শ্বাসরোধে হত্যার পর সুফিয়ার লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় রোহান: পুলিশ
Published: 7th, July 2025 GMT
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত পরিচয়ের নারীর গলিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ। নিহত নারীর নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)। শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রোহান মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই নিশ্চিত করে, নিহত সুফিয়া খাতুন ফুলপুর থানার পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে। গত ২৯ জুন সন্ধ্যা থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার ছোট ভাই ইলিয়াস তারাকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে তারাকান্দা থানাধীন দাদরা গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে গলিত মরদেহ পাওয়ার খবর পায় পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে থানা পুলিশ, র্যাব ও সিআইডির পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার একটি দল ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার মো.
তিনি আরও বলেন, ৫ জুলাই রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফুলপুর থানাধীন বেপারী পাড়া এলাকা থেকে আসামি রোহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার রোহান তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ভিকটিম সুফিয়ার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রেমের অভিনয় শুরু করেন। গত ২৯ জুন সুফিয়া তারাকান্দা বাজারে ছাগল বিক্রি করতে এলে রোহান তার সঙ্গে দেখা করেন এবং তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রোহান তার এলাকার গেসু মিয়ার পরিত্যক্ত নির্জন বাড়িতে সুফিয়াকে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। শারীরিক সম্পর্ক শেষে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং তা ঝগড়ায় রূপ নেয়। এক পর্যায়ে সুফিয়া উত্তেজিত হয়ে রোহানকে চড় মারলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে সুফিয়ার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ড গোপন করতে রোহান মরদেহটি পাশের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেয়। এ সময় সুফিয়ার সঙ্গে থাকা ৪ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে রোহান আত্মগোপনে চলে যায়।
পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার সমকালকে বলেন, রোহান এর আগেও একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তার সঙ্গে আরও কেউ সম্পৃক্ততা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ল শ উদ ধ র প ব আই
এছাড়াও পড়ুন:
ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ, পরে সেপটিক ট্যাংকে মিলল মরদেহ
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারী ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে নিখোঁজ নারীর মুঠোফোন।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারীর নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)। তিনি ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের দাদরা গ্রামের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, দাদরা গ্রামের ফরিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে তাঁরা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ওই নারীর ছোট ভাই মো. ইলিয়াছ ২ জুলাই ফুলপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তারাকান্দায় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি থানায় গিয়ে পরনের কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে আজ শুক্রবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওই নারীর স্বজনেরা জানান, গত রোববার বিকেলে সুফিয়া খাতুন ছাগল বিক্রি করতে ফুলপুর উপজেলার আমুয়াকান্দা বাজারে যান। চার হাজার টাকায় ছাগল বিক্রির পর মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর তিনি দ্বিতীয় স্বামী রইছ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর স্বামী ফুলপুর উপজেলার পাগলা এলাকার বাসিন্দা এবং আমুয়াকান্দার একটি মাদ্রাসায় বাবুর্চির কাজ করেন। রইছ উদ্দিন তাঁকে রাতের খাবার খাইয়ে রাত আটটার দিকে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে তুলে দেন। এরপর সুফিয়া খাতুন এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান। এর পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
নিহত সুফিয়া খাতুনের আগের স্বামীর সংসারে ১২ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান আছে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, ওই নারীর মুঠোফোনটি পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই মুঠোফোনের সূত্র ধরে রোহন মিয়া (৩৫) নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনি দাদরা গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে। যেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়, তার পাশেই রোহনের বাড়ি।
ওসি আরও বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন ওই নারী।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে ফেলা হয় বলে আমাদের ধারণা। আটক হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে নারীর মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভিন্ন সিম লাগিয়ে ফোনটি ব্যবহার করছিলেন তিনি। কারা, কীভাবে, কী কারণে ওই নারীকে হত্যা করেছে, তা জানতে আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’