ভারতে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ অভিযানে শীর্ষ মাওবাদী নেতাসহ নিহত
Published: 22nd, May 2025 GMT
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশকে মাওবাদী-মুক্ত করা হবে। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হয়। সেই অভিযানের অংশ হিসাবেই বুধবার (২১ মে) ছত্তিশগড়ে নারায়ণপুরের অবুঝমাঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলির লড়াই চলে।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকা অবুঝমাঢ় মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর ছিল, অবুঝমাঢ়ে লুকিয়ে রয়েছেন এক মাওবাদী কমান্ডার। প্রথমে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে পরে জানা যায়, ওই কমান্ডার হলেন বাসভরাজু।
বুধবার ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ অভিযানের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “দেশকে নকশালবাদ থেকে মুক্ত করতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। আজ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ২৭ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআই-মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভরাজু। নকশালবাদের বিরুদ্ধে তিন দশকের লড়াইয়ে এই প্রথম আমাদের বাহিনীর অভিযানে সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার কোনো মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
চিকেন নেক নিয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ মমতার
মাওবাদী শীর্ষনেতার মৃত্যুর পরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য আমাদের বাহিনীর জন্য গর্ব হচ্ছে। আমাদের সরকার মাওবাদী আতঙ্ক দূর করতে এবং আমাদের জনগণের জন্য শান্তি ও অগ্রগতির জীবন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
গত ২১ এপ্রিল থেকে কারেগুট্টা পাহাড় এলাকায় নতুন করে শুরু হয় মাওবাদী দমন অভিযান ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’র পাশাপাশিছত্তিশগড়ের সশস্ত্র পুলিশ ও ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনী রয়েছে ওই দলে। মাঝে এক দিনের জন্য অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে তারপর এই অভিযান ফের শুরু হয়। মাওবাদী পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মিকে নির্মূল করাই এই অভিযানের উদ্দেশ্য। গত মাসে নিরাপত্তা বাহিনী ৩১ জন মাওবাদী জঙ্গিকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযোগ মিথ্যা, আবেদনের প্রেক্ষিতে অব্যাহতি
অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে দুর্নীতির বিষয়ে অস্বীকার করেছেন স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
দুর্নীতির অভিযোগে তাকে কেউ অব্যাহতি দেননি, তিনি নিজেই আবেদন করে পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বলেও দাবি করেন সাবেক এই এপিএস।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “দুদক ডেকেছে তাই এখানে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নাই। একটি পক্ষ ছাত্রদের টার্গেট করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। যেমন মিডিয়াতে আমার পদত্যাগের বিষয়টি অব্যাহতি হিসাবে এসেছে। আমাকে বিসিএস ভাইভা দিতে হবে, একটা প্রস্তুতির বিষয় ছিল। এ কারণে পদত্যাগ করেছিলাম। আমি ২৫ মার্চ পদত্যাগ করেছি। আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিজ্ঞপ্তি ভুল আকারে এসেছে। আর দুর্নীতির অভিযোগ এরপরে এসেছে।”
এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুদকে আসেন। দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমির নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনকে আজ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়।
ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে।
তাছাড়া একই অভিযোগ উঠে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান ও সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব এ বি এম গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরের বিরুদ্ধেও।
অভিযোগের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য আলাদা টিমও গঠন করা হয়।
অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দুদকে হাজির হতে বলা হয়।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান ও সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবিকে ২০ মে, এনসিপির সাবেক নেতা গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে এবং স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়।
গত ২০ মে নির্ধারিত সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান ও সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবি আসেননি। পরদিন তারা দুদকে হাজির হন। দুদক টিম অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একই দিন হাজির হন এনসিপির সাবেক নেতা গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরও। তিনজনই অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। বরং ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বর্তমান পিও মাহমুদুল হাসান পদত্যাগ করবেন বলেও জানান।
বৃহস্পতিবার মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে তিনি দুদকে হাজির হন। অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক টিমের মুখোমুখি হন।
এর আগে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠলে এই অভিযোগে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দীন তানভীরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে বেনামে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠলে তাকে দল থেকে বাদ দেয় এনসিপি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ