নালিতাবাড়ীতে চিকিৎসা পেয়ে জঙ্গলে ফিরল বন্য হাতি
Published: 18th, May 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তের পাহাড়ি জঙ্গলে দুই সপ্তাহ আগে বল্লমের আঘাতে অসুস্থ হয়ে পড়া একটি বন্য হাতিকে চিকিৎসা দিয়েছিলেন বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। আজ রোববার হাতিটিকে খুঁজে আবার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী শমশ্চুড়া পাহাড়ের ঢালে দুই ঘণ্টা ধরে হাতিটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো.
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১ মে দলছুট অসুস্থ একটি বন্য হাতিকে বন বিভাগের প্রচেষ্টায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাতিটিকে আবার চিকিৎসা দিতে গতকাল শনিবার রাতে গাজীপুর সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল সীমান্তবর্তী এলাকায় আসেন। আজ সকাল ছয়টা থেকে বিভিন্ন জঙ্গলে খোঁজাখুঁজির পর দুপুর ১২টার দিকে শমশ্চুড়া পাহাড়ের ঢালে হাতিটির দেখা মেলে। তখন হাতিটিকে চেতনানাশক দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বিশেষ ইনজেকশনের মাধ্যমে হাতিটিকে জাগিয়ে তোলার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হেঁটে জঙ্গলে চলে যায়।
চিকিৎসা অভিযানে অংশ নেন গাজীপুর সাফারি পার্কের ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুর রহমান ভূঁইয়া, ভেটেরিনারি সার্জন সাকিব হোসেন, সহকারী মোস্তফা কামাল, শেরপুর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শাহিন কবির, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. আবদুল্লাহ আল আমিন, মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী ও শমশ্চুড়া বিট কর্মকর্তা মো. কাউসার হোসেন।
বিট কর্মকর্তা কাউসার হোসেন জানান, হাতিটির বয়স ১০ থেকে ১২ বছর। ১ মে হাতিটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। আজ সকাল থেকে ছয় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর হাতিটি শমশ্চুড়া পাহাড়ে ঢালে পাওয়া যায়। হাতিটিকে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করার পর প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী প্রথম আলোকে বলেন, হাতির আঘাত পাওয়া সামনের ডান পায়ের ক্ষতটি পরিষ্কার করে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে জাগিয়ে তোলার পর হাতিটি ধীরে ধীরে জঙ্গলের ভেতরে হেঁটে চলে যায়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন য প র ণ কর মকর ত শমশ চ ড়
এছাড়াও পড়ুন:
অস্বস্তিকর পরিস্থিতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে মো. জসীম উদ্দিনকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ-বদলি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়। যদিও কোনো এক অজানা কারণে নতুন পররাষ্ট্রসচিব নিয়োগের বিষয়ে গতকাল রোববার পর্যন্ত কোনো দাপ্তরিক আদেশ জারি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে সমস্যা। সব মিলিয়ে হযবরল অবস্থা চলছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা গত শনিবার প্রথম আলোকে জানান, শনিবার দুপুরে জসীম উদ্দিনের উত্তরসূরি বেছে নিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পাঁচ কূটনীতিকের নাম প্রস্তাব করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেছেন। ওই তালিকায় থাকা পাঁচ কূটনীতিকের সবাই বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
গতকাল বিকেলে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, জসীম উদ্দিন আর পররাষ্ট্রসচিব থাকছেন না, তা নিশ্চিত। তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নানা পর্যায়ের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত পররাষ্ট্রসচিব পরিবর্তনকে ঘিরে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে মন্ত্রণালয়ে। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মৌখিক নির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম।
দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের অনুপস্থিতির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকে দৃশ্যমান করেছে বলে মনে করেন ঢাকার কর্মকর্তারা। ১৫ মে টোকিওতে জাপানের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন মো. নজরুল ইসলাম। কর্মকর্তারা বলছেন, এই দুই দেশের সম্পর্কের পাঁচ দশকের মধ্যে এ ধরনের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের পরিবর্তে অন্য কোনো কর্মকর্তার নেতৃত্ব দেওয়ার নজির এবারই প্রথম। গত ১০ দিনে আন্তমন্ত্রণালয়ের কোনো বৈঠকে জসীম উদ্দিন ছিলেন না। বৈঠকগুলোতে সচিব পদমর্যাদার অন্য দুই কর্মকর্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন