আইপিএল ছেড়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কি খেলতে পারবেন দক্ষিণ আফ্রিকার আট ক্রিকেটার
Published: 14th, May 2025 GMT
আইপিএলে দক্ষিণ আফ্রিকার এমন আটজন খেলোয়াড় আছেন, যাঁরা ডাক পেয়েছেন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের জন্য ঘোষণা করা প্রোটিয়া স্কোয়াডে। আইপিএলে খেলতে এই আট খেলোয়াড়কে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ) প্রাথমিক যে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিয়েছিল, সে অনুযায়ী ২৫ মের মধ্যে তাঁদের ভারত ছাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনআইপিএলের মতো পিএসএলও শনিবার পুনরায় শুরু২১ ঘণ্টা আগেগুজরাট টাইটানসের কাগিসো রাবাদা, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর লুঙ্গি এনগিডি, দিল্লি ক্যাপিটালসের ত্রিস্তান স্টাবস, লক্ষ্মৌ সুপারজায়ান্টসের এইডেন মার্করাম, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের রায়ান রিকেলটন, করবিন বশ, পাঞ্জাব কিংসের মার্কো ইয়ানসেন এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের উইয়ান মুল্ডার ২৫ মের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরবেন। এরপর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে ৩০ মে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বাকি খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁরা ইংল্যান্ডের পথে উড়াল দেবেন। লর্ডসে ১১ জুন অনুষ্ঠিত হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল।
ঝামেলা হলো, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে স্থগিত হওয়া আইপিএল পুনরায় শুরু করতে নতুন যে সূচি তৈরি করা হয়েছে, সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার এই আট ক্রিকেটারের ২৫ মের মধ্যে দেশে ফেরার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নতুন সূচিতে আইপিএলের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ৩ জুন। তার আগে ২৯ মে হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার, ৩০ মে এলিমিনেটর, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১ জুন। অর্থাৎ প্লে–অফে খেলতে পারবেন না দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়েরা। ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, এ বিষয়ে সমাধান খুঁজতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সিএসএ এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালকে গুরুত্ব দিয়ে এই আট খেলোয়াড়ের অনাপত্তিপত্রের (এনওসি) মেয়াদ ৩ জুন পর্যন্ত না বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিসিসিআই সেটা বুঝবে বলে আশা করছে সিএসএ। তবে সিএসএ এই শঙ্কাও করছে, এতে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনকোহলির অবসর নেওয়ার পেছনে এটাই তাহলে কারণ১৮ ঘণ্টা আগেটেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের স্কোয়াড ঘোষণার পর জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ শুকরি কনরাড বলেছেন, ‘আইপিএল-বিসিসিআইয়ের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি ছিল, ফাইনাল যেহেতু ২৫ মে, তাই আমাদের খেলোয়াড়েরা ২৬ মে ফিরে আসতে পারবে। এতে ৩০ মে উড়াল দেওয়ার আগে তারা একটু সময় পাবে।’ এবার আইপিএলের পুরোনো সূচি অনুযায়ী, ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২৫ মে।
কনরাড জানিয়েছেন, দুই দেশের বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কনরাড সরাসরি এ কথাও বলেছেন, ‘২৬ মে আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের ফেরত চাই। আশা করি, এটার বাস্তবায়ন ঘটবে।’
৩১ মে ইংল্যান্ডে পা রাখবে দক্ষিণ আফ্রিকা দল। ৩ জুন ইংল্যান্ডে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা দল।
গুজরাট টাইটান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ানস প্লে–অফে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছে। সুযোগ আছে দিল্লি ক্যাপিটালসেরও। লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস প্লে–অফের দৌড় থেকে বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে এবং সানরাইজার্স আগেই ছিটকে পড়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট স ট চ য ম প য়নশ প অন ষ ঠ ত র ফ ইন ল স এসএ
এছাড়াও পড়ুন:
জুমার নামাজ কত রাকাত
জুমার নামাজ ইসলামের একটি বিশেষ ইবাদত, যা মুসলমানদের সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন শুক্রবারে জামাতের সঙ্গে আদায় করা হয়। কোরআনে জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
এ আয়াত থেকে জুমার নামাজের তাৎপর্য স্পষ্ট। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, জুমার নামাজ কত রাকাত? আমরা জুমার নামাজের রাকাত সংখ্যা, এর ইসলামি বিধান, সুন্নাহ ইত্যাদি বিস্তারিত আলোচনা করব।
জুমার নামাজের রাকাতসংখ্যাজুমার নামাজের রাকাতসংখ্যা ইসলামি শরিয়াহ দ্বারা সুনির্দিষ্ট। এটি জোহর নামাজের পরিবর্তে শুক্রবার আদায় করা হয়। রাকাতসংখ্যা নিম্নরূপ—
ফরজ নামাজ: জুমার ফরজ নামাজ দুই রাকাত। এটি জামাতের সঙ্গে মসজিদে ইমামের নেতৃত্বে আদায় করা হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জুমার নামাজ দুই রাকাত, যা জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৭৬)
এই ফরজ নামাজ জোহরের চার রাকাত ফরজের স্থলাভিষিক্ত হয়।
আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫সুন্নাত নামাজ: চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা (জোরালো সুন্নত), যা জুমার ফরজ নামাজের আগে পড়া হয়। চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও দুই রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা (ঐচ্ছিক সুন্নত) পড়া যায়। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৫২৩)
মোট রাকাত: সাধারণ অনুসরণ অনুযায়ী, জুমার নামাজের সম্পূর্ণ রাকাতসংখ্যা হলো ১২।
জুমার আগে: চার রাকাত (সুন্নাত)
ফরজ: দুই রাকাত (জামাতে)
জুমার পরে: চার রাকাত (সুন্নাত) + দুই রাকাত (ঐচ্ছিক সুন্নত)
হানাফি মাজহাবে জুমার পর চার রাকাত সুন্নাতকে জোর দেওয়া হয়। তবে শাফিঈ মাজহাবে জুমার পর দুই রাকাত সুন্নাতও পড়া যায়। হাদিসে উল্লেখ আছে, নবীজি (সা.) জুমার পর দুই রাকাত পড়তেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৮১)
তবে পরবর্তী সাহাবিরা চার রাকাত পড়েছেন বলেও প্রমাণও রয়েছে।
জুমার নামাজের কাঠামোজুমার নামাজের কাঠামো নিম্নরূপ—
আজান ও খুতবা: জুমার নামাজের আগে দুটি আজান দেওয়া হয়। প্রথম আজান জুমার সময় শুরুর ঘোষণা দেয় এবং দ্বিতীয় আজান (ইকামত) ফরজ নামাজের ঠিক আগে। এর মধ্যে ইমাম দুটি খুতবা প্রদান করেন, যা জুমার নামাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। খুতবায় কোরআনের আয়াত, হাদিস ও ইসলামি শিক্ষা প্রদান করা হয়।
চার রাকাত সুন্নাত: মসজিদে প্রবেশের পর অনেকে চার রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়েন। এটি হানাফি মাজহাবে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে বিবেচিত।
দুই রাকাত ফরজ: জামাতের সঙ্গে ইমামের নেতৃত্বে দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়।
চার+দুই রাকাত সুন্নাত: ফরজ নামাজের পর চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও দুই রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা পড়া হয়।
আরও পড়ুনবেতের নামাজ পড়ার নিয়ম০৮ জুলাই ২০২৫জুমার নামাজের গুরুত্বজুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য একটি ফরজ ইবাদত, যা শুধু পুরুষদের জন্য জামাতের সঙ্গে আদায় করা বাধ্যতামূলক, যদি তাঁরা সুস্থ ও সক্ষম হন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অলসতা বা উদাসীনতার কারণে টানা তিন জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, তার হৃদয়ে আল্লাহ মোহর মেরে দেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১০৫২)
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে তা কবুল করা হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯৩৫)
জুমার নামাজে সতর্কতাজুমার নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
জামাতের গুরুত্ব: জুমার নামাজ জামাত ছাড়া আদায় করা যায় না। যদি কেউ মসজিদে যেতে না পারেন (যেমন অসুস্থতার কারণে), তবে তাঁর জন্য জোহর নামাজ পড়া ফরজ।
খুতবার সময় নীরবতা: খুতবার সময় কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকা নিষিদ্ধ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি খুতবার সময় কথা বলে, তার জুমার নামাজ বৃথা যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)
পরিচ্ছন্নতা: জুমার নামাজের আগে গোসল করা, পরিষ্কার কাপড় পরা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নাহ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৮০)
নারীদের জন্য: হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, নারীদের জন্য জুমার নামাজ ফরজ নয়, তবে তাঁরা চাইলে মসজিদে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। না পড়লে তাঁরা জোহরের চার রাকাত ফরজ আদায় করবেন। (ইবনে হাজার আসকালানি, ফাতহুল বারি, পৃষ্ঠা: ২/৩৯৫, দারুল মা’রিফা: ১৯৮৯)
জুমার নামাজ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সামাজিক সংহতি বাড়ায়। খুতবার মাধ্যমে মুসলমানরা ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা পান, যা তাঁদের জীবনকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করে।
আরও পড়ুনজুমার নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব০৬ মার্চ ২০২৫