ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার মূল কারণ উদ্‌ঘাটন এবং প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শাহরিয়ারের সহপাঠী-বন্ধুরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ বিভাগের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে তাঁরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে হলপাড়া হয়ে অপরাজেয় বাংলার সামনে অবস্থান নেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা জানিয়েছিলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত তাঁরা তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখবেন। তদন্ত কার্যক্রমে সন্তুষ্ট না হলে এবং মূল খুনিদের বৃহস্পতিবারের মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করবেন।

তবে আজ অবস্থান কর্মসূচি থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও শাহরিয়ারের সহপাঠী মশিউর আমিন প্রথম আলোকে বলেন, রোববারের মধ্যে যদি হত্যার মূল কারণ উদ্‌ঘাটন ও প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার না করা হয়, তাহলে রোববার বা সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করা হবে।

আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যা মামলার অগ্রগতি জানতে উপাচার্যের সঙ্গে সাদা দলের বৈঠক১৭ ঘণ্টা আগে

অবস্থান কর্মসূচিতে মশিউর আমিন বলেন, ‘বলা হচ্ছে, তদন্তের স্বার্থে নাকি অনেক কিছু বলা যাবে না। কিন্তু মনে হচ্ছে, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এটা খুবই দুঃখজনক যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকায় আমরা নিরাপদ নই। আমাদের চাওয়া হলো, হত্যাকারী যেন বাঁচতে না পারে। তাঁর (শাহরিয়ার আলম সাম্য) হত্যাকারীর যেন দ্রুত বিচার হয়। কিন্তু আজ প্রায় ১০ দিন পার হয়ে গেলেও সাম্য হত্যার মূল আসামিকে পুলিশ বা ডিবি গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অথচ হত্যাকারী কে, এটা বের করা আসলে খুব কঠিন কিছু নয়। আসামিদের রিমান্ড শেষ হওয়ার পরও যদি প্রকৃত খুনিকে গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে আমাদের শক্ত অবস্থানে যেতে হবে। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবো।’

আরও পড়ুনসোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিটি গঠন২১ ঘণ্টা আগে

একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল হালিম সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, ‘আমরা সঠিক বিচার চাই। আমরা সাম্যকে হারিয়েছি। সাম্য হয়তো ফিরে আসবে না, কিন্তু কোনো সাম্য যেন আর হত্যার শিকার না হয়, দুর্ঘটনার শিকার না হয়—সেই অবস্থা আমরা আর দেখতে চাই না।’

আরও পড়ুনশাহরিয়ারের খুনিদের গ্রেপ্তার এবং উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হত য ক হত য র প রক ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ