতাকের নেই। যেমনটা নেই পেস বোলিং কোচ শন টেইটেরও। তাইতো সোজাসাপ্টা উত্তর দিলেন, ‘‘আমি নির্বাচক নই যে কাউকে দলে নেব।’’ 

আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির জন‌্য তাকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি দলে নেওয়া হয়েছিল। এর আগেই তার টেস্ট ও ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল। শেষ ম‌্যাচেও তাকে রাখা হয়েছে স্কোয়াডে। কিন্তু খেলার সুযোগ হবে কিনা নিশ্চিত নন মাহিদুলও।

এর মধ‌্যে আবার স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে। যাকে নিয়ে রীতিমত উত্তাপ, বিতর্ক, টালমাটাল হয়ে গেছে দেশের ক্রিকেট। নির্বাচকরা মাহিদুলকে দলে নিয়েছেন। শামীমকে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিনায়ক শামীমকে দলে চেয়েছিলেন। কেন বাদ পড়েছিলেন সেই কারণটা লিটন জানতেন না। সংবাদ সম্মেলনে বোমা ফাঁটানোর পর দুই মেরুতে চলে যান অধিনায়ক ও নির্বাচকরা। 

যাকে ঘিরে এতো কিছু, শামীমের পরিবর্তে নেওয়া মাহিদুল কি শেষ ম‌্যাচে সুুযোগ পাবেন। টেইট বাড়তি এক লাইন যোগ করেছিলেন, ‘‘‘যারা দল ঠিক করে, তাদের জিজ্ঞেস করুন।’’ বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে দল দেন শুধু নির্বাচকরা। একাদশ তৈরি করেন কোচ ও অধিনায়ক। তবে উপমহাদের বাইরের সেই রীতি অনেকটাই পরিবর্তিত। 

শন টেইট যেই জায়গা থেকে এসেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় দল বাছাই, একাদশ গঠনে নির্বাচকরা বড় ভূমিকা রাখেন। দল বাছাইয়ে অধিনায়ক ও কোচেরও থাকে ভূমিকা। এখানে সব কিছুই অধিনায়ক-কোচ কেন্দ্রিক। তৃতীয় ম‌্যাচে মাহিদুল কিংবা শামীমের খেলাটা নির্ধারণ করবেন তারাই। 

তবে মাহিদুল নিজের কাজ করে রাখছেন। গতকাল দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া শামীমও তাই। দুজন আজ চট্টগ্রামে কড়া রৌদ উপেক্ষা করে টানা ব‌্যাটিং করেছেন নেটে। মাহিদুল দুই দফা নেটে ঘাম ঘরিয়েছেন। সেন্টার উইকেটে চলে তার প্রস্তুতি। আর শামীম ড্রেসিংরুমের কোনে পশ্চিমের নেটে অনুশীলন শেষে উল্টো পাশে এসে আশরাফুলের থ্রো ডাউন খেলেছেন।

শামীম, মাহিদুল কেউই ফর্মে নেই। নির্বাচকরা তাকে পারফরম‌্যান্সের কারণেই দল থেকে বাদ দিয়েছিল। সবশেষ পাঁচ ইনিংসে ১, ১, ০, ৩৩, ০ এই রান করেছেন শামীম। এর আগে কার্যকরী ইনিংস ছিল। কিন্তু দল থেকে বাদ পড়ার পর যথেষ্ট কারণ ছিল।

মাহিদুল কোথায়, কবে রান করেছেন সেটাও প্রশ্ন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। বছরখানেক আগে বিপিএলে তার উল্লেখযোগ‌্য পারফরম‌্যান্স নেই। এ বছর ২৪ ইনিংস খেলে তার কোনো ফিফটি নেই। সেই ব্যাটসম্যানকেই নেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলে। কাতারে রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টে ৫ ইনিংসে ১১৬ রান করেছেন। ফাইনালে প্রথম বলে রিভার্স সুইপ করে দলকে ডুবিয়ে আসেন।

প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বকাপের আগে শেষ ম‌্যাচে কাকে খেলাবে বাংলাদেশ? নাকি দুজনই থাকবে ডাগআউটে! প্রস্তুতিতে স্পষ্ট কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। পরিশ্রমে দুজনই দুজনকে টেক্কা দিয়েছেন। সেরা একাদশে কে থাকবেন সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ