সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক সম্রাট নাহিদের সহযোগী কাল্লু গ্রেপ্তার
Published: 21st, May 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জের চিহ্নিত মাদক সম্রাট নাহিদের অন্যতম সহযোগী নাছির ওরফে কাল্লু (৩৪) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শাহীনুর আলম।
এরআগে মঙ্গবার রাত ১১ টায় আদমজী বিহারী ক্যাম্প বালুর মাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত নাছির ওরফে কাল্লু সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকার আব্দুল করিম এর ছেলে।
ওসি মো.
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়। যার মামলা নং-৩৬।
জানাগেছে, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আদমজী নতুন বাজার এলাকার পক্ষি মজিবরের ছেলে নাহিদ এক সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতির অনুসারী ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক মামলার আসামিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মাদক, চাঁদাবাজী, ছিনতাই, মারামারি, লুটতরাজের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে কমপক্ষে ডজন খানেক মামলা। এরপরও অবাধ বিচরণ ও রামরাজত্বে বিষ্ময় প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, নাহিদ বিহারী ক্যাম্প ও নতুন বাজার এলাকায় এক ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করে তুলে। তার রয়েছে মাদক বিক্রির করার কয়েকটি বাহিনী এর মধ্যে রয়েছে কাল্লু, ফেকু, উকিল, ছনুসহ ১০ তেকে ১৫ জন। এসব বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে নাহিদ। এদের দিয়ে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও চাদাঁবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
আদমজী বিহারী ক্যাম্পটি এখন নাহিদের মাদকের স্বর্গরাজ্য। তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন। কেউ যদি প্রতিবাদ করত তাহলে তার ওপরে নেমে আসত পাশবিক নির্যাতন। এরফলে অন্যকারো ইচ্ছা থাকলেও তার বিরুদ্ধে কেউ মূখ খুলার সাহস পায়না।
নাহিদের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদকের প্রায় ডজন খানেক মামলা। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় একদিক হত্যা মামলারও আসামি নাহিদ।
গত ৫ আগস্ট বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হমলা লুটপাটারে ঘটনায়ও নাহিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাদের দাবি নাহিদকে গ্রেপ্তার করে বিচারে মুখোমুখি করার দরকার।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ থ ন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ নিয়ে টালবাহানা চলছে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেমেছিলাম, যে পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিলাম, সেই পরিবর্তন এখনও দেখতে পাচ্ছি না। বরং আমাদের সামান্য যে চাওয়া ছিল, জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ– সেটি নিয়েও টালবাহানা করা হচ্ছে।’
সিরাজগঞ্জ শহরে পথসভা: ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সপ্তম দিন সোমবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকার স্বাধীনতা স্কয়ারে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পর নিরপেক্ষ প্রশাসন চাই, বিচার ব্যবস্থা চাই। আমরা আগে দেখতাম, তারা একটা দলের হয়ে কাজ করত। আমরা চাই না এখনও তারা সেটা করুক। আমরা দেখেছি, আয়নাঘর থেকে শুরু করে কত কিছু করা হয়েছে। তাহলে আমরা বিচার ও সংস্কার ছাড়া কীভাবে নির্বাচনের দিকে যাবো? বিচার না হলে কীভাবে আমরা শহীদ ভাইবোনদের পরিবারের সামনে গিয়ে দাঁড়াব?
সিরাজগঞ্জের সম্ভাবনাময় তাঁতশিল্পকে অবজ্ঞা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামীতে এগুলোকে তুলে ধরা হবে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে।’
আমরা কোনো আপস করব না: পাবনায় পথসভায় নাহিদ ইসলাম: সোমবার রাত ১১টায় পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়ে আয়োজিত পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের স্বার্থে আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। দেশের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা কোনো আপস করব না। জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে থাকবো যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত। পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়েছিলাম। সেই আন্দোলনে আমরা কারও সঙ্গে আপস করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার ভাই-বোনেরা শহীদ হয়েছেন। তাদের শহীদি মর্যাদা ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজন জুলাই সনদ। এই দাবিতে আমরা অনড় অবস্থানে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, ডা. তাসলিমা জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, নাটোর জেলা যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর মান্নাফসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পথসভা শেষে নেতাকর্মীরা কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এর আগে দুপুরে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড়ের স্বাধীনতা চত্বরে পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হলেই হবে না, দেশের মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। সে জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে, গণঅভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যে ভাইবোনেরা নেমে এসেছিল, যেসব মানুষ শহীদ হয়েছিল, তাদের সেই শহীদি মর্যাদা রাষ্ট্রকে দিতে হবে। সংবিধানে স্বীকৃতি থাকতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ।’
নাটোরে এনসিপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। হুঁশিয়ারি দিতে চাই। মাত্র এক বছর আগে কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে যারা ক্ষমতায় দীর্ঘায়িত হতে চেয়েছিল, তাদের আজকের বাংলাদেশে ঠাঁই হয়নি। যদি এখনও আমরা সেই স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন থেকে শিক্ষা না নিই, তবে তাদের পরিণতিও সেই দিকেই যাবে।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার পদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে যান নাহিদ ইসলামসহ এনসিপির অন্য নেতারা। এ ছাড়া এদিন তারা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার কুজাইল বাজার সফর করেন। রোববার নওগাঁ শহরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)