ময়মনসিংহ নগরীতে ছুরিকাঘাতে আরিফ মিয়া (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বলাশপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত আরিফ মিয়া একই এলাকার আব্দুল কাদিরের ছেলে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সাখাওয়াত হোসেন সাগর। তিনিও ওই এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) শফিক উদ্দিন বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে আরিফকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আরিফের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
স্ত্রী-কন্যার সামনেই যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত, ৬ দিন পর মৃত্যু
নিহত আরিফের ভাতিজা দিদার বলেন, “আনুমানিক ৯ জুন রাতে আমার চাচা আক্রাম হোসেন বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় ছিনতাইকারী সাখাওয়াত হোসেন সাগর আমার চাচার পথরোধ করে ছুরি ঠেকিয়ে ৩৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন রেখে দেয়। বিষয়টি জানার পর ১১ জুন আমরা চাচা আরিফকে নিয়ে সাগরের বাড়িতে যাই। সেখানে গেলে সাগর চাচা আরিফকে ছুরিকাঘাত করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। পরে স্থানীয়দের অনুরোধে সালিশে বিষয়টি মিমাংসা হওয়ার কথা ছিল। রবিবার সন্ধ্যায় সাখাওয়াত হোসেন সাগরের সঙ্গে আমার চাচা আরিফের কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায় সাখাওয়াত হোসেন সাগর ছুরি দিয়ে চাচার বুকে আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই চাচা মারা যান।”
দিদার অভিযোগ করেন, “সাখাওয়াত হোসেন সাগর পেশাদার ছিনতাইকারী ও ইয়াবা কারবারি। আমার চাচা আরিফসহ সাখাওয়াত হোসেন সাগর চারজনকে হত্যা করেছে। আমি তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মো.
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য অভ য গ আম র চ চ
এছাড়াও পড়ুন:
ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ, পরে সেপটিক ট্যাংকে মিলল মরদেহ
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারী ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে নিখোঁজ নারীর মুঠোফোন।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারীর নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)। তিনি ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের দাদরা গ্রামের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, দাদরা গ্রামের ফরিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে তাঁরা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ওই নারীর ছোট ভাই মো. ইলিয়াছ ২ জুলাই ফুলপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তারাকান্দায় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি থানায় গিয়ে পরনের কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে আজ শুক্রবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওই নারীর স্বজনেরা জানান, গত রোববার বিকেলে সুফিয়া খাতুন ছাগল বিক্রি করতে ফুলপুর উপজেলার আমুয়াকান্দা বাজারে যান। চার হাজার টাকায় ছাগল বিক্রির পর মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর তিনি দ্বিতীয় স্বামী রইছ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর স্বামী ফুলপুর উপজেলার পাগলা এলাকার বাসিন্দা এবং আমুয়াকান্দার একটি মাদ্রাসায় বাবুর্চির কাজ করেন। রইছ উদ্দিন তাঁকে রাতের খাবার খাইয়ে রাত আটটার দিকে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে তুলে দেন। এরপর সুফিয়া খাতুন এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান। এর পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
নিহত সুফিয়া খাতুনের আগের স্বামীর সংসারে ১২ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান আছে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, ওই নারীর মুঠোফোনটি পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই মুঠোফোনের সূত্র ধরে রোহন মিয়া (৩৫) নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনি দাদরা গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে। যেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়, তার পাশেই রোহনের বাড়ি।
ওসি আরও বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন ওই নারী।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে ফেলা হয় বলে আমাদের ধারণা। আটক হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে নারীর মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভিন্ন সিম লাগিয়ে ফোনটি ব্যবহার করছিলেন তিনি। কারা, কীভাবে, কী কারণে ওই নারীকে হত্যা করেছে, তা জানতে আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’