অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’, নিহত ৩
Published: 20th, May 2025 GMT
ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরু ভারী বৃষ্টিপাতের পর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মুষলধারে বৃষ্টিপাতে শহরের রাস্তাঘাটে পানি থই থই করছে। সোমবার বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় ১২ বছর বয়সী এক শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের প্রযুক্তি রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের অনেক জায়গায় সোমবার (১৯ মে) ১০০ মিমি (৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ২০১১ সালের পর সর্বোচ্চ।
আরো পড়ুন:
জন্মদিনে বিশালের বিয়ে: ১২ বছরের ছোট কনেকে নিয়ে চর্চা
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়নি: বিক্রম মিশ্রি
আঞ্চলিক আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক সিএস পাতিল বলেছেন, বেঙ্গালুরুর জন্য এটি একটি ‘বিরল’ ঘটনা। শহরের বড় বড় রাস্তাও পানির নিচে ডুবে গেছে। তীব্র জলাবদ্ধতা ও যানজট দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করার পাশাপাশি, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সম্পত্তিরও ক্ষতি হয়েছে।
বেঙ্গালুরুতে বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির অফিস রয়েছে, যাদের অনেকেই তাদের কর্মীদের বন্যার কারণে বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।
সোমবার সকালে শহরের অন্যতম প্রধান আইটি করিডোরে অবস্থিত আই-জেড সফটওয়্যার কোম্পানির কম্পাউন্ড দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ৩৫ বছর বয়সী এক নারী কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মঙ্গলবার আরো প্রাক-বর্ষা বৃষ্টিপাতের জন্য শহরটি উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিটি কর্পোরেশন ২১০টি বন্যাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে, যেখানে পরিস্থিতির ‘উন্নতি’ করার জন্য তারা দিনরাত কাজ করছে।
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু। বর্তমানে রাজ্যটি কংগ্রেস শাসিত। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি স্থানীয় সরকারকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে লাখ লাখ রুপি ব্যয় করার পরেও শহর ও রাজ্যে বৃষ্টিপাতজনিত সমস্যা মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ করেছে।
বিজেপি ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য অবিলম্বে ১০ বিলিয়ন রুপি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে।
তবে রাজ্য সরকার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, এগুলো দীর্ঘদিনের সমস্যা। কর্ণাটক রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার সাংবাদিকদের বলেন, “আজ আমরা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি তা নতুন নয়। বিগত সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বছরের পর বছর ধরে এগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে।”
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেঙ্গালুরুতে বন্যা একটি পুনরাবৃত্তিমূলক ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা আংশিকভাবে শহরের হ্রদ এবং জলাভূমির উপর নির্মাণ এবং দুর্বল নগর পরিকল্পনাকে এই সংকটের জন্য দায়ী করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’