আর কিছু দিনের অপেক্ষা। তার পরেই পাহাড়ের হাট-বাজারগুলো মাতাবে আম্রপালি ও রাংগুই আম। বর্তমানে রাঙামাটির বাজারে দেশি জাতের আম পাওয়া গেলেও আম্রপালি ও রাংগুই আমের সরবরাহ খুব বেশি নেই। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে রাঙামাটির বাজারে পাওয়া যাবে আম্রপালি ও রাংগুই আম। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে হাট-বাজারগুলো পুরোপুরি দখল করবে এই দুই জাতের আম। রাঙামাটিতে এই দুই জাতের আম বেশি উৎপাদন হয়। মোট আম উৎপাদনের প্রায় ৮০ ভাগই আম্রপালি ও রাংগুই। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাঙামাটির ১০ উপজেলায় ৩ হাজার ৬২৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি সদরে ৪৬৮ হেক্টর, নানিয়ারচর উপজেলায় ৪০২ হেক্টর, কাউখালী উপজেলায় ২৮৫ হেক্টর, বরকল উপজেলায় ২৮৭ হেক্টর, জুরাছড়ি উপজেলায় ৩২৯ হেক্টর, লংগদু উপজেলায় ৪৩৫ হেক্টর, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৩২৫ হেক্টর, কাপ্তাই উপজেলায় ৭৫৪ হেক্টর, রাজস্থলী উপজেলায় ১৭৮ হেক্টর এবং বিলাইছড়ি উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে।

এরইমধ্যে যারা বাজারে আম নিয়ে এসেছেন, তারা জানিয়েছেন, এবার আম উৎপাদন কম হয়েছে। বরকল উপজেলা থেকে আম নিয়ে শহরের সমতাঘাটে আসা চাষি বিমল চাকমা জানিয়েছেন, এবার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। গরমের তীব্রতা একটু বেশি থাকায় বাগানে যে ফলন হওয়ার কথা, তা হয়নি। আমের উৎপাদন কম হয়েছে। যেহেতু, এখনো আম্রপালি ও রাংগুই জাতের আম বাজারে আসেনি, তাই প্রথমদিকে যারা এ আম আনছেন, তারা মোটামুটি ভালো দাম পাচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে দেশি জাতের আম বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

পাহাড়ে আমের ফলন কম, চাষিরা হতাশ

দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে

চাষি ও ব্যবসায়ীরা আরো জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশি জাতের পাকা আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। বছরের প্রথম পাকা আম দামে বেশি হলেও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা আম ক্যারেট বা ঝুড়িপ্রতি বিক্রি করে থাকে। কেজির হিসাব ধরলে দেশি পাকা আম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে, পাহাড়ের জনপ্রিয় আম আম্রপালি ও রাংগুই এখনো বাজারে আসেনি। কিছুদিনের মধ্যে এই দুই জাতের আম বাজার দখল করবে।

কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, রাঙামাটিতে রাংগুই, আম্রপালি, বারি আম-৪, ব্যানানা ম্যাংগো, কিউজাই, চিয়াংমাই, নামডক মাই, রেড অস্টিন, রেড পালমার, হাড়িভাঙ্গা, বারোমাসি কাটিমন চাষ হচ্ছে। তবে, সবচেয়ে বেশি চাষ হয় রাংগুই ও আম্রপালি। অনেক চাষি শখের বাগানে নানা প্রজাতির বিদেশি আম চাষ করছেন। সবমিলিয়ে রাঙামাটিতে অন্তত ২০ প্রজাতির আম চাষ হয়। 

কৃষি বিভাগ সূত্র আরো জানিয়েছে, এবার আম উৎপাদনের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে আমের কেজি গড়ে ৫০ টাকা করে হিসাব করলে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

চাষিরা ফলন কম হওয়ার শঙ্কা করলেও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সেরকম কোনো শঙ্কা নেই। আমের উৎপাদন ভালো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাঙামাটি কার্যালয়ে উপ-পরিচালক মো.

মনিরুজ্জামান বলেছেন, হয়ত কারো কারো বাগানে গাছের খাবারের (সার) সমস্যা হতে পারে। তবে, আমি যতগুলো বাগানে গিয়েছি এবং খবর নিয়েছি, সবগুলো বাগানে আম ফলের উৎপাদন ভালো এবং গত বছরের কাছাকাছি। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। 

তিনি আরো বলেন, এখানকার আমের ঐতিহ্য এখনো বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, এখানকার চাষিরা ম্যানেজমেন্টে দুর্বল। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে এখানকার আম সারা দেশে পাওয়া যাবে এবং উৎপাদন আরো বাড়বে। চাষিরাও ভালো দাম পাবেন। 

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম জ ত র আম ব ই জ ত র আম উপজ ল য় গ ই আম

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ