চালু হতে যাওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে অভিবাসীদের নিয়ে কর্মরত ২৩টি বেসরকারি সংগঠন। পুরোনো অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটার সুযোগ যাতে তৈরি না হয়, সরকার সেই চেষ্টা করবে বলে আশা করছে সংগঠনগুলোর।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথাগুলো বলেছে রামরু, ব্র্যাকসহ ২৩ সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)।

এতে বলা হয়, কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে এজেন্সি বাছাইয়ের দায়িত্ব মালয়েশিয়ার হাতে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানি ও বাংলাদেশের কিছু এজেন্সি মিলে সিন্ডিকেট তৈরি হয়। এই সিন্ডিকেটের কারণে কর্মী পাঠানোর ব্যয় বেড়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দাঁড়ায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আগেকার বিভিন্ন অনিয়মের প্রসঙ্গে টেনে বলা হয়, আগে চাকরির সব নিয়োগপত্রও যথাযথ ছিল না। কেউ কেউ গিয়ে চাকরি পাননি। কর্মহীন অবস্থায় বিদেশে অনাহারে-অর্ধাহারে, অথবা দেশ থেকে টাকা নিয়ে জীবন নির্বাহ করেছেন অনেকেই। এবার কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে খরচ কমানোর দিকে এবং সে দেশে গিয়ে যেন চাকরি পান। সিন্ডিকেট তৈরির আগে নিয়োগকর্তার খরচে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিত মালয়েশিয়ার কিছু কোম্পানি। এখন তারা আর কর্মী নিতে পারছে না। সিন্ডিকেটের বেআইনি ফি ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা শোভন কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বিসিএসএম বলছে, ২০ বছর ধরে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারটা সব সময় অস্থিতিশীল। এটি একবার খোলে, আবার বন্ধ হয়, আবার খোলে। বন্ধ হওয়ার পেছনে দায়ী অব্যবস্থাপনা। এই অব্যবস্থাপনা রয়েছে দুই দেশেই। কোরিয়া ও জাপানে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম কখনো হয়নি। মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারকের ভেতরেই অব্যবস্থাপনার বীজ রোপিত রয়েছে। সিন্ডিকেট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে গরিব মানুষের রক্তঝরা টাকা শোষণের জন্য।

প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার খুলতে যাচ্ছে। এবারের চুক্তিতে যাতে শ্রমিকের স্বার্থ দৃঢ়ভাবে সুরক্ষিত হয়, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

আরও পড়ুনমালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট চান না বায়রার সদস্যরা, মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা২১ এপ্রিল ২০২৫

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে মালয়েশিয়ায় আছে। তাঁদের কাছে বিসিএসএম সুপারিশ করেছে, অন্য ১৪টি দেশ থেকে মালয়েশিয়া যেভাবে কর্মী নেয়, বাংলাদেশ থেকে একই প্রক্রিয়ায় কর্মী নিতে দেশটির সরকারকে রাজি করানোই হবে এবারের সরকারি প্রতিনিধিদলের মূল লক্ষ্য। খরচ কমিয়ে এবং সে দেশে গিয়ে চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা অর্জন হবে এই প্রতিনিধিদলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। এ ছাড়া সমঝোতা স্মারকের একটি ধারা বাদ দিতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি প্রদান, সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা এবং সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় মিলে সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সমঝ ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা এখন গাজীপুরের তাসনিয়া ফেব্রিকস

গাজীপুরের তাসনিয়া ফেব্রিকস লিড সনদে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি অর্জন করেছে। কারখানাটির প্রশাসনিক ভবন ১১০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ১০৭।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে ৮ মে এই পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে তাসনিয়া ফেব্রিকসের প্রশাসনিক ভবন। একই দিন তাসনিয়া ফেব্রিকসের পোশাক কারখানা ভবনও পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে। এই স্থাপনার প্রাপ্ত নম্বর ১০৬।

এত দিন গাজীপুরের এসএম সোর্সিং বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা ছিল। এখন সেই স্থান দখল করে নিয়েছে তাসনিয়া ফেব্রিকসের প্রশাসনিক ভবন। তাদেরই আরেকটি স্থাপনা (তাসনিয়া ফেব্রিকসের পোশাক কারখানা) এমএস সোর্সিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা।

বিজিএমইএ আজ মঙ্গলবার দুটি তৈরি পোশাক কারখানার তিনটি স্থাপনার পরিবেশবান্ধব সনদ পাওয়ার তথ্য জানায়। সনদ পাওয়া অন্য কারখানাটি হচ্ছে মির্জাপুরের কমফিট গোল্ডেন লিফ। সেটির প্রাপ্ত নম্বর ৮০।

ভবন নির্মাণ শেষ হলে লিড সনদের জন্য আবেদন করতে হয়। এমনকি পুরোনো ভবন সংস্কার করেও সনদের জন্য আবেদন করা যায়। এ সনদ পাওয়ার ৯টি শর্ত পরিপালনে মোট নম্বর হলো ১১০। এর মধ্যে কোনো কারখানা ৮০ নম্বরের বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ এবং ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ মেলে।

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বর্তমানে লিড সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব কারখানা ২৪৩টি। তার মধ্যে ১০১টি লিড প্লাটিনাম, ১২৮টি গোল্ড, ১০টি সিলভার এবং ৪টি কারখানা সার্টিফায়েড সনদ পেয়েছে।

বিজিএমইএ জানায়, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পরিবেশবান্ধব ১০টি কারখানার ৯টিই এখন বাংলাদেশে। সেগুলো হচ্ছে, তাসনিয়া ফেব্রিকসের প্রশাসনিক ভবন, এসএম সোর্সিং ও তাসনিয়া ফেব্রিকসের পোশাক কারখানা ভবন, গ্রিন টেক্সটাইল, নিট এশিয়া ও ইন্টিগ্রা ড্রেসেস, রেমি হোল্ডিংস ও ফতুল্লা অ্যাপারেলস। একটি প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচয় গোপন রেখেছে।

বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ইউএসজিবিসি। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসজিবিসি যে সনদ দেয়, সেটির নাম ‘লিড’। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে প্রতিটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ করা থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা এখন গাজীপুরের তাসনিয়া ফেব্রিকস