সৌদিতে দুই ভাইকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ
Published: 23rd, May 2025 GMT
গাজীপুরের আপন দুই ভাই সৌদির দাম্মাম শহরের একটি ফ্ল্যাটে খুন হয়েছেন। বুধবার (২১ মে) দাম্মাম শহরের একটি বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করেছেন পুলিশ। এ খবর পেয়ে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহতরা হলেন- কামরুজ্জামান কাকন (২৬) ও কামরুল ইসলাম সাগর (২২)। তারা উত্তর ভুরুলিয়ার আদর্শপাড়ার ব্যবসায়ী মো. মোশারফ হোসেন লম্বরির ছেলে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কামরুজ্জামান কাকন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরির খোঁজ করছিলেন। ঢাকার নয়াপল্টনের সামিয়া ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক বাহার উদ্দিন ২১ লাখ টাকা চুক্তিতে জব ভিসায় কাকনকে কানাডায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন বাবা মোশারফ হোসেন লম্বরির কাছে। ৩ লাখ টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও তিনি কাকনকে কানাডা পাঠাতে পারেননি।
পরে বাহার উদ্দিন ভালো বেতনে ছোট ছেলে সাগরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকায় সৌদি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। রাজি হলে গত বছরের অক্টোবর মাসে সৌদি যায় সাগর। কিন্তু কাজের পরিবর্তে তাকে দাম্মামে একটি ঘরে আটকে রেখে আরো ৪ লাখ টাকা দাবি করেন বাবা মোশরফ হোসেনের কাছে। ছেলের কথা ভেবে আরো ৪ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন তিনি।
টাকা নিয়েও ছেলেকে ভালো চাকরি না দিয়ে খাবার ডেলিভারির কাজ দিয়েছেন তারা। পরে কানাডা পাঠানো জন্য যে ৩ লাখ টাকা দিয়েছিলো তা ফেরত চাইলে বড় ছেলে কাকনসহ দুই ছেলেকে সৌদির মদিনা ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রস্তাব দেন বাহার উদ্দিন।
নতুন করে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কাকনকে সৌদি নিয়ে যান বাহার। সেখানে কাজ না দিয়ে দুই ভাইকে একটি ঘরে আটকে রাখেন।
বিষয়টি জানার পর বাহার উদ্দিন কাকান ও সাগরের বাবা মোশারফ হোসেনকে উমরা ভিসায় সৌদি গিয়ে ছেলেদের দেখে আসার প্রস্তাব দেন।
গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বাহার উদ্দিনের সাথে সৌদি আরব যান মোফারফ হোসেন। এসময় বাবা দুই ছেলেকে কাজের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, তাদের খাবার ডেলিভারির কাজ দেওয়া হয়েছে। ঠিকমত খেতে দেওয়া হয় না। রাখা হয়েছে ছোট্ট ঘরে।
২২ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। ছেলেদের কাগজপত্র ঠিক করার কথা বলে থেকে যান বাহার। আসার সময় বাহার একটি পলিথিন মোড়ানো ব্যাগ দিয়ে ঢাকার ঠিকানায় পৌঁছে দিতে বলেন মোশারফ হোসেনকে। ব্যাগে কী ছিল তিনি দেখেননি।
সৌদি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তল্লাশি করে একটি পুটলি উদ্ধার করে। পরে পুটলি রেখে তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি ফিরে আসার পরদিন বাহার উদ্দিন বাংলাদেশে চলে আসেন। এসেই ব্যাগে থাকা পুটলি ফেরত চান। ইমিগ্রেশন পুলিশ রেখে দিয়েছে জানালে পুটলিতে ১৩ লাখ টাকার সোনা ছিল দাবি করে টাকার জন্য চাপ দেন। কয়েক দফা হুমকিও দেন।
বলেন, টাকা না দিলে সৌদিতে থাকা ছেলেদের ক্ষতি হবে। এসব ঘটনায় তিনি নগরীর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সর্বশেষ ৯ মে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকা থেকে একদল গুণ্ডা ও অস্ত্র নিয়ে মোশারফকে খুঁজতে থাকে। মুখ বেঁধে জিম্মি করে মোশারফরের বৃদ্ধ বাবা আবুল কাশেম লম্বরিকে তুলে নিয়ে যায় এবং দুই ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়।
ঘটনার সময় মোশরফ বাড়িতে ছিলেন না। ৯৯৯ ফোন দিলে সদর থানা পুলিশ আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে।
মোশারফ হোসেন বলেন, “দুই ছেলে ছাড়া তার আর কোন সন্তান নেই। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তাদের কানাডায় পাঠাতে চেয়েছিলাম। কানাডা পাঠানোর স্বপ্নই কাল হয়েছে তার পরিবারের। বুধবার রাত ১২টার পর এক বাংলাদেশি ফোন করে দুই ছেলের হত্যাকাণ্ডের খবর দিয়েছেন।”
পরে সৌদি দূতাবাসের মাধ্যমে জানতে পারেন, মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে দুই ভাই। দুপুরের পর দরজার নিচ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখে ফ্ল্যাট মালিক পুলিশে খবর দেয়। সিসি ফুটেজ দেখে মঞ্জু নামে বাংলাদেশি এক যুবকে পুলিশ সনাক্ত করেছেন। তাকে দিয়েই বাহার তার দুই সন্তানকে খুন করিয়েছেন বলে ধারণা মোশারফ হোসেনের। তিনি দ্রুত সন্তানদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সাহায়তা কামনা করেন।
এদিকে দুই সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা ও স্বজনরা। পরিবারের দাবি পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র প রস ত ব দ ন পর ব র র পর ব
এছাড়াও পড়ুন:
বড় জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরু চ্যাম্পিয়ন পিএসজির
চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাধারী প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) শিরোপা রক্ষার অভিযানে নেমেই দেখাল নিজেদের শক্তি। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে পার্ক দেস প্রিন্সের জমকালো রাতের ম্যাচে আতালান্তাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিল লুইস এনরিকের শিষ্যরা।
মাঠে নেমে ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই প্রথম গোল পায় পিএসজি। ব্র্যাডলি বারকোলার দারুণ পাস থেকে ফাবিয়ান রুইজ বল সাজিয়ে দেন মারকুইনহোসকে। পিএসজির অধিনায়ক নির্ভুল শটে দলকে এগিয়ে নেন ১-০ গোলে।
আরো পড়ুন:
জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের নাটকীয় ম্যাচে জয় পায়নি কেউ
এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়
এরপর আরও কয়েকটা গোল হতে পারত। কিন্তু একবার একেবারে সামনে থেকে শট উড়িয়ে ফেলেন নুনো মেন্ডেস। আরেকবার বারকোলার শট দুর্দান্ত সেভে রক্ষা করেন আতালান্তা গোলরক্ষক মার্কো কার্নেসেচ্চি।
তবুও প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে আক্রমণের ঝড় থামেনি। ৩৯ মিনিটে জর্জিয়ার উইঙ্গার খভিচা কাভারাটস্কেলিয়া ডান দিক থেকে ভেতরে ঢুকে অসাধারণ এক বাঁকানো শটে বল জড়িয়ে দেন জালে। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-০।
বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত পিএসজি। ৪১ মিনিটে মারকুইনহোসকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন আতালান্তার মার্কিন মিডফিল্ডার ইউনুস মুসাহ। তবে বারকোলার নেওয়া দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন আতালান্তার গোলরক্ষক কার্নেসেচ্চি। তাতে ২-০ তে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির ছয় মিনিট পরই ব্যবধান বাড়ে। বারকোলার দারুণ থ্রু বল ধরে বাঁ দিক থেকে নুনো মেন্ডেস এগিয়ে গিয়ে কঠিন কোণ থেকেও ঠাণ্ডা মাথায় শট পাঠান জালে। স্কোর হয় ৩-০।
শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে আসে চতুর্থ গোল। আতালান্তার ক্লান্ত ডিফেন্ডারের ভুল পাস কুড়িয়ে নিয়ে পর্তুগিজ স্ট্রাইকার গনসালো রামোস নির্ভুল ফিনিশে শেষ করেন গোল উৎসব।
গেল মে মাসে ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার ইউরোপ সেরার মুকুট পরেছিল পিএসজি। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন মৌসুমের শুরুতেও লিগে টানা চার ম্যাচ জিতে সবার ওপরে তারা। এবার ইউরোপের মাঠেও দেখাল নিজেদের ভয়ংকর রূপ। জানান দিলো এবারও তারা চ্যাম্পিয়ন হতে চায়।
ঢাকা/আমিনুল