একসময় অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে অ্যাপ সাইডলোড ছিল একধরনের রোমাঞ্চ। ২০১২ সালে স্যামসাং গ্যালাক্সি ইয়াং ডুয়োস ফোন হাতে পাওয়ার পর এক ব্যবহারকারী নিজেই বুটলোডার আনলক করে কাস্টম রিকভারি ইনস্টল করেছিলেন। কাস্টম রম ফ্ল্যাশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাপ ও গেম সাইডলোড করা ছিল তাঁর নিত্যদিনের অভ্যাস। কিন্তু এক দশক পর ২০২৫ সালে এসে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি বদলে গেছে। এখন তাঁর হাতে আছে ওয়ানপ্লাস ১৩-এর মতো আধুনিক স্মার্টফোন। এ ফোন অ্যান্ড্রয়েডচালিত হওয়ায় সাইডলোডের সুযোগ এখনো আছে। কিন্তু সেই আগ্রহ আর নেই। উল্টো সাইডলোড এখন একধরনের ঝুঁকি বলেই মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। এ অভিজ্ঞতা এখন অনেক পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরই।

অ্যান্ড্রয়েড এখন অনেক বেশি উন্নত হলেও সাইডলোড করা অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষতিকর সফটওয়্যার যন্ত্রে প্রবেশের আশঙ্কা পুরোপুরি কাটেনি। গুগল এখন অ্যাপ সাইডলোডের ক্ষেত্রে একাধিক অনুমতির ধাপ রেখেছে। ব্যবহারকারীদের নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যেই এসব ‘গার্ডরেল’ রাখা হয়েছে। যদিও প্লে প্রোটেক্ট প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ক্ষতিকর অ্যাপ শনাক্তের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে, তবু কিছু অ্যাপ এখনো কৌশলে সেই সুরক্ষা এড়িয়ে যেতে সক্ষম।

একজন অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর মতে, ‘আগে যেখানে সাইডলোড মানে ছিল নতুন কিছু চেষ্টা করা, এখন সেটি নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে পরিণত হয়েছে।’ একসময় স্মার্টফোন ব্যবহারের পরিধি সীমিত ছিল ফোনকল, বার্তা কিংবা গেম খেলার মধ্যে। এখন স্মার্টফোন একাধারে ব্যাংকিং, পরিচয় যাচাই, অফিশিয়াল কাজ, ব্যক্তিগত ফাইল সংরক্ষণ ও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

ফলে ভুল করে ইনস্টল করা একটি অ্যাপের মাধ্যমে পুরো যন্ত্রের জন্যই হুমকি হতে পারে। ফলে ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত ছবি, পরিচয়পত্র বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। একজন ব্যবহারকারী বলছেন, ‘আগে সাইডলোড করতাম প্রিমিয়াম ফিচার ফ্রিতে পাওয়ার জন্য। এখন বুঝি, সামান্য সুবিধার জন্য নিজের পুরো ডিজিটাল নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলা ঠিক নয়।’

এ ছাড়া এখন হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, স্পটিফাইয়ের মতো অনেক জনপ্রিয় অ্যাপের নীতিমালা আগের চেয়ে কঠোর হয়েছে। এসব প্ল্যাটফর্ম এখন অ্যাপের কোনো পরিবর্তিত বা অননুমোদিত সংস্করণ ব্যবহার করলেই ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে পারে।

ফলে ব্যক্তিগত ডেটা হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘সাইডলোড করে টাকা বাঁচালেও যদি তাতে হাজার টাকার অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যায়, তাহলে সেই সাশ্রয় কোনো কাজেই আসে না।’ অবশ্য কিছু নির্ভরযোগ্য মাধ্যম এখনো প্লে স্টোরের বাইরেও অ্যাপ সরবরাহ করে। তবে এমন ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের সব সময় অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকেই অ্যাপ ডাউনলোড করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব যবহ র এখন অ

এছাড়াও পড়ুন:

আপনি কি পিকক প্যারেন্ট? মিলিয়ে নিন বৈশিষ্টগুলো

সন্তান লালন–পালনের নানান ধারার কথা শোনা যায় আজকাল, তবে সব ধারাই শিশুর জন্য ইতিবাচক নয়। ‘পিকক প্যারেন্টিং’ এমন একটি ধারা। নিজের অজান্তেই হয়তো এই ধারার চর্চা করে সন্তানের ব্যক্তিত্বের বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন আপনি। কারা পিকক প্যারেন্ট, কী তাঁদের বৈশিষ্ট্য, আর কীভাবেই–বা এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসা যায়, শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক ও যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক।

নার্সিসিস্ট বা আত্মপ্রেমী একজন মানুষ যখন সন্তান লালন–পালন করেন, তখন তিনিই হয়ে ওঠেন পিকক প্যারেন্ট। সন্তানকে সব জায়গায় সেরা দেখতে চান তিনি। সন্তান লালন–পালনের বিষয়ে নিজের ধারণার বাইরে যেতে চান না। অন্য কারও পরামর্শ গ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নিজেকেই গুরুত্ব দেন সবচেয়ে বেশি। ভাবেন, তিনিই সেরা। সন্তান লালন–পালনেও সেই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটে। বুঝতেই পারছেন, নিজেকে জাহির করার প্রবণতা থাকে তাঁর মধ্যে। নিজের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অন্যের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে চান। অন্যের আবেগের গুরুত্ব খুব একটা থাকে না এ ধরনের মানুষের কাছে। অভিভাবক হিসেবে সন্তানের আবেগের চেয়ে সন্তানকে ‘সেরা’ হিসেবে দেখার প্রতিই জোর দেন তিনি। সাফল্যের জন্য অকারণ চাপ সৃষ্টি করেন তার ওপর। সন্তানকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টাও করেন। সন্তানের সঙ্গে অন্য কারও সুসম্পর্ক দেখলে তাঁর হিংসাও হতে পারে।

সন্তানের ওপর যে প্রভাব পড়ে

সবেতেই ‘সেরা’ হওয়ার প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন। ফলে পিকক প্যারেন্টের সন্তান মানসিকভাবে বেশ চাপে থাকে। অত্যধিক চাপের কারণে হাসি-আনন্দমাখা ঝলমলে শৈশব থেকে সে বঞ্চিত হতে পারে। নিজের সাফল্যের বিষয়ে উদ্বেগ কাজ করতে পারে এমন সন্তানদের মধ্যে। অভিভাবকের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারে সে। সন্তানের ব্যক্তিত্ব বিকাশের ওপরও পিকক প্যারেন্টিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে পারে তার ভাবনার জগৎ। তাই বড় হতে হতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। এমনকি জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য থেকেই বঞ্চিত হতে পারে একজন পিকক প্যারেন্টের সন্তান।

আপনার সঙ্গী কি পিকক প্যারেন্ট?

যদি আপনার সঙ্গীর মধ্যে পিকক প্যারেন্টের বৈশিষ্ট্য থাকে, তাহলে আপনার দায়িত্ব কিন্তু অনেক। একদিকে সঙ্গীকে সাবধানে ধরিয়ে দিতে হবে সন্তান লালন–পালনে তাঁর ভুলগুলো, অন্যদিকে আবার সন্তানের বিকাশ নিশ্চিত করতে তার কোমল মনের বাড়তি যত্নও নিতে হবে, কমাতে হবে তার মনের চাপ। তার ভাবনার জগৎটাকে বিস্তৃত করে দিতে হবে। তার মনের জানালাগুলো আপনাকেই খুলে দিতে হবে।

আরও পড়ুনহেলিকপ্টার প্যারেন্টিং কী, না জেনে সন্তানের ক্ষতি করছেন না তো?২৯ মার্চ ২০২৩নিজের ইচ্ছার চেয়ে সন্তানের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুল্ক ছাড়া বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে আনা যাবে একটি ফোন
  • ব্যাগেজ রুলস সংশোধন: শুল্ক ছাড়া ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার আনা যাবে
  • করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ২৭
  • শরীয়তপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল একজনের
  • নোয়াখালীতে করোনায় চলতি বছরের প্রথম মৃত্যু
  • সিলেটে ফের করোনাক্রান্ত রোগীর মৃত্যু
  • পুত্রবধূকে সিনেট নির্বাচনের প্রার্থী করছেন ট্রাম্প
  • কেমন একাদশ নিয়ে নেতৃত্ব শুরু করবেন মিরাজ
  • আপনি কি পিকক প্যারেন্ট? মিলিয়ে নিন বৈশিষ্টগুলো
  • হাসিতে মিলিয়ে গেল বাঘের আতঙ্ক