নদীপাড়ের ফাটল দিয়ে পড়ছে পানি, রোগ নিরাময়ের আশায় পান করছেন অনেকে
Published: 13th, May 2025 GMT
জয়পুরহাটে ছোট যমুনা নদীর পাড়ের ফাটল দিয়ে আসা পানি নিয়ে এলাকায় কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে অলৌকিক ভেবে রোগ নিরাময়ের আশায় সেখান থেকে পানি সংগ্রহ ও পান করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে অপরিশুদ্ধ ওই পানি পানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সদর উপজেলার কুঠিবাড়ি পুরোনো সেতুর দক্ষিণ পাশের একটি পিলারের নিচে ফাটল দিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই পানি বের হচ্ছে। খবর পেয়ে প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করছেন লোকজন। আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। তবে পানির উৎস সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি।
ছোট যমুনা নদীর কুঠিবাড়ি এলাকায় পাশাপাশি দুটি সেতু আছে। নতুনটি চালু হওয়ার পর পুরোনো সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো সেতুর দক্ষিণ পাশের পিলারের কাছে একটি ছোট ফাটল দিয়ে পানি বের হচ্ছে। এর মুখে বসানো হয়েছে আড়াই হাত লম্বা একটি ডোঙা (গোলাকার টিনের পাত), যার ভেতর দিয়ে পানি নদীতে পড়ছে। আর সেখানে বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোর ও নারী বোতল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা ডোঙার মুখে বোতল ধরে পানি সংগ্রহ করছেন। ডোঙা দিয়ে কখনো স্বচ্ছ, আবার কখনো বালু বা ময়লাযুক্ত পানি নদীতে পড়ছে। তবে সুড়ঙ্গের পেছনে নদীর বাঁধ এবং আশপাশের জায়গা শুকনো আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, তাঁরা এক সপ্তাহ আগে সেখানে পানি আসতে দেখেন। পরে এক তরুণ সুড়ঙ্গের মুখে ডোঙা লাগিয়ে দেন। এতে পানি সরাসরি নদীতে পড়ছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় নারী-পুরুষেরা সেখানে আসেন। তাঁরা ‘অলৌকিক’ পানি ভেবে তা বোতলে ভরে নিয়ে যান।
গতকাল সোমবার সেখানে পানি সংগ্রহ করতে এসেছিলেন লিপি বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, অনেকেই এই ‘অলৌকিক’ পানি পান করে সুস্থ হয়েছেন বলে শুনতে পেয়েছেন। তাঁর ছোট মেয়ে অসুস্থ। তাই পানি নিতে এসেছেন। আপাতত তিনি দুই বোতল পানি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে কুঠিবাড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এটি অলৌকিক কিছু নয়। পাড়ের মাটিতে বালু আছে। বালু থেকে জোয়ারের পানি পড়ছে বলে আমার ধারণা। রোগ নিরাময়ে লোকজন এসে বোতলে এই পানি ভরে পান করছেন। তবে কারও রোগ নিরাময়ের হয়েছে বলে এখনো শুনিনি। তারপরও প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে পানি নিয়ে যাচ্ছেন।’
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, এই পানি অপরিশুদ্ধ। কেউ পানি পান করলে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া-কলেরা-টাইফয়েড ও জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারেন। তিনি ঘটনাটি থানা-পুলিশকে জানাবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অল্প তেলে রান্না
প্রতিটি রেসিপি এক নতুন সৃজনশীল ভাবনার প্রকাশ, যেখানে সামান্য তেলেই লুকিয়ে থাকে পরিপূর্ণ স্বাদের জাদু। স্বাস্থ্যবান থাকা মানেই যে স্বাদহীন খাবার খেতে হবে– এ ধারণা ভাঙতে ‘অল্প তেলে রান্না’ নিয়ে রেসিপি তৈরি করেছেন আলিফ’স ডেলিকেট ডিসেজের শেফ আলিফ রিফাত
রুই মাছ দিয়ে পটোল-আলুর ঝোল
উপকরণ: রুই মাছ ৪ টুকরা, আলু ২টি লম্বা করে কাটা, পটোল ৪টি লম্বা করে কাটা, টমেটো ২টি লম্বা করে কাটা, পেঁয়াজ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ বাটা ১/২ চা চামচ, শুকনামরিচ বাটা ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ আস্ত ২-৩টি, ধনিয়া পাতা ১ মুঠো, জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, তেল ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: সব মসলা দিয়ে মাছ মাখিয়ে রাখতে হবে। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে মসলা মাখানো মাছ দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। কষানো হলে মাছ একটা পাত্রে তুলে রাখতে হবে। এবার ওই মসলায় আলু-পটোল, টমেটো দিয়ে কষাতে হবে। কষানো হলে ২ কাপ গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সবজি সেদ্ধ হয়ে পানি আধা হয়ে গেলে কষানো মাছ, জিরা ও ধনিয়া পাতা দিয়ে ১ মিনিট জ্বাল দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
চিংড়ি মাছে শাজিনা শাক
উপকরণ: শজিনা শাক ২ কাপ, চিংড়ি মাছ ১-২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১-২ কাপ, রসুন কুচি ১/৪ কাপ, কাঁচামরিচ ৩-৪টি, লালমরিচ ২-৩টি, হলুদ গুঁড়া ১-২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: লবণসহ শজিনা পাতা গরম পানিতে ৩ মিনিট সেদ্ধ করে ছেঁকে নিতে হবে। শাক কাঁচামরিচের সঙ্গে বেটে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে ১ চা চামচ তেল দিয়ে লালমরিচ ভেজে তুলে নিতে হবে। এবার পেঁয়াজ-রসুন ও চিংড়ি মাছ দিয়ে ভাজতে হবে। নরম হয়ে এলে হলুদ গুঁড়া ও শাক দিয়ে কষাতে হবে। কষাতে কষাতে যখন পানি শুকিয়ে পোড়াপোড়া ভাব হবে, তখন ভেজে রাখা শুকনা মরিচ হাত দিয়ে ভেঙে শাকের সঙ্গে মিশিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।
দোমাছা লতি পাতুরি
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ১/৩ কাপ, লইট্টা শুঁটকি ১/৩ কাপ, রসুন কুচি ১/৪ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ, লতি কাটা ১ কাপ, কাঁচামরিচ ফালি ৩-৪টি, শুকনামরিচ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া সামান্য, লবণ স্বাদমতো, লাউপাতা প্রয়োজন মতো, সরিষার তেল ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: লইট্টা মাছ কুটে বেছে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে ১ ঘণ্টার মতো। এবার লতি লবণ পানিতে ভাপিয়ে নিতে হবে ২-৩ মিনিট। পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এবার শুঁটকি, চিংড়ি মাছসহ সব মসলা দিয়ে ভালো করে মেখে নিতে হবে পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে। মাখানোর ফলে পানি ছাড়বে। এ পানিতেই রান্না হবে পাতুরি। এবার লতিও মাখিয়ে নিতে হবে। পাতা বিছিয়ে তার ওপর তেল ব্রাশ করতে হবে। তারপর মাখানো লতি-শুঁটকি মাছ দিয়ে ওপরে আবার তেলে ব্রাশ করা পাতা বিছিয়ে ভালো করে মুড়ে নিয়ে সুতা দিয়ে বেঁধে নিতে হবে। পরে একটা ফ্রাইপ্যানে তেল ব্রাশ করে তাতে পাতুরি রেখে ঢেকে রান্না করতে হবে। উলটেপালটে ১৫-২০ মিনিটের মতো রান্না করতে হবে। পাতা যেন শুকিয়ে যায় এ জন্য মাঝেমধ্যে পানির ছিটা দিতে হবে। গরম ভাতে লেবু সহযোগে খেতে অমৃত এ অল্প তেলের দোমাছা লতি পাতুরি।