আম্রপালি-রাংগুই আমের অপেক্ষায় রাঙামাটি
Published: 23rd, May 2025 GMT
আর কিছু দিনের অপেক্ষা। তার পরেই পাহাড়ের হাট-বাজারগুলো মাতাবে আম্রপালি ও রাংগুই আম। বর্তমানে রাঙামাটির বাজারে দেশি জাতের আম পাওয়া গেলেও আম্রপালি ও রাংগুই আমের সরবরাহ খুব বেশি নেই। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে রাঙামাটির বাজারে পাওয়া যাবে আম্রপালি ও রাংগুই আম। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে হাট-বাজারগুলো পুরোপুরি দখল করবে এই দুই জাতের আম। রাঙামাটিতে এই দুই জাতের আম বেশি উৎপাদন হয়। মোট আম উৎপাদনের প্রায় ৮০ ভাগই আম্রপালি ও রাংগুই।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাঙামাটির ১০ উপজেলায় ৩ হাজার ৬২৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি সদরে ৪৬৮ হেক্টর, নানিয়ারচর উপজেলায় ৪০২ হেক্টর, কাউখালী উপজেলায় ২৮৫ হেক্টর, বরকল উপজেলায় ২৮৭ হেক্টর, জুরাছড়ি উপজেলায় ৩২৯ হেক্টর, লংগদু উপজেলায় ৪৩৫ হেক্টর, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৩২৫ হেক্টর, কাপ্তাই উপজেলায় ৭৫৪ হেক্টর, রাজস্থলী উপজেলায় ১৭৮ হেক্টর এবং বিলাইছড়ি উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে।
এরইমধ্যে যারা বাজারে আম নিয়ে এসেছেন, তারা জানিয়েছেন, এবার আম উৎপাদন কম হয়েছে। বরকল উপজেলা থেকে আম নিয়ে শহরের সমতাঘাটে আসা চাষি বিমল চাকমা জানিয়েছেন, এবার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। গরমের তীব্রতা একটু বেশি থাকায় বাগানে যে ফলন হওয়ার কথা, তা হয়নি। আমের উৎপাদন কম হয়েছে। যেহেতু, এখনো আম্রপালি ও রাংগুই জাতের আম বাজারে আসেনি, তাই প্রথমদিকে যারা এ আম আনছেন, তারা মোটামুটি ভালো দাম পাচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে দেশি জাতের আম বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
পাহাড়ে আমের ফলন কম, চাষিরা হতাশ
দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে
চাষি ও ব্যবসায়ীরা আরো জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশি জাতের পাকা আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। বছরের প্রথম পাকা আম দামে বেশি হলেও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা আম ক্যারেট বা ঝুড়িপ্রতি বিক্রি করে থাকে। কেজির হিসাব ধরলে দেশি পাকা আম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে, পাহাড়ের জনপ্রিয় আম আম্রপালি ও রাংগুই এখনো বাজারে আসেনি। কিছুদিনের মধ্যে এই দুই জাতের আম বাজার দখল করবে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, রাঙামাটিতে রাংগুই, আম্রপালি, বারি আম-৪, ব্যানানা ম্যাংগো, কিউজাই, চিয়াংমাই, নামডক মাই, রেড অস্টিন, রেড পালমার, হাড়িভাঙ্গা, বারোমাসি কাটিমন চাষ হচ্ছে। তবে, সবচেয়ে বেশি চাষ হয় রাংগুই ও আম্রপালি। অনেক চাষি শখের বাগানে নানা প্রজাতির বিদেশি আম চাষ করছেন। সবমিলিয়ে রাঙামাটিতে অন্তত ২০ প্রজাতির আম চাষ হয়।
কৃষি বিভাগ সূত্র আরো জানিয়েছে, এবার আম উৎপাদনের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে আমের কেজি গড়ে ৫০ টাকা করে হিসাব করলে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
চাষিরা ফলন কম হওয়ার শঙ্কা করলেও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সেরকম কোনো শঙ্কা নেই। আমের উৎপাদন ভালো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাঙামাটি কার্যালয়ে উপ-পরিচালক মো.
তিনি আরো বলেন, এখানকার আমের ঐতিহ্য এখনো বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, এখানকার চাষিরা ম্যানেজমেন্টে দুর্বল। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে এখানকার আম সারা দেশে পাওয়া যাবে এবং উৎপাদন আরো বাড়বে। চাষিরাও ভালো দাম পাবেন।
ঢাকা/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম জ ত র আম ব ই জ ত র আম উপজ ল য় গ ই আম
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া