বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘লোম বায়ো’র (Loam Bio) গবেষণা চালিয়ে তিনি ও তাঁর দল কারভুলেরিয়া ফাঙ্গি নামক (Curvularia Fungi) এক বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক ছত্রাক উদ্ভাবন করেছেন। এটি গবাদিপশুর হজমপ্রক্রিয়ায় মিথেন গ্যাসের উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে সক্ষম।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ মিথেন গ্যাস নিরোধে নতুন প্রযুক্তি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। আরওএএম, কৃষাণ ফাউন্ডেশন, মেধাসম্পদ সুরক্ষা মঞ্চ ও জ্যাকফ্রুট পোস্ট এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

আবেদ চৌধুরী হচ্ছেন জিনবিজ্ঞানী। দীর্ঘদিন প্রবাসজীবন কাটানোর পর দেশে ফিরে গবেষণা শুরু করেন তিনি। তিনি সেখানে দেশীয় ধান, শর্ষেসহ বিভিন্ন ফসল ও প্রাণিসম্পদের ওপর গবেষণায় সাফল্য পেয়েছেন।

আবেদ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাসের অন্যতম উপাদান মিথেনের বড় অংশ আসে গবাদিপশু অর্থাৎ গরু, ছাগল আর মহিষের পেট থেকে। এই জাবরকাটা প্রাণীগুলো হজমপ্রক্রিয়ার সময় ঢেকুর, নিশ্বাস ও বর্জ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মিথেন গ্যাস নিঃসরণ করে। বৈশ্বিকভাবে এ নিঃসরণের পরিমাণ প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টন। আর বাংলাদেশে এর পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইডের সমান।

বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী বলেন, কারভুলেরিয়া এক বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক ছত্রাক, যা ফিড অ্যাডিটিভ হিসেবে মেশালে কার্যত মিথেন নির্গমন বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে মিথেন গ্যাসের উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়া যায়। ছত্রাকটি কোনো ধরনের জেনেটিক মডিফিকেশন ছাড়াই কাজ করে। পাশাপাশি গবাদিপশুর স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে না।

এই বিজ্ঞানী বলেন, তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবাদিপশু থেকে এই মিথেন নির্গমন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ যদি এই মিথেন নির্গমন অর্ধেক কমাতে পারে, তাহলে সম্ভাব্য ‘সবুজ অর্থনীতিতে’ এর অর্থায়নের দ্বার খুলে যাবে, যার অর্থমূল্য প্রায় ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ এই অর্থ পেতে পারে।

আবেদ চৌধুরী বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ‘বায়োটেকনোলজি রিপোর্টস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফলে গড়ে উঠেছে নতুন কোম্পানি আরওএএম অ্যাগ্রিকালচারাল। এখন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবনের মডেল অনুযায়ী খামারিরাই ছোট ছোট ইউনিটে এই ছত্রাক উৎপাদন করতে পারবেন।

বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশ চাইলে মাত্র ৮০ লাখ ডলারে এই প্রতিষ্ঠানের বড় অংশ কিনে নিতে পারে, যা বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতিতে এক নতুন সংযোজন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিফাত হোসেইন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গবাদিপশু থেকে নির্গত মিথেন গ্যাস কমাতে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কথা জানালেন বিজ্ঞানী আবেদ

বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘লোম বায়ো’র (Loam Bio) গবেষণা চালিয়ে তিনি ও তাঁর দল কারভুলেরিয়া ফাঙ্গি নামক (Curvularia Fungi) এক বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক ছত্রাক উদ্ভাবন করেছেন। এটি গবাদিপশুর হজমপ্রক্রিয়ায় মিথেন গ্যাসের উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে সক্ষম।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ মিথেন গ্যাস নিরোধে নতুন প্রযুক্তি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। আরওএএম, কৃষাণ ফাউন্ডেশন, মেধাসম্পদ সুরক্ষা মঞ্চ ও জ্যাকফ্রুট পোস্ট এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

আবেদ চৌধুরী হচ্ছেন জিনবিজ্ঞানী। দীর্ঘদিন প্রবাসজীবন কাটানোর পর দেশে ফিরে গবেষণা শুরু করেন তিনি। তিনি সেখানে দেশীয় ধান, শর্ষেসহ বিভিন্ন ফসল ও প্রাণিসম্পদের ওপর গবেষণায় সাফল্য পেয়েছেন।

আবেদ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাসের অন্যতম উপাদান মিথেনের বড় অংশ আসে গবাদিপশু অর্থাৎ গরু, ছাগল আর মহিষের পেট থেকে। এই জাবরকাটা প্রাণীগুলো হজমপ্রক্রিয়ার সময় ঢেকুর, নিশ্বাস ও বর্জ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মিথেন গ্যাস নিঃসরণ করে। বৈশ্বিকভাবে এ নিঃসরণের পরিমাণ প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টন। আর বাংলাদেশে এর পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইডের সমান।

বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী বলেন, কারভুলেরিয়া এক বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক ছত্রাক, যা ফিড অ্যাডিটিভ হিসেবে মেশালে কার্যত মিথেন নির্গমন বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে মিথেন গ্যাসের উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়া যায়। ছত্রাকটি কোনো ধরনের জেনেটিক মডিফিকেশন ছাড়াই কাজ করে। পাশাপাশি গবাদিপশুর স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে না।

এই বিজ্ঞানী বলেন, তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবাদিপশু থেকে এই মিথেন নির্গমন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ যদি এই মিথেন নির্গমন অর্ধেক কমাতে পারে, তাহলে সম্ভাব্য ‘সবুজ অর্থনীতিতে’ এর অর্থায়নের দ্বার খুলে যাবে, যার অর্থমূল্য প্রায় ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ এই অর্থ পেতে পারে।

আবেদ চৌধুরী বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ‘বায়োটেকনোলজি রিপোর্টস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফলে গড়ে উঠেছে নতুন কোম্পানি আরওএএম অ্যাগ্রিকালচারাল। এখন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবনের মডেল অনুযায়ী খামারিরাই ছোট ছোট ইউনিটে এই ছত্রাক উৎপাদন করতে পারবেন।

বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশ চাইলে মাত্র ৮০ লাখ ডলারে এই প্রতিষ্ঠানের বড় অংশ কিনে নিতে পারে, যা বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতিতে এক নতুন সংযোজন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিফাত হোসেইন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ